এগরার গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে চলছে পুলিশের নাকা তল্লাশি। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
‘বেআইনি বাজি তৈরির পর তা পাঠানো হত ওড়িশায়। ঝাড়খন্ড বর্ডার থেকে এই রাজ্যে অস্ত্র ঢোকে। এই বর্ডার এলাকা অবিলম্বে সিল করতে হবে’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এমন মন্তব্য ও নির্দেশের পরে তৎপরতা শুরু হয়েছে পুলিশের। এগরা- ওড়িশা সীমানায় চার জায়গায় চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশের নাকা চেকিং শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে বাড়তি সতর্কতায় সীমানা এলাকায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
এগরার খাদিকুল ওড়িশা সীমানা লাগোয়া হওয়ার গোয়েন্দা ব্যর্থতার পাশাপাশি পুলিশের যে গাফিলতি ছিল তা স্বীকার করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এই বেআইনি বাজি কারখানার বাজি ওড়িশায় পাঠানো হত। যেহেতু এটা ওড়িশা সীমানার আইসোলেটেড এলাকা। বাংলার বর্ডারগুলো লক্ষ্য রাখুন সিল করুন।’’
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীর এমন নির্দেশের পর পুলিশের নাকা তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে। রবিবার সকাল থেকে এগরার আলংগিরি রাজ্য সড়ক ও গোপীনাথপুর থেকে ওড়িশা সীমানা পর্যন্ত তিন জায়গায় পুলিশের নাকা তল্লাশি শুরু হয়েছে। যেহেতু দুই রাজ্যের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্য ও যোগাযোগের মাধ্যম এই রাস্তাগুলি। ফলে একেবারে সীমানা সিল করে যোগাযোগ বন্ধের পথে হাঁটেনি পুলিশ। সবচেয়ে বেশি নজরদারি রাখা হয়েছে সাহাড়া ও উপালাহাটের সীমানায়।
সাহাড়া বাজার থেকে মাত্র পাঁচশো মিটার মাটির রাস্তা পেরোলেই ওড়িশা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, আগে এই সীমানায় নজরদারির বালাই ছিল না। যে কেউ অনায়াসে দুই রাজ্যের মধ্যে যাতায়াত করতে পারতো। নজরদারি ফাঁক গলে ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে মাদক (গাঁজা) সরবরাহ থেকে বেআইনি বাজি ওড়িশায় পাচার হত। সাহাড়া ও গোপীনাথপুর এলাকার মানুষের কাছে রুটি রুজি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও চিকিৎসার প্রয়োজনে ওড়িশাই কাছের। রবিবার থেকে সেই গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ড ও সাহাড়া উপলাহাট এলাকায় চব্বিশ ঘণ্টা পুলিশের নাকা চেকিং শুরু হয়েছে।
এগরা মোহনপুর রাজ্য সড়কে বাথুয়াড়ি, আলংগিরি, কসবাগোলা এলাকায় নাকা পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। সন্দেহ হলেই গাড়ি তল্লাশি সহ গাড়ির প্রয়োজনীয় নথি খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সাহাড়া বাজার তিন মাথার মোড়ে পুলিশের উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে জুলাইয়ে সম্ভাব্য রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। ভোটের সময় দুই রাজ্যের সীমানা দিয়ে বেআইনি কার্যকলাপ অনেকটাই বেড়ে যায়। এখন থেকে সীমানায় কড়া পুলিশি নজরদারি ও নাকা তল্লাশি শুরু হওয়ায় ভোটে এলাকায় নিরাপত্তা বজায় থাকবে বলে মত স্থানীয়দের। যদিও একাংশের দাবি, পুলিশের নজরদারি শিথিল হলেই আগের মতো বেআইনি কারবার চলবে।
রঞ্জিত দাস নামে স্থানীয় এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘আগে যদি পুলিশের কড়া নজরদারি থাকতো তাহলে এই মর্মান্তিক ঘটনা হত না। মুখ্যমন্ত্রী বলার পর সাময়িক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিছু মাস পর যখন নজরদারি শিথিল হবে তখন আগের অবস্থাই ঘুরে আসবে।’’
এগরা মহকুমা পুলিশ আধিকারিক মহম্মদ বৈদুজামান বলেন, ‘‘সারা মাস ওড়িশা সীমানা এলাকায় নজরদারি ও নাকা তল্লাশি চলে। এখন বাড়তি হিসেবে নাকা পয়েন্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সীমানায় সিসি ক্যামেরাও লাগানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy