Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

শীতদুপুরের স্কুলে শৈশবে ফিরলেন শ্রীজাতরা

অনুষ্ঠানের নামেই ছিল অন্য ছোঁওয়া, ‘শীতদুপুর মেদিনীপুর’। ছিল কবিতা, কথা, গান, আড্ডা। এসেছিলেন কবি শ্রীজাত, পায়েল সেনগুপ্ত, তন্ময় চক্রবর্তী, নির্মাল্য মুখোপাধ্যায়রা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাদুতলা হাইস্কুলের এই অনুষ্ঠানে এসে ছোটবেলায় ফিরে গেলেন শ্রীজাতরা।

ভাদুতলা হাইস্কুলে কবিকে স্বাগত। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

ভাদুতলা হাইস্কুলে কবিকে স্বাগত। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
শালবনি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

অনুষ্ঠানের নামেই ছিল অন্য ছোঁওয়া, ‘শীতদুপুর মেদিনীপুর’। ছিল কবিতা, কথা, গান, আড্ডা। এসেছিলেন কবি শ্রীজাত, পায়েল সেনগুপ্ত, তন্ময় চক্রবর্তী, নির্মাল্য মুখোপাধ্যায়রা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাদুতলা হাইস্কুলের এই অনুষ্ঠানে এসে ছোটবেলায় ফিরে গেলেন শ্রীজাতরা। শ্রীজাতর নিজের কথায়, ‘‘আসতে চাই। কারণ, এটা ছাড়া আমাদের ছোটবেলাকে ছুঁয়ে দেখার আর কোনও উপায় নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অমিতেশবাবুরা (স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী) এত আদর করে ডেকেছেন যে আমাদের এখানে আসা ছাড়া আর উপায় ছিল না।’’

শালবনির ভাদুতলা হাইস্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে। সেই উপলক্ষেই ছিল এ দিনের অনুষ্ঠান। কবি পায়েল সেনগুপ্তও বলছিলেন, ‘‘স্কুলজীবনের কথা খুব মনে পড়ছে। মঞ্চ থেকে মনে হচ্ছে, আমি ওদের (ছাত্রছাত্রীদের) সঙ্গে কেন নেই।’’ কবি তন্ময় চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ছোটদের মধ্যে এসে আমার নিজেরও খুব ছোট হতে ইচ্ছে করছে। যা বলব ভেবে এসেছিলাম, সব গুলিয়ে গিয়েছে। অঙ্কে আমি কোনও দিন ছেষট্টির উপরে- টুপরে পাইনি।’’

ছোটবেলায় ফিরে যান শ্রীজাতও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘দক্ষিণ কলকাতার এক স্কুলে পড়েছি। স্কুলজীবনটা কেটেছে খুব ভয়ে। শিক্ষকেরা ছাত্র হিসেবে মোটেই আমাকে খুব পছন্দ করতেন না। তন্ময় ছেষট্টি পেয়েছিল অঙ্কে। আমার স্কুলে আমার একটা রেকর্ড রয়েছে। সেই রেকর্ডটা আজও কেউ ভাঙতে পারেনি। উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের মূল পরীক্ষায় আমি অঙ্কের নম্বর আটগুণ বাড়িয়েছিলাম। টেস্টে দুই পাই, উচ্চমাধ্যমিকে ষোলো।’’ তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আটগুণ বাড়ানোর ক্ষমতা ফার্স্ট বয়, ফার্স্ট গার্লেরও হয়নি। বুঝতেই পারছেন, আমার স্কুলজীবন খুব সুখের ছিল না। আমাকে যাঁরা পড়িয়েছেন, তাঁদের জীবনও দুঃস্বপ্নের ছিল। সেই সময়টা কাটিয়ে উঠে আজকে যে এই ছোট ছেলেমেয়েদের সামনে এসে দাঁড়াতে পারি, দু’টো কথা বলতে পারি, তার কারণ ভালবাসা, ভরসা। আমরা যেন সবাই মিলে ভালবেসে এগিয়ে যেতে পারি।’’ মেদিনীপুরের ছেলে, কবি নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘শ্রীজাতদারা এখানে এসেছেন। আমাদেরকে ধন্য করেছেন।’’ শ্রীজাতকে পাল্টা বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরাই এখানে এসে ধন্য হয়েছি।’’

স্কুলেই এক ঝাঁক কবিকে কাছে পেয়ে আনন্দের শেষ ছিল না গার্গী সামন্ত, বৈশাখী দাসদের। ষষ্ঠ শ্রেণির গার্গীর কথায়, ‘‘খুব কাছ থেকে শ্রীজাতদাদের দেখেছি। দারুণ লেগেছে।’’ অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বৈশাখী বলে, ‘‘আমাদের স্কুলে এসে ওঁরা কবিতা পড়লেন। দিনটার কথা অনেক দিন মনে থাকবে।’’ স্কুলের শিক্ষিকা পুষ্পিতা দাস বসু বলেন, "এত গুণিজনকে পেয়ে স্কুল সত্যি ধন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bhadutala Vivekananda High School Srijato
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE