Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
মেডিক্যালে মৃত্যুর তদন্ত

৩০ ঘণ্টাতেও দেখা নেই বিশেষজ্ঞের

চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ করেছিলেন পরিজনেরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ঘটনার তদন্তেও উঠে এল অনিয়মের ছবি। মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, তদন্তে দেখা গিয়েছে পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হওয়া সুজিত পালেন কোনও ইসিজি করা হয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ করেছিলেন পরিজনেরা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ঘটনার তদন্তেও উঠে এল অনিয়মের ছবি। মেডিক্যালের এক সূত্রে খবর, তদন্তে দেখা গিয়েছে পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হওয়া সুজিত পালেন কোনও ইসিজি করা হয়নি। রোগী প্রায় ৩০ ঘন্টা মেডিক্যালে ভর্তি থাকা সত্ত্বেও কোনও সিনিয়র ডাক্তার তাঁকে দেখেননি। গোটা সময়টা জুনিয়র ডাক্তাররাই ছিলেন ভরসা। এমনকী, ঘটনার দিন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে অক্সিজেন সিলিন্ডারেরও সমস্যা ছিল। একটি সিলিন্ডার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বেশ কয়েকজন রোগীকে দেওয়া হয়।

কেন এই পরিস্থিতি? সদুত্তর এ ড়িয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার জবাব, “তদন্ত কমিটি সব দিক খতিয়ে দেখছে। তদন্ত চলাকালীন এ সব নিয়ে এখনই কিছু বলব না!” তন্ময়কান্তিবাবুর সংযোজন, ‘‘তদন্ত শেষে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়বে। রিপোর্ট খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’

মেদিনীপুর শহরের সুজাগঞ্জের বাসিন্দা সুজিত পাল পেটে ব্যথা নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন গত ৭ মার্চ। ৮ মার্চ তাঁর মৃত্যু হয়। পরিজনেদের অভিযোগ, রাতে হঠাৎ সুজিত অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন ওয়ার্ডের জুনিয়র ডাক্তার-নার্সদের বলা হলেও তাঁরা কর্ণপাত করেননি। চিকিত্সায় গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ তুলে ৯ মার্চ হাসপাতাল সুপারের অফিসে সুজিতের মৃতদেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান পরিজনেরা। পরিস্থিতি দেখে তিন সদস্যের কমিটি গড়ে তদন্ত শুরু করেন মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে দু’দফায় ওই তদন্ত কমিটির কাছে গিয়েছেন রোগীর পরিজনেরা।

সুজিতের পরিজনেদের বক্তব্য, জেলার সব থেকে বড় সরকারি হাসপাতালই যে নানা রোগে ভুগছে, এই ঘটনা তার প্রমাণ। মৃতের দাদা চন্দ্রশেখর পাল বলছিলেন, “চিকিত্সায় গাফিলতিতেই ভাই মারা গিয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন কোনও সিনিয়র ডাক্তার ওকে দেখেননি। জুনিয়র ডাক্তাররা এসে দেখে গিয়েছে। ও পেটের যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয়েছিল। তাও ইসিজি করানো হয়নি। শুধুমাত্র এক্সরে করানো হয়।’’ চন্দ্রশেখরবাবুর দাবি, “তদন্ত কমিটির এক সদস্যও আমার কাছে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে ইসিজি করানো উচিত ছিল। ভাইকে যে কোনও সিনিয়র ডাক্তার দেখেননি তাও মেনেছেন।’’

পরিজনেদের সঙ্গে তদন্ত কমিটির কাছে গিয়েছেন সুজাগঞ্জ এলাকার কাউন্সিলর সৌমেন খানও। সৌমেনবাবুও বলেন, ‘‘আগে মেদিনীপুর মেডিক্যালেরই রোগ সারানোর প্রয়োজন রয়েছে। আমরা ওই ঘটনার যথাযথ তদন্ত চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Serious ECG Expert
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE