চলছে অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
একদল কচিকাঁচা মূক-বধির শিশু-কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে আনন্দে মাতলেন ‘খারাপ ছেলে’-রা।
শনিবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের সেবায়তন এলাকার পাঁচকড়ি স্বরবোধন নিকেতনের শ’খানেক আবাসিকের জন্য স্কুল ব্যাগ, রকমারি খাতা, পেন, রং পেন্সিল নিয়ে হাজির হয়েছিল ঝাড়গ্রাম শহরের ‘ব্যাড বয়’-রা।
কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানে চলা মূক ও বধির শিশু-কিশোর-কিশোরীদের এই আবাসিক স্কুলে নিখরচায় শিশু শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হস্টেলে রেখে পড়ানো হয়। রণিত, মধুমিতা, রাখি, সন্তু, টিনার মতো ১০৭ জন পড়ুয়ার কাছে শনিবার হাফ ছুটির পরে দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকল। এ দিন ঝাড়গ্রাম শহরের জনা পনেরো যুবকের উদ্যোগে পড়ুয়াদের প্রত্যেককে স্কুল ব্যাগ-সহ লেখা পড়ার নানা সরঞ্জাম উপহার দেওয়া হল। ওই যুবকরা নিজ উদ্যেগে নানা পদ রান্না করে পাত পেড়ে পড়ুয়াদের দুপুরে ভূরিভোজ খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করেন।
ঝাড়গ্রাম শহরের একটি আড্ডাস্থলের জনা পনেরো এই যুবকদের কেউ চাকরি করেন, কেউ বেকার, কেউ ছোটখাটো ব্যবসা করেন। কিশোর বেলায় ক্রিকেট খেলার সুবাদে এই ‘ব্যাড বয়’দের বন্ধুত্ব জমে উঠেছিল।
গত ডিসেম্বর মাসের এক রাতে কয়েকজন ফুটপাথবাসীকে শীতে কাঁপতে দেখে এগিয়ে আসেন এই যুবকেরাই। নিজেরা টাকা দিয়ে তহবিল গড়ে জনা ষাটেক ফুটপাথবাসীকে কম্বল দেন। তারপর নিজেরাই গড়ে তুলেছেন ‘ব্যাড বয়েজ ফাউন্ডেশন’।
ব্যবসায়ী দেবাংশু পাহাড়ি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিজয় সিংহ ও প্রতীক মৈত্র, যুব দফতরের কর্মী দেবাশিস ভুই, দলিল লেখক সুদীপ মাহাতো, গাড়ি ব্যবসায়ী বিপ্লব হাঁসদা, কর্মপ্রার্থী গৌরাঙ্গ পটেল, শান্তনু মুখোপাধ্যায়দের মতো দলের জনা পনেরো সদস্য এখন নিজেদের আমোদ-প্রমোদের খরচ বাঁচিয়ে সেই টাকা ব্যয় করছেন সমাজের দুঃস্থ অবহেলিতদের সেবায়। ‘ব্যাড বয়’-দের এমন কাজ দেখে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন অনেকে।
শনিবার সেবায়তনের ওই স্কুল প্রাঙ্গণে ঘরোয়া পরিবেশে নির্বাক পড়ুয়াদের সঙ্গে হাতের মুদ্রার সাংকেতিক আড্ডায় মেতে উঠেছিলেন সকলে। স্কুলের সম্পাদক হেমন্ত সিংহ বলেন, “দেশে এরকম ব্যাড বয় যেন আরও হয়। তাহলে দেশটা সত্যিই ভাল হয়ে উঠবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy