E-Paper

প্রাক্তন-বর্তমান বিধায়কেরাও প্রার্থী, প্রশ্নে তৃণমূলের নীতি

প্রাক্তন বিধায়কেরা পুনর্বাসন পাচ্ছেন জেলা পরিষদে। তবে তার পিছনেও থাকছে অঙ্ক। বিধানসভা ভোটে হারার পর থেকে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলে পুরোপুরি কোণঠাসা ছিলেন।

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ০৯:১৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

প্রাক্তনরা না হয় পুনর্বাসন পাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমান বিধায়কেরাও জেলা পরিষদে প্রার্থী হচ্ছেন কেন? প্রশ্নের মুখে পড়ছে শাসক দলের ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ নীতি। ইঙ্গিত মিলছে অসন্তোষেরও।

শাসক দল সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের সায় না থাকা সত্ত্বেও এ বার প্রার্থী হচ্ছেন উত্তরা সিংহ, অজিত মাইতি। উত্তরা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা গড়বেতার বিধায়ক। অজিত জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা পিংলার বিধায়ক। প্রার্থী হচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চার প্রাক্তন বিধায়ক। ডেববার সেলিমা খাতুন, রাধাকান্ত মাইতি ছাড়াও শিকে ছিঁড়তে চলেছে ঘাটালের শঙ্কর দোলুই ও চন্দ্রকোনার ছায়া দোলইয়ের।

বুধবারই মনোনয়ন জমা করেছেন উত্তরা। আজ, বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা করবেন অজিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছেন বলেই প্রার্থী হচ্ছেন ওঁরা, মনে করাচ্ছেন ওই দুই বিধায়কের অনুগামীরা। তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, ‘‘প্রার্থী ঠিক করেছে দল। দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।’’ সূত্রের খবর, উত্তরাদের ফের প্রার্থী করার ক্ষেত্রে আপত্তি ছিল সুজয়ের অনুগামী বলে পরিচিতদের। দলের অন্দরে তাঁদের বক্তব্য ছিল, বিধায়কদের ফের জেলা পরিষদে প্রার্থী করা অনুচিত। অবশ্য সে আপত্তি ধোপে টেকেনি!

প্রাক্তন বিধায়কেরা পুনর্বাসন পাচ্ছেন জেলা পরিষদে। তবে তার পিছনেও থাকছে অঙ্ক। বিধানসভা ভোটে হারার পর থেকে প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর দলে পুরোপুরি কোণঠাসা ছিলেন।সম্প্রতি তাঁকে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাতেও অবশ্য ঘাটালে দলের দ্বন্দ্ব কাটছিল না। পঞ্চায়েত ভোটে শঙ্কর অনুগামীদের ভূমিকা নিয়ে দলের অন্দরে আলোচনাও চলছিল। এই আবহে শঙ্করকে টিকিট দিয়ে দলের সংগঠনের অস্থিরতা পরিস্থিতি দাঁড়ি টানল বলে খবর। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই চুপচাপ বসে ছিলেন চন্দ্রকোনার প্রাক্তন বিধায়ক ছায়া দোলই। সরাসরি দলের সঙ্গে না থাকলেও দলের বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি তাঁকে। ডেবরা থেকে প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীর জিতলেও রাধাকান্ত ও সেলিমার সঙ্গে তাঁর দূরত্ব ছিল। ইদানীং রাধাকান্তর সঙ্গে হুমায়ুনের সম্পর্ক ভাল হয়। সেলিমার বিষয়টি শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে এসেছে।

জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকায় কিছু ‘নতুন মুখ’ এসেছে। কয়েকটি ‘পুরনো মুখ’ আর টিকিট পাচ্ছে না। শৈবাল গিরি, জারিনা ইয়াসমিন, কণিকা মান্ডিরা টিকিট পাচ্ছেন না। জেলা পরিষদে ফের প্রার্থী হচ্ছেন অঞ্জনা মাহাতো। অঞ্জনা মন্ত্রী তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতোর স্ত্রী। গড়বেতা- ৩ এর একটি আসনে প্রার্থী হচ্ছেন তিনি। জেলা পরিষদের টিকিট পাননি নেপাল সিংহ। নেপাল জেলার ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, তিনি শালবনিতে পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী হচ্ছেন। জিতলে সমিতির সভাপতি হতে পারেন। নেপালের ছেলে সন্দীপ সিংহ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি যুব তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি। সন্দীপের কাছে জেলা পরিষদের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব না কি ছিল। কিন্তু তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পরিবারের একজনই প্রার্থী হতে পারেন, গোড়ায় দলীয়স্তরে এমনই আলোচনা হয়েছিল। পরবর্তীতে দলের প্রার্থী তালিকায় বিধায়ক, বিধায়কের স্ত্রী প্রমুখ রয়েছেন দেখে সন্দীপের অনুগামী বলে পরিচিতরা বিস্মিত। ডেবরার জেলা পরিষদের সদস্য কণিকা মান্ডি খাদ্য কর্মাধ্যক্ষও। প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়েছেন তিনি। তবে এ দিন নিজেই মনোনয়ন জমা দিয়ে কণিকা বলেন, "এলাকার মানুষের দাবি মেনে আমি প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছি। দল প্রতীক দিলে ভাল। না হলে নির্দল হিসাবেই এগিয়ে যাব।’’

কেশপুরের একটি জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন মহম্মদ রফিক। ’৯৮- ২০০০ সালে কেশপুরে তৃণমূলের ‘রবিনহুড’ ছিলেন রফিক। শালবনিতে দলের জনসংযোগ যাত্রার মাঝে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন রফিক। ডেবারচকে নবজোয়ারের কর্মসূচিতে সেলিমাকে দেখা যায়নি। ডেবরা কলেজের সামনে অভিষেকের সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করার চেষ্টা করেন সেলিমা। তাঁকে দেখে হাতও নেড়েছিলেন অভিষেক।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

WB panchayat Election 2023 midnapore TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy