Advertisement
E-Paper

কবরস্থানের জমি দখল করে তৃণমূলের অফিস

তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, ‘‘বিষয়টা নজরে এসেছে। খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’ তবে তৃণমূলের আরেক জেলা নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কবরস্থানের জায়গায় কোনও কার্যালয় রাখা যায় না। এ ক্ষেত্রেও থাকবে না। যে পদক্ষেপ করার দল করবে। আইনের উর্ধ্বে কোনও কিছুই নয়।’’ 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০১:০১
এই কার্যালয় ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

এই কার্যালয় ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সময়ে জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোনও জমি বেদখল করে দলের কার্যালয় করা যাবে না। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে জেলার বিভিন্ন জায়গাতেই বেআইনি ভাবে মাথা তুলছে তৃণমূলের কার্যালয়। এ বার কবরস্থানের জমি দখল করে দলীয় কার্যালয় তৈরির অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি মেদিনীপুর শহরের মির্জা মহল্লায়।

ওই এলাকায় মহল্লাদারেরা এ নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। কবরস্থান থেকে দলীয় কার্যালয় সরানোর দাবি জানিয়েছেন। ঘটনায় অস্বস্তিতে শাসক দলও। বিশেষ করে যেখানে সামনে লোকসভা নির্বাচন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, ‘‘বিষয়টা নজরে এসেছে। খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছি। উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’ তবে তৃণমূলের আরেক জেলা নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘কবরস্থানের জায়গায় কোনও কার্যালয় রাখা যায় না। এ ক্ষেত্রেও থাকবে না। যে পদক্ষেপ করার দল করবে। আইনের উর্ধ্বে কোনও কিছুই নয়।’’

মির্জা মহল্লায় কবরস্থান দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে দু’টি মহল্লা। ওই জমিতে আগে থেকে একটি অস্থায়ী কাঠামো ছিল। মহল্লাদারদের বক্তব্য, কবরস্থানের দেখভালের জন্যই এই কাঠামো করা হয়েছিল। দিন কয়েক হল ওই কাঠামোই বদলে তৃণমূলের কার্যালয় হয়ে গিয়েছে। টিনের ছাউনি দেওয়া ওই কাঠামোর গায়ে সবুজ রঙ করা হয়েছে। দেওয়ালে লেখা হয়েছে, ‘সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস।’ মির্জামহল্লা এলাকায় দু’টি মহল্লা রয়েছে। একটি পূর্ব মহল্লা, অন্যটি পশ্চিম মহল্লা। পশ্চিম মহল্লার মহল্লাদার শেখ আব্দুল মজিদ বলেন, ‘‘মহল্লার কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অস্থায়ী কাঠামো ছিল। ওই কাঠামো দখল করে তৃণমূলের কার্যালয় করা হয়েছে। ওখানে গাঁজা, মদের কারবারও চলে।’’

ওই এলাকার মহল্লাদারদের দাবি, স্থানীয় মুরশেদ খান ওরফে বান্টি-সহ তৃণমূলের কয়েকজন এই কার্যালয় করেছেন। মুরশেদ যুব তৃণমূলের স্থানীয় ওয়ার্ড সভাপতি। মুরশেদের পাল্টা দাবি, ‘‘যারা এই কার্যালয়ের বিরোধিতা করছেন, তারাই গাঁজা- মদের কারবারে মদত দেয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এখানে অনেকদিন ধরেই এই ঘর রয়েছে। আমরা এই ঘরে বসে এলাকার কাজই করি। মানুষের সেবা করি। এখান থেকে এই ঘর সরানোর দাবি করা হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’’

সেই দাবি মানতে রাজি নন পশ্চিম মহল্লার মহল্লাদার। তাঁর দাবি, ‘‘ওখানে ভাল কাজ হয় না। মহল্লার কবরস্থানের ওই কার্যালয় থেকে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।’’ পূর্ব মহল্লার মহল্লাদারেরও দাবি, ‘‘এলাকার ছেলেরা বিপথে যাচ্ছে ওই আড্ডায় গিয়ে।’’ ওই কার্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী অবশ্য পাল্টা বলছেন, জমিটা কবরস্থানের এটা ঠিক। কিন্তু এতদিন কেউ বাধা দিল না কেন? মৌন থাকা তো সম্মতিরই লক্ষ্মণ!

এ নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৌমেন খান বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা জায়গা দখল করতে করতে একেবারে কবরস্থানে গিয়ে পৌঁছেছে। আর কোথায় কোথায় পৌঁছবে সেটাই ভাবছি!’’

Midnapore Cemetry TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy