এই বাড়ি নিয়েই সমস্যা। নিজস্ব চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিধাননগরের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এক বাসিন্দাকে তাঁর নতুন কেনা বাড়িতে ঢুকতে না-দেওয়ার। প্রায় সেই একই অভিযোগে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন তমলুক শহরের এক বাসিন্দা। আর এ বারও মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সচেষ্ট হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জেলা পুলিশ সুপারের কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে আইনানুগ পদক্ষেপ করতে।
তমলুক ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পদুমাবসান এলাকার বাসিন্দা আসেকা বেগম অভিযোগ করেছেন, শহর তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু রায় ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বামী সৈয়দ আবেদ আলি শাহের বিরুদ্ধে। আসেকা বেগম বলেন, ‘‘বছর দু’য়েক আগে পাশের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মানস মাইতির কাছ থেকে একটি বাড়ি ও সংলগ্ন জমি কিনেছি। কিন্তু সেই বা়ড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বাধা দিচ্ছেন দিব্যেন্দু রায় ও সৈয়দ আবেদ আলি শাহ। ওই বাড়িতে তৃণমূল একটি ক্লাব খুলে রেখেছে।’’
আসেকা বেগমের অভিযোগ পাওয়ার পরেই জেলা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ আসে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তারপরেই পর ওই বাড়ির সামনে থেকে ক্লাবের বোর্ড খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বাড়ির দখল পানননি আসেকা বেগমের পরিবার। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ওই অভিযোগের বিষয়ে দু’পক্ষকে ডেকে খোঁজ নেওয়া হয়েছে। বাড়ি ও সংলগ্ন জমি নিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা বিচারধীন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’
এ দিকে ওই বাড়ির মালিকানা দাবি করেছেন পাশের বা়ড়ির ঝন্টু মাইতি ও তাঁর পরিবার। তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁরা ওই বাড়িটি ভোগ করছেন। আসেকা বেগম দলিল জাল করেছেন। এ বিষয়ে তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন বলে দাবি। তবে সে বিষয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি ঝন্টুবাবু। জানা গিয়েছে, বহু বছর আগে ঝন্টুবাবুর বাবা ওই বাড়িটি বিক্রি করেছিলেন মানস মাইতির বাবা অনিল মাইতিকে। প্রায় দু’বছর আগে মানসবাবু বাড়ি ও সংলগ্ন জমি বিক্রি করেন আসেকা বেগমকে। এর পরেই সমস্যার সূত্রপাত। মানসবাবু অবশ্য আসেকা বেগমের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তিনি স্বীকার করেছেন বাড়ি বিক্রির কথা। শুক্রবার দু’পক্ষকেই থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তদন্তের স্বার্থেই কাগজপত্র দেখে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় জড়িয়েছে রাজনৈতিক কাজিয়াও। তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন আসেকা বিবি। উল্টে এই গোটা ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। দিব্যেন্দু রায় বলেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওই বাড়ির দখলদারির বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।’’ দিব্যেন্দুবাবুর পাল্টা দাবি, গত বছর পুরভোটের সময় আসেকা বেগম তাঁর কাছে এসেছিলেন। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য দলের টিকিট চেয়েছিলেন। কিন্তু আসেকা আমাদের দলের প্রার্থী হতে পারেননি। তাই বিক্ষুব্ধ হিসাবে কংগ্রেসের সমর্থনে নির্দল প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
আর প্রাক্তন কাউন্সিলর সৈয়দ আবেদ আলি শাহ বলেন, ‘‘বাড়ি কেনার পর তার দখল নেওয়ার বিষয়ে আমি কোন হস্তক্ষেপ করিনি। আসেকা বিবি গতবছর পুরসভা নির্বাচনে আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে হেরে গিয়েছিলেন। তাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত এই সব অভিযোগ করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy