ঢাকে কাঠি পড়া এখন আর কিছু সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু এখনও সেপ্টেম্বর মাসের বেতন পেলেন না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ১৪ হাজার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা। উৎসবের মরসুমে বেতন পেতে দেরি হওয়ায় আন্দেলনে নামার কথাও ভাবছেন অনেকে।
প্রতি মাসের প্রথম দিনেই সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও কেন বেতন দিতে দেরি দিচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলছেন একাংশ শিক্ষক। এক প্রাথমিক শিক্ষকের কথায়, “বেতন পেলে কেনাকাটা করব ভেবেছিলাম। সে তো হলই না। এ বার দেখছি, খাবার সংস্থান করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।”
জেলার প্রায় ১৪ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন। ‘ইন্টিগ্রেটেড স্যালারি অনলাইন সিস্টেম’-এর মাধ্যমে এখন শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রতি মাসের বেতন পান। এই পদ্ধতির মাধ্যমে প্রতি মাসের বেতনের টাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যায়। এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই পুজো বোনাসের টাকা শিক্ষকেরা পেয়ে গিয়েছেন। তাহলে বেতন পেতে দেরি হচ্ছে কেন?
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আমিনুল আহাসান বলেন, “খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, অনলাইন পদ্ধতিতে ত্রুটির কারণেই মাইনে হয়নি। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার আবেদনও জানিয়েছি। তাঁরাও নিরন্তর চেষ্টা করছেন। আমরা এই আশ্বাসও পেয়েছি যে, অফিস, ব্যাঙ্ক ছুটি থাকলেও অনলাইন পদ্ধতি ত্রুটিমুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে।” শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নয়, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার ক্ষেত্রেই এমন
ঘটনা ঘটেছে।
একাংশ শিক্ষক এই প্রশ্নও তুলছেন, যদি ‘ইন্টিগ্রেটেড স্যালারি অনলাইন সিস্টেম’-এ ত্রুটি থাকে তাহলে বোনাসের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকল কী করে? তাহলে কী অন্য কোনও সমস্যা রয়েছে! এই প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর মেলেনি। এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কে এরপর ছুটি পড়ে যাবে। এটিএম-গুলোতেও টাকা তোলার হিড়িক পড়বে। তখন তো অর্ধেক এটিএম-এই টাকা পাওয়া যাবে না। বেতন পেতে আরও দেরি হলে খুব সমস্যায় পড়তে হবে।’’
বিজেপি-র জেলা সভাপতি তথা প্রাথমিক শিক্ষক ধীমান কোলের কথায়, “ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে, পুজোর আগেও বেতন পেলাম না। পুজো মানেই তো খরচ বেশি। সরকারের বিষয়টি ভাবা উচিত ছিল। এ বার আবার এক সঙ্গে দু’টি উৎসব। কারণ, মহরমও রয়েছে। উৎসবের আনন্দ ছেড়ে কি শিক্ষকদের আন্দোলনে নামাতে চান মুখ্যমন্ত্রী।”
নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সম্পাদক ধ্রুবশেখর মণ্ডল বলেন, “বেতনের উপরেই তো সব কিছু নির্ভরশীল। মুখ্যমন্ত্রী মাস পয়লা মাইনে দেওয়ার কথা ঘোষণার পর অনলাইন পদ্ধতি চালু হল। তবু বেশিরভাগ মাসেই আমরা তার সুফল পাচ্ছি না। এমনকী পুজোর মাসেও একই ঘটনা ঘটল।” তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতা প্রাথমিক শিক্ষক অর্ঘ্য চক্রবর্তী বলছেন, “এখনও মাইনে মেলেনি ঠিকই। যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে কারও তো কিছু করার নেই। তবে সকলে মিলেই আপ্রাণ চেষ্টা করছেন, কী ভাবে দ্রুত মাইনে
দেওয়া যায়।”
যদিও অর্থ দফতর সূত্রে খবর, অনলাইনে বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত কিছু সমস্যা হয়েছিল। তাই বেতন দেওয়া যায়নি। বুধবার এই সমস্যার সমাধান করা হয়েছে বলে অর্থ দফতরের দাবি। এরপর দ্রুত সকলে বেতন পেয়ে যাবেন বলে
জানা গিয়েছে।
প্রশাসনিক বৈঠক। ঝাড়গ্রামে এক প্রশাসনিক বৈঠক হল। বুধবার মহকুমাশাসকের দফতরে এই বৈঠক হয়। উন্নয়নমূলক কিছু কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy