Advertisement
০৩ মে ২০২৪

টোটোতে রাশ নেই, যানজটে নিত্য নাকাল

মাসখানেক আগের ঘটনা। টোটো চেপে বাড়ি থেকে পুরসভার অফিসে যাওয়ার পথে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছিলেন খোদ শহরের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন।

টোটো-জট। নিজস্ব চিত্র।

টোটো-জট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০০:৫৫
Share: Save:

মাসখানেক আগের ঘটনা। টোটো চেপে বাড়ি থেকে পুরসভার অফিসে যাওয়ার পথে পড়ে গিয়ে জখম হয়েছিলেন খোদ শহরের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন। দুর্ঘটনার পর পুরপ্রধানকে উদ্ধার না করেই চম্পট দেয় ওই টোটো চালক। রেজিস্ট্রশন নম্বরহীন ওই টোটো ও তাঁর চালক আজও অধরা গিয়েছে। যাত্রী পরিবহণে জেলা সদর তমলুক শহরে অন্যতম প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে টোটো। তবে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরসভা ও পুলিশ-প্রশাসনের অবহেলায় শহরের প্রধান রাস্তাগুলিতে প্রায়ই যানজট হয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

হাসপাতাল মোড় থেকে বড়বাজার হয়ে স্টিমারঘাট পর্যন্ত রাস্তায় এমনিতেই ফুটপাত বলে কিছুই নেই। তার উপর রাস্তার দু’ধারে অনেক দোকানদার জিনিস, সাইকেল, মোটরবাইক রেখে দেওয়ায় রাস্তা সরু হয়ে গিয়েছে। এছাড়া রাস্তার একাংশ দখল করে প্রচুর সংখ্যক টোটো দাঁড়িয়ে থাকায় হাঁটাচলাও মুশকিল। হাসপাতাল মোড় থেকে বড়বাজার হয়ে স্টিমারঘাট, মানিকতলা-জেলখানা মোড় হয়ে পুরসভা অফিস পর্যন্ত রাস্তায় টোটো-সহ অন্যান্য গাড়ির ভিড়ে প্রতিদিন যানজট হয়। নাকাল হন স্থানীয় বাসিন্দারা।

পুরসভা ও টোটো চালক ইউনিয়ন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে বছর দু’য়েক আগে টোটো যাতায়াত শুরু হয়। প্রথমে হাতে গোনা কয়েকটি টোটো গাড়ি চলাচল করলেও তা নিয়ে শহরের রিকশা চালকরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। জমা দিয়েছিলেন স্মারকলিপিও। কিন্তু মাত্র দু’বছরের মধ্যে শহরের অধিকাংশ রাস্তায় রিকশার বদলি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই টোটো। সর্বত্র রয়েছে টোটোর স্ট্যান্ড। এমনকী অনেক রিকশাচলক টোটো কিনে চালাচ্ছেন। সব মিলিয়ে শহরে এখন প্রায় ৬০০-র বেশি টোটো রয়েছে। যদিও এইসব টোটোগাড়ির চালানোর লাইসেন্স, চলাচলের কোন নির্দিষ্ট রুট বা ভাড়ার তালিকা নেই।

শহরের পার্বতীপুর এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ্ত খাটুয়ার অভিযোগ, ‘‘সকালে মোটরবাইক চালিয়ে অফিসে যাওয়ার পথে টোটোর জন্য যানজটে আটকে পড়তে হয়। টোটোর পিছন পিছন যেতে হয় হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত। এটাই নিত্যদিনের ছবি।’’

টোটোর আধিক্য নিয়ে ক্ষুদ্ধ খোদ টোটো চালকরাও। শহরের লালদিঘি এলাকার বাসিন্দা আবুদ কাদের হাসপাতাল মোড়ে টোটো নিয়ে অপেক্ষা করেছিলেন যাত্রীর জন্য। ৬৫ বছরের আব্দুল বলেন, ‘‘৩৭ বছর ধরে রিকশা চালিয়েছি। টোটো চালু হওয়ায় রিকশায় কেউ উঠতেই চাইতেন না। এক বছর আগে টোটো কিনেছি। প্রথম দিকে প্রতিদিন ৫০০ টাকা করে আয় হলেও এখন তা কমে ২৫০-৩০০ টাকায় নেমেছে।’’ একই অভিযোগ শহরের টোটো চালক স্বপন মান্নার। স্বপনবাবুর দাবি, ‘‘শহরের বাইরে থেকে আসা টোটো চলাচল বন্ধ করতে পুরসভাকে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে সমস্যা আরও বাড়তেই থাকবে।’’

টোটো চলাচলে নিয়ন্ত্রণ না থাকার কথা স্বীকার করেছেন তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন। পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘শহরের বিভিন্ন রাস্তায় টোটো চলাচলের নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে ইতিমধ্যে আমাদের আলোচনা হয়েছে। শহরে টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE