জঙ্গল ছেড়ে হাতি বেরোলেই বিপত্তি! বাড়িঘর, খেতের ফসল সব কিছুর দফারফা। গ্রামবাসীর তাড়ায় দল ছেড়ে হাতি ছোটে এ দিক ও দিক। তখন বিপদ আরও বাড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে ক্ষতির বহর। হাতির গতিবিধির উপর নজরদারি বাড়াতে আরও ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করবে বন দফতর।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। এ বার ওয়াচ টাওয়ারের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। জায়গা চূড়ান্ত করে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” বন দফতরের এক সূত্রে খবর, চাঁদড়া ও পিঁড়াকাটা রেঞ্জে নতুন টাওয়ার তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “ওয়াচ টাওয়ার তৈরির ক্ষেত্রে জায়গা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এমন এলাকায় টাওয়ার করতে হয় যেখান থেকে আশপাশের অনেকখানি এলাকার উপর নজর রাখা সম্ভব হবে।”
বেশ কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে হাতি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। সম্প্রতি চাঁদড়া, ঝরিয়া, শুকনাখালি, পিঁড়াকাটা, জয়নারায়ণপুর, ভীমশোল, পাথরি, শ্রীকৃষ্ণপুর, আমজোড়, লালগড়, আড়াবাড়ি, বুড়িশোল, গোদাপিয়াশাল এলাকায় দাপিয়ে বেড়িয়েছে হাতি। কোনও দলে ৩০- ৪০টি হাতি রয়েছে। কোনও দলে আরও বেশি।
গ্রামবাসীর একাংশের অভিযোগ, কবে কোন এলাকায় হাতি ঢুকতে পারে, তার আগাম খবর বন দফতরের কর্মীরা দেন না। ফলে, সতর্ক হওয়ার সুযোগ থাকে না। বন দফতরের এক কর্মী অবশ্য বলেন, “হাতির দলের গতিবিধি দেখে কিছু বোঝা গেলে তা গ্রামবাসীদের জানানো হয়। সকলকে সতর্কও করা হয়।” ওই কর্মীর কথায়, “যে পথ ধরে এগোনোর কথা, অনেক সময় হাতি সেই পথ ধরে এগোয় না। এ দিক- সে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। খাবারের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তখন সমস্যা হয়।”
বন দফতরের এক সূত্রে খবর, হাতির দলের গতিবিধির উপর নজর রাখতে জেলায় কয়েকটি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। যেমন, দফতরের মেদিনীপুর বিভাগের এলাকায় ৪টি, খড়্গপুর বিভাগের এলাকায় ২টি, রূপনারায়ণ বিভাগের এলাকায় ২টি ওয়াচ টাওয়ার রয়েছে। পরিস্থিতি দেখে এ বার এই টাওয়ারের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
দফতরের এক সূত্রে খবর, দলমার যে দল এখানে আসে, তাতে ১৩৫- ১৪০টি হাতি থাকে। এই সময়ের মধ্যে রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যাও বেড়েছে। এখন রেসিডেন্সিয়াল হাতির সংখ্যা প্রায় ৫০টি। এলাকায় থেকে হাতিগুলি মাঝেমধ্যেই লোকালয়ে হানা দেয়। হাতির হানায় গবাদি পশুর মৃত্যু, ঘরবাড়ির ও শষ্যের ক্ষতি নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা চিন্তারই। বন দফতরের এক কর্তার মন্তব্য, “হাতির তাণ্ডব মোকাবিলা করার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy