Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সমাজসেবায় কল্যাণ তহবিলে দান একলব্যের

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়! প্রবাদটা বাস্তবে সত্যি করে দেখিয়েছেন ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। সীমিত আয়ের মধ্যেও তাঁরা লক্ষাধিক টাকার কল্যাণ তহবিল গড়ে ফেলেছেন। মূলত, সমাজসেবামূলক কাজের জন্যই এই উদ্যোগ।

পাশে: ঝাড়গ্রাম জেলা ঘোষণার প্রশাসনিক মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন শুভকরানন্দ। নিজস্ব চিত্র

পাশে: ঝাড়গ্রাম জেলা ঘোষণার প্রশাসনিক মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন শুভকরানন্দ। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৫৪
Share: Save:

ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়! প্রবাদটা বাস্তবে সত্যি করে দেখিয়েছেন ঝাড়গ্রাম একলব্য আদর্শ আবাসিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা। সীমিত আয়ের মধ্যেও তাঁরা লক্ষাধিক টাকার কল্যাণ তহবিল গড়ে ফেলেছেন। মূলত, সমাজসেবামূলক কাজের জন্যই এই উদ্যোগ। কর্মীদের এই কল্যাণ তহবিলের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিদ্যামন্দির (ইএমআরএস) স্টাফ ওয়েলফেয়ার ফান্ড’।

গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি মাসের বেতনের একটি অংশ তহবিলে জমা দিচ্ছেন স্কুলের ৩৩ জন কর্মী। তহবিল থেকে রাজ্য ও দেশের আর্ত মানুষের সেবায় অর্থদান করা হচ্ছে। গত ৪ এপ্রিল ঝাড়গ্রাম জেলা ঘোষণার প্রশাসনিক মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তাঁর ত্রাণ তহবিলের জন্য দশ হাজার এক টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগে স্কুল-কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

একলব্যের এই কর্মী-কল্যাণ তহবিল থেকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল এবং রামকৃষ্ণ মিশনের ত্রাণ তহবিলেও অর্থ সাহায্য করা হয়েছে। তহবিলের টাকা থেকে বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের ২৭টি শয্যার বিছানা কিনে দেওয়া হয়েছে।

এক সময় আদিবাসী পড়ুয়াদের এই সরকারি স্কুলটিকে ঘিরে বিস্তর অভিযোগ ছিল। স্কুলটির বেহাল অবস্থা নিয়ে আদিবাসী সংগঠনগুলি বহুবার প্রশাসনিক মহলের দ্বারস্থ হয়। গত বছর এই স্কুলটির পরিচালনার দায়িত্ব বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। গত এক বছরে মিশনের আইন ও গণ মাধ্যম বিভাগের ভারপ্রাপ্ত স্বামী শুভকরানন্দের (শান্তনু মহারাজ) তত্ত্বাবধানে আবাসিক স্কুলটির সার্বিক খোলনলচে বদলে গিয়েছে। স্কুল ও হস্টেলের পরিকাঠামো, খাওয়া দাওয়া, পঠনপাঠন ও পরীক্ষাগার-সহ সব ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে। আদিবাসী সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অত্যন্ত আধুনিক ভাবে স্কুলটিকে ঢেলে সাজছেন মিশন কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের অন্যান্য সেরা স্কুলগুলির সঙ্গে এখন একলব্যের তুলনা টানা হচ্ছে।

স্কুলের টিচার ইনচার্জ নৃপেন টুডু বলেন, “মিশনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কর্মীরাও সম্মিলিত ভাবে সমাজসেবায় এগিয়ে এসেছেন।” কল্যাণ তহবিলের সম্পাদিকা তথা স্কুলের সহ শিক্ষিকা চম্পা মণ্ডলরায় জানান, অসময়ে স্কুলের শিক্ষক-কর্মীরা তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। স্কুলের মেধাবী পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দেওয়ারও ভাবনা চিন্তা করা হচ্ছে।

স্বামী শুভকরানন্দ বলেন, “স্বামীজি বলতেন, ‘নিঃস্বার্থপরতাই ঈশ্বর’। সেই আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষক-কর্মীরা এমন উদ্যোগ নেবেন, সেটাই স্বাভাবিক। না হলে আর এখানে রামকৃষ্ণ মিশনের আসা কেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Teachers Non-teaching staff CM Donation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE