দলেরই প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুরের খরিদায় দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের সকলকে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিলেন তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ দিন দলের নেতা দেবাশিস চৌধুরীর সঙ্গে সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন শুভেন্দুবাবু। সবংয়ের ভোটের প্রচারে থাকার জন্যও দেবাশিসবাবুকে বলেন তিনি।
আগামী ১৭ থেকে ১৯ ডিসেম্বর সবংয়ে পদযাত্রা করবেন শুভেন্দুবাবু। ১৯ ডিসেম্বর সবংয়ে দেবাশিসবাবুকে থাকতে বলেন তিনি। শুভেন্দুবাবু বলেন, “সবংয়ে আমরা জিতব। ওঁরা পরীক্ষিত দলের সৈনিক। ওঁরা নিশ্চয় সবংয়ে প্রচারে যাবে।” আগামী ৭ জানুয়ারি নেতাই দিবসেও দেবাশিসবাবুকে থাকতে বলেন তিনি। পরিবহণমন্ত্রী বলেন, “২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গণহত্যার দিনে মুনমুন চৌধুরী, উত্তরা সিংহ, রমাপ্রসাদ গিরি, আরিফ আহমেদ এই চারজন প্রথম পৌঁছেছিল। আমার ফোনে প্রথম ফোন করেছিল। তাই ওই দিন আমি মুনমুনদের নেতাইয়ে থাকতে বললাম।”
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর ওই দিন খরিদার তৃণমূল কার্যালয়ে আসেন শুভেন্দুবাবু। ২০১২ সালে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরে যান দেবাশিসবাবু। সেই সময় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি ছিলেন শুভেন্দুবাবু। দলের এক সূত্রে খবর, দেবাশিসবাবু পদ হারানোর পর থেকেই শুভেন্দুবাবুর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়ে। চলতি বছরের শুরুতে তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতির পদ থেকে দেবাশিসবাবুকে সরিয়ে পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারকে নতুন সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২০১২ সাল থেকে দেবাশিসবাবুর খাস তালুক হিসেবে পরিচিত খরিদায় দলের কার্যালয়ে আসেননি শুভেন্দুবাবু। মঙ্গলবার তাই কিছুটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়ে তিনি বলেন, “২০০৯ থেকে ২০১১ সাল অত্যন্ত কঠিন সময় ছিল। সেই সময়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। মুনমুন তখন জেলা যুব সভাপতি। সকলেই সাহায্য করেছে। তখন শহরে আর কোনও অফিস ছিল না। এখানেই আসতাম-বসতাম।” দেবাশিসবাবু বলেন, “সম্প্রতি ডেবরার একটি সভায় উনি বলেছিলেন, খড়্গপুর শহরে একটি বিয়েবাড়িতে আসবেন। তখন আমাদের খরিদা কার্যালয়ে এসে চা খাবেন। তাই এসেছেন।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ডেবরায় তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক রাধাকান্ত মাইতি সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় চিন্তিত দলের জেলা নেতৃত্ব। দল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া আটকাতে তাই সকলকে একসাথে কাজ করার বার্তা দিলেন শুভেন্দুবাবু।
মঙ্গলবার শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমায় রাজ্যস্তরের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিলেন দিদি। আমি আগে এখানে দেখতাম। পরে মুকুলদা দেখত। এখন সুব্রত বক্সী দলের পর্যবেক্ষক। সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান হিসাবে এই জেলায় আসি। প্রত্যেকের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ওদের একটা কথা বললাম, আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে। সামনে চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিকভাবে আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরির চেষ্টা চলছে। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি মিলেমিশে গিয়েছে। রাধাদার মতো লোক জুটে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এই পরিস্থিতিকে আমাদের সংগঠিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।” খড়্গপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির অফিসের পিছনে একটি সভাগৃহের উদ্বোধন করেন শুভেন্দুবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy