Advertisement
E-Paper

টাকা নেই, বেহাল রাস্তা সংস্কার বন্ধ

সামান্য বৃষ্টিতে বেহাল পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক রাস্তা। তা নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই। কিন্তু বিক্ষোভ, পথ অবরোধেও লাভ হয় না। প্রশাসনের আশ্বাসে উঠে যায় অবরোধ, তারপর যেই কে সেই।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৬ ০০:০০
নোনাকুড়ি থেকে হুড়িনান যাওয়ার বেহাল রাস্তা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

নোনাকুড়ি থেকে হুড়িনান যাওয়ার বেহাল রাস্তা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

সামান্য বৃষ্টিতে বেহাল পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক রাস্তা। তা নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই। কিন্তু বিক্ষোভ, পথ অবরোধেও লাভ হয় না। প্রশাসনের আশ্বাসে উঠে যায় অবরোধ, তারপর যেই কে সেই।

তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে কাঁকটিয়া বাজারের দুর্গামণ্ডপ প্রাঙ্গণ থেকে গোড়াইখালি হয়ে হুড়িনান গ্রামে রূপনারায়ণের বাঁধ পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার মোরাম রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি। স্থানীয় খারুই-১ ও ২ এবং কাখরদা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দারা যাতায়াত করেন ওই রাস্তা দিয়ে। সাইকেল, ভ্যানরিকশা তো বটেই সম্প্রতি টোটোও চলত। কিন্তু অসমান রাস্তায় প্রায়ই ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটে। রাস্তা মেরামতির দাবি তুলে ওই টোটো চালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা সম্প্রতি কাঁকটিয়া বাজারে হলদিয়া–মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন। নিয়ম মাফিক আশ্বাস মিলেছিল। উঠে গিয়েছিল অবরোধ। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু হয়নি।

একই অবস্থা ভগবানপুর-১ ব্লকের গোপীনাথপুর থেকে কোটনাউড়ি পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার মোরাম রাস্তার। স্থানীয় বেউদিয়া, গুড়গ্রাম, কাঁকরা পঞ্চায়েতের ২৫ টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দার ভরসা এই রাস্তা। বছর খানেক ধরে ওই রাস্তায় প্রায় দেড়শো টোটো চলাচল করছিল। কিন্তু বেহাল রাস্তায় এখন আর টোটো চালানো সম্ভব হয় না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এমনকী সাইকেল নিয়ে যাতায়াত করাও সঙ্গীন। গত মঙ্গলবার ওই মোরাম রাস্তা পাকা করার দাবি জানিয়ে কুরালবাড় গ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘক্ষণ রাস্তা অবরোধ করেন। তারপর প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সে বিক্ষোভ উঠে যায়। স্থানীয় বরুরভেড়ি গ্রামের বাসিন্দা হাকিম খানের বলেন, ‘‘১৯৮৬ সালে মোরাম করেছিল জেলা পরিষদ। প্রতিবছর বর্ষায় বেহাল হয় রাস্তা। তারপর ইঁটের টুকরো, মোরাম ফেলে মেরামত করা হয়। কিন্তু ৩০ বছরেও পাকা করার কথা মনে হয়নি প্রশাসনের। বারবার দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি।’’

শুধু তমলুক বা ভগবানপুর নয় জেলার বিভিন্ন এলাকার বেশিরভাগ মোরামরাস্তাই মেরামতির অভাবে বেহাল। নন্দকুমার ব্লকের নারাদাড়ি থেকে নারিকেলদা, ভবানীপুর থেকে রাজনগর, ব্যবত্তাহাট থেকে দনিপুর, মহিষাদল ব্লকের গোপালপুর বাঁধ থেকে মানিকমোড় পর্যন্ত মোরাম রাস্তা, সতীশ সামন্ত গ্রামপঞ্চায়েত অফিস থেকে ঘাসিপুর পর্যন্ত রাস্তা বেহাল বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। একই অবস্থা কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা বাজার থেকে পীতপুর পর্যন্ত চার কিলোমিটার মোরাম রাস্তা, যদুপুর থেকে রামনগর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা, খন্যাডিডি থেকে জশাড় পর্যন্ত সাত
কিলোমিটার রাস্তার।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের কাছেও ভুরি ভুরি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে স্বীকার করছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও মানছেন বর্ষার সময় দুর্ভোগ বেড়েছে বলে। জেলা পরিষদ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ রাস্তাগুলির মধ্যে অনেকগুলিই প্রধানমন্ত্রী গ্রামসড়ক যোজনায় পাকা করা হয়েছে। যেগুলি এখনও মোরামের রাস্তা রয়েছে, সেগুলি জেলা পরিষদের অর্থে মেরামত করার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এ বছর অর্থের অভাবেই রাস্তা মেরামতিতে সমস্যা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা। তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন ব্লকে অনেকগুলি বড় মোরাম রাস্তা খারাপ হয়ে গিয়েছে বলে পঞ্চায়েত সমিতিগুলি জানিয়েছে। মেরামতির জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ১০ কোটি টাকা চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’

Road Construction Money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy