Advertisement
E-Paper

‘মিশন সওদাগরে’ জোট গন্ধবণিকদের

ভারতীয় গন্ধবণিক সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাপ্পাকুমার দাস জানাচ্ছেন, বৈশ্য সম্প্রদায়ভুক্ত গন্ধবণিকরা এ রাজ্যে সংরক্ষণের আওতায় নেই।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:৪৭
এই প্রাচীন মূর্তিটি চাঁদ সওদাগরের বলে দাবি গন্ধবণিকদের। নিজস্ব চিত্র

এই প্রাচীন মূর্তিটি চাঁদ সওদাগরের বলে দাবি গন্ধবণিকদের। নিজস্ব চিত্র

অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণিতে (ওবিসি) তালিকাভুক্তির দাবিতে এ বার সরব হচ্ছেন এ রাজ্যে চাঁদ সওদাগরের উত্তরসূরিরা। সামনে রাখছেন চার দফা দাবি সম্বলিত ‘মিশন সওদাগর’।

নতুন বছরের প্রথম দিনে বেলপাহাড়ির ওড়গোন্দা এলাকায় ভারতীয় গন্ধবণিক সমাজকল্যাণ সমিতির সম্মেলনের আয়োজন করা হচ্ছে। ওই সম্মেলনে এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি, দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, কর্নাটকের মত বিভিন্ন এলাকা থেকে গন্ধবণিক সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা যোগ দেবেন। সম্মেলনে সর্বসম্মতভাবে ‘মিশন সওদাগর’ গৃহীত হবে। ‘মিশন সওদাগর’-এর চার দফা দাবি হল, গন্ধবণিকদের ওবিসি তালিকাভুক্তি, পশ্চিম বর্ধমানে চাঁদ সওদাগরের বাসস্থানে তাঁর নামাঙ্কিত চাঁদ সওদাগর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও চাঁদ সওদাগরের মূর্তি প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনে গন্ধবণিকদের জন্য আসন সংরক্ষণ এবং গন্ধবণিকদের সরকারিভাবে বাণিজ্যিক সুযোগসুবিধা প্রদান।

ভারতীয় গন্ধবণিক সমাজকল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাপ্পাকুমার দাস জানাচ্ছেন, বৈশ্য সম্প্রদায়ভুক্ত গন্ধবণিকরা এ রাজ্যে সংরক্ষণের আওতায় নেই। তবে ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওড়িশায় গন্ধবণিকদের অধিকাংশ ওবিসি (আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস) তালিকাভুক্ত। তবে অসম ও মণিপুরে গন্ধবণিকরা তফসিলি জাতিভুক্ত (এসসি)। পশ্চিমবঙ্গের গন্ধবণিকরা সংরক্ষণের সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত। সারা দেশে ৪০ লক্ষেরও বেশি গন্ধবণিক রয়েছেন। ১৯৮৫ সালের মণ্ডল কমিশনে বৈশ্য সম্প্রদায়ের ‘সাব কাস্ট’ গন্ধবণিকদের ওবিসি তালিকাভুক্ত করা করা হয়েছিল।

মনসামঙ্গলের মূল চরিত্র চন্দ্রধর বণিক, যিনি ‘চাঁদ সওদাগর’ নামেই বেশি পরিচিত। তবে বাস্তবে চাঁদ সওদাগর ছিলেন কি-না তা নিয়ে নানা যুক্তি-তক্ক-গপ্প রয়েছে। চাঁদ সওদাগরের চম্পকনগরীর দাবিদার এ রাজ্যের পূর্ব বর্ধমান জেলা, পড়শি রাজ্য অসম, এমনকি পড়শি রাষ্ট্র বাংলাদেশও। এ রাজ্যের গন্ধবণিকদের একটি বড় অংশের দাবি, পূর্ব বর্ধমানের কসবা চম্পাইনগরীটি চাঁদের আদি বাসস্থান ছিল। গন্ধবণিকদের সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি রামপ্রসাদ দত্ত বলছেন, ‘‘চাঁদ সওদাগর কল্পিত চরিত্র নন। কয়েকশো বছর আগে তাঁর অস্তিত্ব ছিল। তিনিই আমাদের আরাধ্য আদিপুরুষ। চাঁদের হাত ধরেই বঙ্গদেশে মনসা পুজোর প্রচলন এবং গন্ধবণিক জাতির উৎপত্তি।’’ রামপ্রসাদ জানাচ্ছেন, গন্ধবণিকদের আরাধ্য দেবী হলেন গন্ধেশ্বরী। এর পাশাপাশি, মনসা, শিব ও চাঁদ সওদাগরের পুজোও করেন গন্ধবণিকরা। রামপ্রসাদের দাবি, পূর্ব বর্ধমান জেলায় চাঁদ সওদাগরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও মূর্তি প্রতিষ্ঠার যথেষ্ট যৌক্তিকতা রয়েছে।

গন্ধবণিকদের সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক বাপ্পাকুমার দাস জানান, সংগঠনের রেজিস্ট্রেশন করানো হয়েছে। গত এক বছরে রাজ্য ও ভিন্ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গন্ধবণিকদের সংগঠিত করে সভা হয়েছে। এ বার 'মিশন সদাগর'এর চার দফা দাবিকে সামনে রেখে সম্মেলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্মেলনের দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দু’শো প্রতিনিধি বেলপাহাড়ির ওড়গোন্দায় যোগ দেবেন। বাপ্পা বলছেন, ‘‘সম্মেলনের পর ‘মিশন সওদাগর’এর চার দফা দাবি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করা হবে।’’

West Midnapore Jhargram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy