Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

অবরোধে নেমে মিলল জল

চন্দ্রকোনা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে এই গ্রামে প্রায় ৭০০ মানুষের বাস। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় দু’টি নলকূপই খারাপ। সেগুলি থেকে জল ওঠে না। গ্রামে নেই কোনও কুয়োও।

ক্ষোভ: বালতি, কলসি নিয়ে বিক্ষোভ রঘুনাথগ়ড়ে। নিজস্ব চিত্র

ক্ষোভ: বালতি, কলসি নিয়ে বিক্ষোভ রঘুনাথগ়ড়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০২
Share: Save:

মেদিনীপুরের বুকে যেন এক টুকরো মরুভূমি! তেষ্টা মেটানোর জলটুকুও সংগ্রহ করতে কোনও দিন যেতে হয় এক কিলোমিটার, কোনও দিন আবার দু’কিলোমিটার। আর পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, প্রত্যন্ত গ্রামে একটু-আধটু জলের সমস্যা থাকেই। মঙ্গলবার বিক্ষোভ দেখালেন চন্দ্রকোনার রঘুনাথগড় গ্রামের বাসিন্দারা।

চন্দ্রকোনা শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে এই গ্রামে প্রায় ৭০০ মানুষের বাস। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় দু’টি নলকূপই খারাপ। সেগুলি থেকে জল ওঠে না। গ্রামে নেই কোনও কুয়োও। গত গ্রীষ্মেই গ্রামে ‘সজলধারা’র যন্ত্রটি অকেজো হয়ে পড়ে। ফলে পানীয় জলের জন্য তাঁদের যেতে হয় সীতানগর মাঠের শ্যালো টিউবওয়েল পর্যন্ত। চন্দ্রকোনা পুরসভার নয়াগঞ্জ এলাকা থেকেও জল নিয়ে আসেন অনেকে। স্থানীয় অঞ্জু বিবি, আসমিরা বেগমরা জানান, পুকুরের ঘোলা জলেই সব কাজ সারতে হয়। আর পানীয় জলের জন্য যেতে হয় অনেক দূর। বিষয়টির দ্রুত সমাধান চান তাঁরা। গত আড়াই বছর ধরে রঘুনাথগড় গ্রামের পানীয় জলের সমস্যার কথা জানে প্রশাসন। অভিযোগ, তার পরেও ‘সজলধারা’ প্রকল্পে সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগী হয়নি তারা। বিডিও-কে লিখিত ভাবে জানিয়েও লাভ হয়নি। নলকূপ সারাতে ব্যবস্থা নেয়নি বসনছড়া পঞ্চায়েতও। পানীয় জলের সমস্যার কথা মেনেও নিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান পরিতোষ কোলে।

এ সব কারণেই মঙ্গলবার হাঁড়ি-কলসি নিয়ে চন্দ্রকোনা-পলাশচাবড়ি সড়ক অবরোধ করলেন ভুক্তভোগীরা। সেখানে সামিল হন গ্রামের মহিলা ও শিশুরাও। প্রায় ঘণ্টাতিনেক চলে বিক্ষোভ। রাস্তা বন্ধ থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় চন্দ্রকোনা থানার পুলিশ। তাঁরা অবরোধ তুলে নেওয়ার আর্জি জানালে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ আরও বাড়ে। তার পরে সেখানে পৌঁছন চন্দ্রকোনা-২ বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ি। তিন দিনের মধ্যে গ্রামে পানীয় জলের স্থায়ী সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। গ্রামে পাঠানো হয় জলের ট্যাঙ্ক। এর পরেই অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দা। স্থানীয় বাবুলাল রহমানের কথায়, “দীর্ঘ দিন ধরেই সমস্যাটিতে গুরুত্বই দেননি কেউ। বিক্ষোভের পরই জলের ট্যাঙ্ক ঢুকল গ্রামে।” শাশ্বতবাবু বলেন, “এই সমস্যার ব্যাপারে এত দিন কেউ জানায়নি। বুধবার থেকেই গ্রামে পাম্প বসানোর কাজ শুরু হবে।” পাশাপাশি, ‘সজলধারা’র যন্ত্র সংস্কার করা হবে বলেও জানান তিনি। গ্রামে একাধিক ‘ট্যাপ’ বসানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি জানান, এমন পরিস্থিতি কেন তৈরি হল, সে ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE