দুই শ্রমিককে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার খড়্গপুরে কর্মবিরতি পালন করলেন ঠিকা শ্রমিকেরা।
কাজে পুনর্বহাল করতে হবে দুই শ্রমিককে— এই দাবিতে এদিন খড়্গপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। রেলের আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপিও দেন বিক্ষোভকারীরা। ভবিষ্যতে আরও বড় আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে রেলের খড়্গপুর বিভাগের এডিআরএম মনোরঞ্জন প্রধানকে ফোন করলে তা বেজে গিয়েছে। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।
দিল্লির একটি ঠিকদার সংস্থার অধীনে খড়্গপুরে কয়েক বছর ধরে কাজ করছেন ৫৬ জন শ্রমিক। মূলত স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম, লাইন, শৌচাগার, বুকিং কাউন্টার-সহ স্টেশন চত্বরের বিভিন্ন অংশ সাফাইয়ের কাজ করেন তাঁরা। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ওই শ্রমিকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। শ্রমিকদের এ-ও অভিযোগ, বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও সরকারি নির্দেশিকা মেনে তাঁদের ৩৫০টাকা মজুরি দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, মজুরির ক্ষেত্রেও বৈষম্য করা হচ্ছে। কিছু শ্রমিক ২০০ টাকা মজুরি পাচ্ছেন। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ শ্রমিককেই দেওয়া হচ্ছে ১৮০ টাকা। সেইসঙ্গে মিলছে না প্রভিডেন্ট ফান্ড সহ-অন্য সুযোগ সুবিধা। এ সব নিয়ে ঠিকা শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল। তার মধ্যে এ দিন সকালে বাবু দাস এবং শিবা লাল নামে দুই ঠিকা শ্রমিক কাজে যোগ দিতে এসে জানতে পারেন, তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ঠিকা শ্রমিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি বাবু এবং শিবা মজুরি বা়ড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন। তাই তাঁদের বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক শ্রমিকের কথায়, “ঠিকাদার সংস্থা আমাদের উপর জুলুম চালাচ্ছে। রেলের আধিকারিকেরা তাতে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। দুই শ্রমিককে এ ভাবে ছাঁটাই করে দেওয়ায় আমরা আতঙ্কিত।” ছাঁটাইয়ের কথা জানার পরই কর্মবিরতিতে সামিল হন ঠিকা শ্রমিকেরা। স্টেশনের বাইরে বোগদায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বেলা ১১টা থেকে ডিআরএম অফিস-সহ একাধিক জায়গায় দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ। রেল প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের কাছে স্মারকলিপি দেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছে ঠিকা শ্রমিকদের সংগঠন। ওই সংগঠনের সভাপতি অনিল দাস বলেন, “রেল আধিকারিকদের একাংশ ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে যোগসাজশ করে শ্রমিকদের বঞ্চিত করছে। ৭৬ জন শ্রমিকের বদলে ৫৬ জনকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে। ২০০ টাকারও কম মজুরি দিচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করায় শ্রমিকদের মুখ বন্ধ করতে দুই শ্রমিককে ছাঁটাই করেছে। তাই এ বার আর চুপ করে থাকব না। যতদূর যেতে হয় যাব।”
এ দিন ঠিকা শ্রমিকদের কর্মবিরতির জেরে স্টেশন চত্বরে সাফাই অভিযানে ঘাটতি দেখা গিয়েছে। তবে নিজস্ব সাফাইকর্মী দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছেন রেল কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy