Advertisement
E-Paper

ভর্তির নামে টাকা, কাঠগড়ায় টিএমসিপি

কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চালু হয়েছে অনলাইনে আবেদন। তারই মধ্যে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে এক ছাত্রের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল খড়্গপুর কলেজে। কাঠগড়ায় শাসক দলের দুই ছাত্রনেতা।শনিবার বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌশিক ঘোষের কাছে অক্ষয় সোনকার নামে এক ছাত্র লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, হিন্দি অর্নাসে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকে ৮ হাজার টাকা

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:২৯

কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে চালু হয়েছে অনলাইনে আবেদন। তারই মধ্যে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে এক ছাত্রের থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল খড়্গপুর কলেজে। কাঠগড়ায় শাসক দলের দুই ছাত্রনেতা।

শনিবার বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌশিক ঘোষের কাছে অক্ষয় সোনকার নামে এক ছাত্র লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, হিন্দি অর্নাসে ভর্তি করে দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা হায়দার আলি খান ওরফে মান্টা ও সংগঠনের শাখা কার্যকরী সভাপতি শেখ জামির। দু’জনেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ, সোমবার কলেজ পরিচালন সমিতির তিন জন শিক্ষক প্রতিনিধি, দু’ জন শিক্ষাকর্মী প্রতিনিধি ও দু’ জন সরকার মনোনীত প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ডাকা হয়েছে অভিযুক্ত ও অভিযোগকারী ছাত্রদের। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কৌশিক ঘোষ বলেন, “আলোচনায় বসে পদক্ষেপ করব।”

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সব কলেজেই এ বার অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। খড়্গপুর কলেজও তার ব্যতিক্রম নয়। তাহলে কী ভাবে চলছে এই টাকা নেওয়ার চক্র?

কলেজ সূত্রে খবর, প্রথম বর্ষে ভর্তির প্রথম মেধা তালিকা প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। শূন্যপদ পূরণে আগামী ৪ থেকে ৭ জুলাই ফের আবেদন জমা দেওয়া যাবে। অভিযোগ, যে সব পড়ুয়ার নাম দ্বিতীয় মেধা তালিকায় ঠাঁই পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, ওয়েবসাইট ঘেঁটে সেই সব নাম জোগাড় করছে টিএমসিপি। তারপর তাদেরই ভর্তির টোপ দিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে। অনেকে টাকা দিয়েও দিচ্ছে। যেমন, অক্ষয় সোনকার।

অক্ষয়ের দাবি, ৪ থেকে ৭জুলাই আবেদন জমা দেওয়ার ব্যাপারে খুঁটিনাটি জানতেই সপ্তাহখানেক আগে কলেজে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই তাঁর জামিরের সঙ্গে আলাপ হয়। জামিরের কথামতো গত শুক্রবার তিনি হায়দারকে ৮ হাজার টাকা দেন। অক্ষয়ের বক্তব্য, “শেখ জামির ভুল বুঝিয়ে বলেছিলেন, ভর্তির ফি বাবদ টিএমসিপি নেতা হায়দার আলি খানকে টাকা দিতে হবে। আমি হায়দারদাকে ৮ হাজার টাকা দিই। পরে হায়দারদা বলেন, এই টাকা ওঁরা নিয়েছেন। ভর্তির সময়ে ফি বাবদ সাড়ে তিন হাজার টাকা লাগবে।’’ শনিবার লিখিত অভিযোগ করার পর থেকে টিএমসিপি-র ছেলেরা অক্ষয়কে শাসাচ্ছে বলেও অভিযোগ।

যদিও জামিরের দাবি, “ওই ছাত্র মিথ্যা অভিযোগ করছে। এর পিছনে অন্য কেউ রয়েছে।” হায়দারেরও বক্তব্য, “ওই ছাত্রকে দিয়ে কেউ মিথ্যা অভিযোগ করালে কিছু করার নেই।”

এই দুই টিএমসিপি নেতার ইঙ্গিত মূলত সংগঠনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দিকে। খড়্গপুর কলেজে টিএমসিপির প্রাক্তন শহর সভাপতি রাজা সরকার ও প্রাক্তন শহর সহ-সভাপতি হায়দার আলি খানের অনুগামীদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। গত বছরে টিএমসিপির শহর কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। সংগঠনের নতুন জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী দায়িত্ব নেওয়ার পরে কলেজের শাখা কমিটি গড়া হয়। যে দু’জনের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোদ, তাঁরা দেবলীনা-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা রাজাও এ দিন বলেন, “ছাত্রদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের জেলা সভানেত্রীর অনুগামী হায়দাররা টাকা নিচ্ছে বলে শুনছি। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।” স্যোশাল মিডিয়াতেও এই সুরেই সরব হয়েছে টিএমসিপির একাংশ।

আজ, সোমবার জেলায় আসছেন টিএমসিপির রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত। ২৬ জুলাই সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রস্তুতি বৈঠকে ঝাড়গ্রামে যাওয়ার কথা তাঁর। তার আগে এমন ঘটনায় বিড়ম্বনায় টিএমসিপি-র জেলা নেতৃত্ব। সংগঠনের জেলা সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী অবশ্য বলেন, “আমার বিষয়টি জানা নেই। তবে ছাত্র ভর্তির নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হলে বরদাস্ত করা হবে না।”

TMCP College Kharagpur student Admission
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy