ফের মৃত্যু হল দু’টি হাতির। কয়েকদিন আগেই গোয়ালতোড়ের টেঙাশোলে মারা গিয়েছে একটি হাতি। দিন কয়েকের ব্যবধানে তিনটি হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন বন দফতর। দফতরের ডিএফও (রূপনারায়ণ) অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “হাতি মৃত্যুর ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। গতবার খাবারজনিত সমস্যার কারণে হাতিটি মারা গিয়েছিল। এবার একটি হাতি সাপের ছোবলে আর একটি হাতি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে।”
বন দফতর সূত্রে খবর, সোমবার রাতে দলমার প্রায় ৭০ টি হাতির পাল স্থানীয় গড়বেতা জঙ্গল থেকে হুমগড় রেঞ্জে ঢুকে পড়ে। ওই পালের মধ্যেই ছিল নয়-দশ বছরের দু’টি পুরুষ হাতি। একটি হাতি স্থানীয় টেঙাশোল গ্রাম সংলগ্ন পাথরমাড়ি জঙ্গলে যাওয়ার সময় সাপের ছোবলে মারা যায়। আর অন্যটি মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় আশনাশুলি গ্রামের একটি ধান জমিতে মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। খবর পেয়ে যান দফতরের ডিএফও-সহ অনান্য আধিকারিকরা।
দফতর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে দু’টি হাতিরই মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। ময়না-তদন্তের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়।তবে রাসয়নিক সার এবং কীটনাশক ওষুধ মিশ্রিত ফসল খাওয়ার পরই হাতিগুলি অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। এখন চষিরা সব জমিতেই সার এবং ওষুধ স্প্রে করছেন। জঙ্গলেও খাবার নেই। সঙ্গে সাপের কামড়ে হাতি মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে দফতরের আধিকারিকদের। কারণ, সাপের কামড়ে হাতি মৃত্যু কমই হয়। অর্ণব সেনগুপ্তর কথায়, ‘‘হাতির পালকে দলমায় ফেরত পাঠানো নিয়ে দু’একদিনের মধ্যেই একটি বৈঠক হবে। কারণ, এ বার হাতি মৃত্যু এবং ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দুই বাড়ছে।”
বন দফতর সূত্রের খবর, গত সোমবার পর্যন্ত জেলার দু’টি বিভাগের প্রায় এক হাজার হেক্টরের বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ সব্জির খেত। যদিও বেসরকারি হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। দফতরের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্তও বলেন, “প্রতিদিনই ফসলের ক্ষতির খবর আসছে। কিছু এলাকায় ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। পুজোর মধ্যেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে।”