মশা নিধনে আজ শুরু অভিযান

শহর খড়্গপুরে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। ডেঙ্গি রোধে দ্রুত শহরে সাফাই অভিযান শুরুর নির্দেশ দিয়েছে। প্রশাসনের চাপে আজ, শনিবার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সাফাই অভিযান শুরু করছে পুরসভা। উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা ও পুরসভার প্রতিনিধিরা। অভিযানে রেলের প্রতিনিধিদেরও থাকার কথা বলা হয়েছে।

চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত খড়্গপুর শহরের রেল এলাকায় ৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এ ছাড়াও শহরের পুর এলাকায় একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। যদিও শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে একই পরিবারের তিনজন সদস্য ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কোলাঘাটের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। শহরের আরও ১০জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। এছা ড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন প্রায় ৪৩ জন। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। তাই এই ওয়ার্ড থেকেই ডেঙ্গি রোধে অভিযান শুরু করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। জেলার মশা বাহিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “ডেঙ্গির পিছনে পরিবেশ ও মানুষ দায়ী। পরিবেশ বদলানোয় মশাও চরিত্র বদল করছে। কিন্তু মানুষের সচেতনতা বা়ড়ছে না। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে আমাদের লড়াই করতে হবে।”

শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার খড়্গপুর পুরসভায় এসে বৈঠক করেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় ও মশা নিধনে যাবতীয় ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে পুরসভাকে। পুরসভার দাবি, শহরের রেল এলাকায় রেল কর্তৃপক্ষের বাধায় কাজ করা যাচ্ছে না। যদিও জেলা প্রশাসনের পাল্টা দাবি, এই কাজে রেল বাধা হবে না। শহরের রেল এলাকায় মশার বাড়বৃদ্ধি হলে তার ফল ভুগতে হবে পুর এলাকার বাসিন্দাদেরও। তাই রেল এলাকায় মশা নিধনেও পদক্ষেপ করতে হবে পুরসভাকেই। অতিরিক্ত জেলাশাসকও গুরুত্ব দিয়ে পুরসভাকে বিষয়টি দেখতে বলেছেন। খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলছেন, “ডেঙ্গি রোধে অভিযানে জেলা প্রশাসনের কর্তারাও উপস্থিত থাকবেন।”

শহরের ডেঙ্গি অধ্যুষিত এলাকা থেকে যাতে অন্যত্র ডেঙ্গির জীবাণু ছড়াতে না পারে সে জন্য মশানাশক তেল স্প্রে করতে হবে। দেওয়া হবে ধোঁয়াও। নিকাশি নালা সাফাই, ডেঙ্গি রোধে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিলি, পোস্টার-ব্যানার লাগানোর কাজও হবে একইসঙ্গে। হবে মাইকের মাধ্যমে প্রচারও। এই কাজ সরেজমিন তদারকি করবেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “শনিবার থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে অভিযান শুরু হবে। এরপর থেকে বিভিন্ন ওয়ার্ডে লাগাতার সাফাই অভিযান, সচেতনতা বাড়ানো ও মশা বিনাশে জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরাও অভিযানে থাকার
চেষ্টা করব।”

পুরপ্রধান প্রদীপ সরকারও বলছেন, “ডেঙ্গি রোধে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড ধরে ধরে ২০-২৫জনের দল সাফাই অভিযানের কাজ করবে। আমরা নিজেরাও উপস্থিত থাকব।”