Advertisement
০৩ মে ২০২৪

দেওয়াল বেয়ে ঝাড়গ্রামে বহুতলে হানা ট্যারান্টুলার

গরমের ছুটিতে সপরিবার মুম্বই থেকে ঝাড়গ্রামে বাবা মায়ের কাছে এসেছেন মুম্বই ফিল্ম জগতের বিশিষ্ট প্রোডাকশন ডিজাইনার 'পদ্মাবত' খ্যাত সুব্রত চক্রবর্তী। সুব্রতর ছোট ভাই তপোব্রতও পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে এসেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০১:৩১
Share: Save:

বেলদা, ডেবরা, দাসপুরের পর এ বার ঝাড়গ্রাম শহরে বহুতলের ফ্ল্যাটের ড্রয়িং রুম থেকে মিলল রোমশ মাকড়সা। দাঁতন ও কেশিয়াড়ির গ্রামেও দেখা মিলেছে ট্যারান্টুলার।

গরমের ছুটিতে সপরিবার মুম্বই থেকে ঝাড়গ্রামে বাবা মায়ের কাছে এসেছেন মুম্বই ফিল্ম জগতের বিশিষ্ট প্রোডাকশন ডিজাইনার 'পদ্মাবত' খ্যাত সুব্রত চক্রবর্তী। সুব্রতর ছোট ভাই তপোব্রতও পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে এসেছেন। শনিবার রাতে ফ্ল্যাটের বৈঠক খানায় দুই ছেলে-বৌমা ও নাতি নাতনিদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলেন দেবব্রতবাবু ও তাঁর স্ত্রী লিপিকাদেবী। বৈঠকখানার একটি সোফায় বসেছিলেন দেবব্রতবাবু। বাকিরা মেঝেতে বসেছিলেন। তপব্রত ও তাঁর স্ত্রী শিলা প্রথমে মাকড়সাটিকে দেখতে পান। সুব্রতর ভাই তপোব্রত বলেন, ‘‘ঘরে পরার পায়ের চটি খুলে মারি মাকড়সাটার উপর। চটচটে আঠালো রস ছিটকে বেরোয় মাকড়সাটার দেহ থেকে। সুব্রত বলেন, ‘‘কীভাবে চারতলার ড্রইংরুমে মাকড়সাটা এল, সেটাই বুঝতে পারছি না। আতঙ্কে সারারাত ঠিক মতো ঘুমোতে পারিনি।’’ দেবব্রতবাবুর ফ্ল্যাটের মৃত মাকড়সাটির ছবি দেখে বনকর্মীরা বলছেন, এটি ট্যারান্টুলা। ঝাড়গ্রামের ভারপ্রাপ্ত ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, ‘‘অমসৃণ দেওয়াল বেয়ে ট‍্যারান্টুলা অনেক উপরে উঠতে পারে। তাই রাতে মশারি টাঙিয়ে ঘুমোনো উচিত।’’

রবিবার দাঁতন-১ ব্লকের মনোহরপুর গ্রামও একাধিক রোমশ মাকড়সা দেখতে পাওয়া যায়। সকালে মনোহরপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় দে-র বাড়িতে একসঙ্গে পাঁচটি ট্যারান্টুলা দেখা যায়। কেশিয়াড়িতেও রবিবার সকালে ট্যারান্টুলার দেখা মেলে। কেশিয়াড়ি মিনি মার্কেটে দোকান খুলতে এসে জয় মাইতি ট্যারান্টুলা দেখতে পান। দেখা মাত্রই মাকড়সাটি মেরে ফেলা হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ট্যারান্টুলা মূলত, শুকনো মাটির গর্তে অথবা পুরনো বাড়ির ফাটলে বাসা বাঁধে। কিন্তু স্বাভাবিক বাসস্থান ধ্বংসের ফলে এরা বিভিন্ন এলাকায় বেরিয়ে পড়ছে বলে মনে করেন প্রাণিবিদ্যার গবেষকরা।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুর কলেজের প্রাণিবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান সুমন প্রতিহার এবং ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের অধ্যক্ষ তথা প্রাণিবিদ্যার গবেষক দেবনারায়ণ রায় জানালেন, মাকড়সা নিয়ে অযথা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। এখানে পাওয়া সব মাকড়সা ট্যারান্টুলা নয়। তাছাড়া ট্যারান্টুলা-সহ কোনও মাকড়সাই বন্যপ্রাণী তালিকাভুক্ত নয়। এদের জীবনচক্রের প্রক্রিয়া দীর্ঘ। সেই কারণে কখনও এদের দেখা যায় না। আবার কখনও এদের একসঙ্গে অনেক জায়গায় দেখা যায়। এরা সহজে মানুষকে আক্রমণ করে না। প্রতিরোধ পেলে এরা মানুষকে কামড়ায়। এদের বিষে মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা একেবারেই নেই। এই মাকড়সার রোমের ছোঁয়া লেগেও সাময়িক যন্ত্রণা ও অ্যালার্জি হতে পারে। মাকড়সা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলছেন গবেষকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE