রেশনে বরাদ্দের থেকে কম সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে ডিলারকে তালাবন্দি করে বিক্ষোভ দেখাল গ্রামবাসীরা। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে খড়্গপুর-২ ব্লকের শিরষি গ্রামে। অভিযোগ, গ্রামের রেশন ডিলার সুজিত মণ্ডল দীর্ঘদিন ধরে কারচুপি করছেন। প্রাপ্য চাল-গমের থেকে পরিমাণে কম জিনিস দিচ্ছেন গ্রাহকদের। বারবার খাদ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি।
এ দিন দোকান খুলে ফের ওই ডিলার কম পরিমাণ রেশন সামগ্রী দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। তারপরই শুরু হয় গ্রাহক-বিক্ষোভ।
গত বছর ১৮জানুয়ারি রেশনে কম কেরোসিন দেওয়ায় গ্রাহকেরা একইভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। পরে সমস্যা মিটেছিল। তারপরেও গত কয়েক মাস ধরে ফের সুজিত রেশন সামগ্রী কম দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। গ্রাহকদের দাবি, মাথাপিছু ৫ কেজি চালের বদলে ৪ কেজি করে দেওয়া হচ্ছিল। আটার প্যাকেটের দাম বেশি নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এ দিন এক অন্ত্যোদয় পরিবারে পক্ষ থেকে রেশন নিতে এলে গোলমাল বাধে। ওই পরিবারের ৭ জনের বিভিন্ন ধরনের কার্ড থাকলেও সেইমতো সামগ্রী না দেওয়ায় ক্ষোভ দেখা দেয়।
পরে ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা তালাবন্দি করেন রেশন ডিলারকে। ডিলারের মেয়ে ঘটনাস্থলে এলে বচসা বাধে। গ্রামবাসী বাবলু মাহাতো, গোরাচাঁদ সেন বলেন, “এই রেশন ডিলার বরাবর কারচুপি করেন। আমরা কার্ড অনুযায়ী প্রাপ্য সামগ্রী পাইনা। ডিজিট্যাল কার্ড হওয়ার পরেও একই জিনিস হচ্ছে।”
এ দিন গোলমালের পরে খবর পৌঁছয় খাদ্য দফতরে। আগামী বৃহস্পতিবার এ নিয়ে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয়। অভিযুক্ত রেশন ডিলার সুজিতের অবশ্য দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। কখনও আটার প্যাকেট ফুটো থাকলে আমি সেগুলি বদলে আটা দিই। তার জন্য হয়তো এক টাকা বেশি চাই। তবে কাউকে কম সামগ্রী দিই না। আসলে আমার দোকান দখল করার চক্রান্ত হচ্ছে।’’
নতুন খাদ্য সুরক্ষা আইনে অন্ত্যোদয়, স্পেশ্যাল প্রাওরিটি হাউসহোল্ড এবং প্রাওরিটি হাউসহোল্ড এই তিনটি বিভাগে সামগ্রী পাবেন গ্রাহকেরা। অন্ত্যোদয় বিভাগে একটি পরিবার মাসে ৩৫ কেজি চাল বা গম পাবে। আর মাথাপিছু ৫০০ গ্রাম চিনি। স্পেশ্যাল প্রোওরিটি হাউসহোল্ডে মাথাপিছু ৫ কেজি চাল বা গম এবং ৫০০ গ্রাম চিনি আর প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডে শুধুমাত্র মাথাপিছু ৫ কেজি চাল পাওয়ার কথা। চাল ৩ টাকা, গম ২ টাকা ও চিনি সাড়ে ১৩ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাবে।
শিরষি গ্রামে একই পরিবারে অন্ত্যোদয় ও প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডের কার্ড বিলি হয়েছে। ফলে কোন নিয়মে সামগ্রী বিলি হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। খাদ্য দফতরের খড়্গপুরের মহকুমা নিয়ামক মিঠুন দাস বলেন, “কিছু পরিবারের দু’ধরনের কার্ড থাকায় একটা সমস্যা হয়েছিল। ওই গ্রামে বৈঠক ডাকা হয়েছে। দরকারে প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডের কার্ড ফিরিয়ে নেওয়া হবে। আর ওই ডিলারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy