Advertisement
২৮ মার্চ ২০২৩

জরিমানা নয়, পথে হেলমেট কেনাচ্ছে পুলিশ

শুক্রবার দুপুর। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে মোটরবাইক ছুটিয়ে আসছিলেন এক যুবক। হেলমেট ছিল না। শালবনির কাছে তাঁর পথ আটকালেন টহলরত পুলিশকর্মী। যুবকের মুখ কাঁচুমাচু, এই বুঝি পুলিশ ‘কেস’ দেবে। গুনতে হবে জরিমানার টাকা।

সক্রিয়: এক বাইক আরোহীকে হেলমেট পরাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

সক্রিয়: এক বাইক আরোহীকে হেলমেট পরাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৪
Share: Save:

শুক্রবার দুপুর। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কে মোটরবাইক ছুটিয়ে আসছিলেন এক যুবক। হেলমেট ছিল না। শালবনির কাছে তাঁর পথ আটকালেন টহলরত পুলিশকর্মী। যুবকের মুখ কাঁচুমাচু, এই বুঝি পুলিশ ‘কেস’ দেবে। গুনতে হবে জরিমানার টাকা। প্যান্টের পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করতে যেতেই আটকালেন পুলিশকর্মী। হাসিমুখে বললেন, “জরিমানা লাগবে না। শুধু একটা হেলমেট কিনে নাও।’’ কাছেই হেলমেটের দোকান ছিল। সেখান থেকে হেলমেট কিনে এ যাত্রা রেহাই পেয়ে গেলেন ওই যুবক।

Advertisement

জরিমানা নয়, কাউন্সেলিং! মাথা বাঁচাতে এই পন্থাই নিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার থেকে জেলা জুড়ে রাস্তার মোড়ে মোড়ে হেলমেটহীন বাইক চালকদের আটকে পুলিশকর্মীরা বোঝাচ্ছেন, কেন হেলমেট ছাড়া মোটরবাইক চালানো উচিত নয়। সঙ্গে হেলমেট কেনার আর্জি জানাচ্ছেন। কাছেপিঠের দোকান থেকে হেলমেট কিনে আনলেই মুক্তি। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “হেলমেটহীন বাইক আরোহীর বিরুদ্ধে মামলা না করে শুধু কাউন্সেলিং করছি। এ ভাবে বোঝানোয় একদিনেই দু’শোর বেশি যুবককে হেলমেট পরানো গিয়েছে।” পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষেরও বক্তব্য, “ভাল ভাবে বাঁচতে গেলে হেলমেট পরে বাইক চালাতে হবে। জীবনের মূল্য মানুষকেই বুঝতে হবে।”

মেদিনীপুরের বটতলাচকের কাছে হেলমেটের দোকান রয়েছে তরুণ প্রামাণিকের। তিনি জানালেন, পুলিশ বাইক আটকানোর পরে বেশ কয়েকজন তাঁর দোকানে এসে হেলমেট কিনে নিয়ে গিয়েছেন। তরুণবাবু বলছিলেন, “দুর্ঘটনার কথা শুনিয়ে হেলমেট পরার অভ্যাস তৈরি করতে চাইছে পুলিশ। নিশ্চিত ভাবেই এতে দারুণ সাড়া মিলবে।”

মুখ্যমন্ত্রী ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’-এর স্লোগান তোলার পরে এই জেলাতেও কম কর্মসূচি হয়নি। পুলিশের দাবি, প্রচার, কড়া নজরদারি থেকে জরিমানা আদায়, সব করেও বাইক চালকদের হুঁশ ফেরেনি। তাই এখন কাউন্সেলিং-কে হাতিয়ার করেছে পুলিশ। হেলমেটহীন বাইক চালকদের বেশ কয়েকটি পথ দুর্ঘটনার কথা শোনাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা। খুঁটিয়ে বোঝানো হচ্ছে, হেলমেট মাথায় ছিল বলে কারা বেঁচে গিয়েছেন। যাঁরা হেলমেট পরেননি, তাঁরা কী ভাবে মারা গিয়েছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “আসলে হেলমেট শুধু একটা মাথাকে নয়, আস্ত একটা পরিবারকে সুরক্ষিত রাখে, সেটাই বোঝানো হচ্ছে।”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.