জঙ্গলমহলে বিরোধীদের প্রচার মিছিল আটকানোর অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, বৈধ অনুমতি থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার সকালে লালগড় ব্লকের ধরমপুর এলাকায় সিপিএমের প্রচার মিছিল আটকে দেয় পুলিশ।
দলীয় সূত্রে খবর, ঝাড়গ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত ধরমপুরে বাম সমর্থিত ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর প্রার্থী চুনিবালা হাঁসদার সমর্থনে মিছিল করার জন্য গত সোমবার সিপিএমের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করা হয়। সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মিছিল করার অনুমতিও মিলেছিল। কিন্তু এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ সিপিএমের ধরমপুর লোকাল কমিটির কার্যালয়ের সামনে মিছিল শুরুর তোড়জোড় হতেই লালগড় থানার সাব ইন্সপেক্টর শচীন্দ্রনাথ মাইতি-র নেতৃত্বে পুলিশ এসে মিছিল আটকে দেয় বলে অভিযোগ।
শচীন্দ্রবাবু সিপিএমের নেতা-কর্মীদের জানিয়ে দেন, পুলিশের কাছে মিছিলের অনুমতি সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই। তাই মিছিল করা যাবে না। শচীন্দ্রনাথবাবুর এমন বক্তব্যে শুরু হয় উত্তেজনা। ইতিমধ্যে সিপিএমের স্থানীয় নেতারা যোগাযোগ করেন লালগড় থানার আইসি-র সঙ্গে। কিন্তু তিনিও সিপিএম নেতাদের জানিয়ে দেন, মিছিল হওয়ার কোনও আগাম আগাম তথ্য লালগড় থানায় নেই। সিপিএমের পক্ষ থেকে কমিশনে যোগাযোগ করা হয়। ঝাড়গ্রাম বিধানসভার রির্টানিং অফিসারকেও ফোনে অভিযোগ করা হয়। এরপর ঝাড়গ্রাম থেকে অনলাইনে অনুমতিপত্রের কপি ডাউনলোড করে নিয়ে আসেন সিপিএম কর্মীরা। ততক্ষণে বেলা ১২ টা গড়িয়ে গিয়েছে। অনুমতিপত্রের কপি দেখার পরে মিছিলের ছাড়পত্র দেয় পুলিশ। এরপর সিপিএমের ধরমপুর লোকাল কমিটির কার্যালয় থেকে শুরু হওয়া মিছিল উত্তর গোহমি, বড়কলা, পলাশি, ইছাপাড়া, ভুলক্যা, আঁধারজোড়া হয়ে ডুমুরকোটা ও হরিনা ঘুরে ধরমপুরে ফিরে আসে।
সিপিএমের ধরমপুর লোকাল কমিটির সম্পাদক বিনয় পাণ্ডে বলেন, “আমাদের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও লালগড় থানার পুলিশ ইচ্ছাকৃত ভাবে মিছিল আটকে দিয়েছিল।” সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ডহরেশ্বর সেনের বক্তব্য, “আমাদের মিছিলের জমায়েত দেখে তৃণমূলের নেতাদের অস্বস্তি শুরু হয়েছে। এক শ্রেণির পুলিশ কর্মী তৃণমূলের তাঁবেদারি করে আমাদের বৈধ মিছিল আটকাচ্ছেন।”
ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো মানছেন, অনলাইনে আবেদন মঞ্জুর হওয়ার পরে কমিশনের তরফে পুলিশ-প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট মহলে তা জানিয়ে দেওয়া হয়। তাহলে কেন তিনদিন আগে মিছিলের আবেদন মঞ্জুর হওয়া সত্ত্বেও লালগড় থানায় সেই তথ্য পৌঁছল না? লালগড় থানার আইসি অরুণ খান কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “অভিযোগ পাওয়া মাত্রই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া হয়। কোথাও একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছিল।”
এ দিন গোপীবল্লভপুর বিধানসভা এলাকার সর্ডিহা ও চুবকা অঞ্চলেও বিজেপি-র প্রচার-কর্মসূচি আটকানোর চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ করেন বিজেপি প্রার্থী সুশীলকুমার ঘোষ। তিনি বলেন, অনুমতি থাকা সত্ত্বেও প্রচার কর্মসূচি করতে নিষেধ করে পুলিশ। পরে অবশ্য মিছিল ও সভা করেন দিলীপবাবু। এ দিন জঙ্গলমহল জুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে শাসক দলের মিছিল ও প্রচারগাড়ি। বিনপুর বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী খগেন্দ্রনাথ হেমব্রমের সমর্থনে বেলপাহাড়িতে হদরা থেকে বেলপাহাড়ি দীর্ঘ মিছিল হয়। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্লক যুব তৃণমূল নেত্রী অনুশ্রী কর। নয়াগ্রাম বিধানসভার তৃণমূল প্রার্থী দুলাল মুর্মুর সমর্থনেও এ দিন চাঁদাবিলা এলাকায় মিছিল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy