Advertisement
E-Paper

খালে জমছে আবর্জনা, সচেতনতা শিকেয়

মাত্র দেড় বছর আগে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কার করা হয়েছিল সেচ দফতরের এই নিকাশি খাল। আর সেই খাল সংস্কারের পর নিকাশির বদলে হয়ে গিয়েছে আবর্জনা ও কচুরিপানার আস্তাকুড়। পলিথিন, প্লাস্টিক ব্যাগ, থার্মোকলের থালা, মাছ-মাংসের বর্জ্য কী নেই সেখানে? কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেচেদা বাজারের মাঝ দিয়ে যাওয়া বাঁপুর খালের এমন অবস্থায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৬ ০২:৩৬
জঞ্জালে ভরেছে খাল। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

জঞ্জালে ভরেছে খাল। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

মাত্র দেড় বছর আগে প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা খরচ করে সংস্কার করা হয়েছিল সেচ দফতরের এই নিকাশি খাল। আর সেই খাল সংস্কারের পর নিকাশির বদলে হয়ে গিয়েছে আবর্জনা ও কচুরিপানার আস্তাকুড়। পলিথিন, প্লাস্টিক ব্যাগ, থার্মোকলের থালা, মাছ-মাংসের বর্জ্য কী নেই সেখানে? কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন মেচেদা বাজারের মাঝ দিয়ে যাওয়া বাঁপুর খালের এমন অবস্থায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা।

আজ, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জেলা জুড়ে নানা কর্মসূচি রয়েছে জেলা প্রশাসনের। কিন্তু জেলার অন্যতম জনবহুল ও ব্যস্ত মেচেদা বাজারের কাছে নিকাশি খালের এমন হাল, প্রশাসনিক উদাসীনতা ও পরিবেশ নিয়ে অবহেলার নমুনা বলেই এলাকার একাংশ বাসিন্দাদের অভিযোগ।

সেচ দফতর ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, কোলাঘাটের কাছে রূপনারায়ণ নদীর সঙ্গে যুক্ত প্রায় প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বাঁপুর খাল মেচেদা বাজার এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়েছে। ফলে মেচেদা বাজার এলাকা-সহ শান্তিপুর-১, ২ গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার জল বেরোয় এই খাল দিয়েই। এছাড়া খালের পাশে থাকা কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলও পড়ে এখানে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ১৯৮৪ সালে কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র চালুর সময়ই মেচেদা পুরাতন বাজার ও বাসস্ট্যান্ড এলাকার নতুন বাজার জমজমাট হয়ে ওঠে। সে সময় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা বাঁপুর খালের সংস্কার করে পাকা করা হয়েছিল। পরে অবশ্য খালের নিয়মিত সংস্কার না হওয়ায় খাল মজে গিয়ে নিকাশি ব্যবস্থা অকেজো হয়ে যায়। প্রতি বছর বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টি হলে ওই খাল দিয়ে জল বেরোতে না পারায় এলাকা জলে ডুবে যায়।

জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে বাঁপুর খাল সংস্কারের জন্য হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ থেকে বরাদ্দ অর্থে ৭২ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে। কিন্তু তারপর যে কে সেই। ভ্যাটের বদলে জঞ্জাল পড়েছে খালে। মনই অবস্থা যে খালের জল দেখা যাচ্ছে না। পচা দুর্গন্ধ গোটা এলাকায়। খালের পাশের দোকানদার বলাই হাজরার কথায়, ‘‘খাল সংস্কার করা হয়েছিল তো! কিন্তু এখন তো দুর্গন্ধে থাকাই দায় হয়ে উঠেছে।’’ স্থানীয় চিকিৎসক মানস মাইতির বক্তব্য, ‘‘খালে আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছাড়াও অস্বাস্থ্যকর অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে খালের এইসব আবর্জনা সরানোর ব্যবস্থা না নিলে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতি হবে।’’ জেনে শুনে এলাকার বাসিন্দারা তাহলে কেন জঞ্জাল ফেলছেন ওই খালে? স্থানীয়দের উত্তর, ‘‘দোকান-বাড়ির জঞ্জাল ফেলার জন্য এলাকায় যথেষ্ট সংখ্যক ভ্যাট নেই তাই বাধ্য হয়ে অনেকে খালে এইসব আবর্জনা ফেলছেন। অনেকে পরিশ্রম এড়াতে কাছাকাছি এই খালে জঞ্জাল ফেলে দিচ্ছেন। পরিবেশের বিষয়ে সচেতনতার অভাবও রয়েছে।’’

স্থানীয় পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ কমিটির সদস্য নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘মেচেদা বাজার ও বসতি এলাকার জঞ্জাল ফেলা ও তার অপসারণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কাছে দাবি জানানো হয়েছে।’’ সমস্যার কথা স্বীকার করে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বামদেব গুছাইতের কথায়, ‘‘বাঁপুরখালে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ করতে এলাকায় কিছু ভ্যাট তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকেই ওই খালে ময়লা ফেলেন। এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়াও মেচেদা সংলগ্ন এলাকায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’

Canal Awareness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy