Advertisement
০৬ মে ২০২৪

কচুরিপানায় ভাঙল সেতু, বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা

জল তেমন বাড়েনি, তবু ভেসে আসা কচুরিপানার চাপে ভেঙে পড়ল ঝুমি নদীর সাঁকো। গত কয়েকদিনে একাধিক সাঁকো ভেঙেছে। শনিবার ভোরে মনসুকার রানাঘাটে বাঁশ ও কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি বড় সাঁকোটিও কচুরিপানার দাপটে ভেসে যায়।

ভেঙে গিয়েছে ঝুমি নদীর বাঁধ। নিজস্ব চিত্র।

ভেঙে গিয়েছে ঝুমি নদীর বাঁধ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০১:২৫
Share: Save:

জল তেমন বাড়েনি, তবু ভেসে আসা কচুরিপানার চাপে ভেঙে পড়ল ঝুমি নদীর সাঁকো। গত কয়েকদিনে একাধিক সাঁকো ভেঙেছে। শনিবার ভোরে মনসুকার রানাঘাটে বাঁশ ও কাঠের পাটাতন দিয়ে তৈরি বড় সাঁকোটিও কচুরিপানার দাপটে ভেসে যায়। ওই সাঁকোটি দিয়ে ছোট গাড়িও যাতায়াত করত। পশ্চিম মেদিনীপুর ও হুগলির বহু গ্রামের বাসিন্দারা এই সাঁকোটির উপর নির্ভরশীল। ফলে বিপদে পড়েছেন তাঁরা।

ঘাটালের বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিত বলেন, “কচুরিপানার দাপটে ঝুমি নদীর উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি সাঁকোগুলি ভেঙে গিয়েছে। তাই এখন নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও নৌকা বাড়ানো হবে।” কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। অস্থায়ী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে মনসুকাতে পারাপারের জন্য তিনটি নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নৌকাতে ভিড় উপছে পড়ছে। যে কোনও মুহূর্তে বিপযর্য়ের আশঙ্কা রয়েছে।

দ্বারকেশ্বরে একটি শাখা ঝুমি। হুগলির খানাকুল থেকে ভাগ হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা মনসুকা হয়ে ঝুমি রূপনারায়ণে গিয়ে মিশেছে। সেচ দফতর সূত্রের খবর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে দ্বারকেশ্বরের জল বেড়েছে। জল বেড়েছে ঝুমিতেও। জল বাড়লেই নদী সংলগ্ন বিভিন্ন পুকুর ও খাল-বিল থেকে কচুরিপানা নদীতে পড়ে।

ব্লক ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শুক্রবার সকাল থেকেই ঝুমি নদীতে কচুরিপানা ভাসতে দেখা গিয়েছে। মনসুকা সংলগ্ন কাছারিঘাট গ্রামের একটি সাঁকোতে প্রথমে আটকে যায় পানাগুলি। ওই রাতেই গঙ্গাপ্রসাদ, বেরারঘাট, কাছারীঘাটের বাঁশের সাঁকোগুলি ভেঙে যায়। শনিবার ভোরে মনসুকার রানাঘাটের বড় সাঁকোটিও ভাঙে।

মনসুকার সেতুটি দেখভাল করে ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতি। এ দিন সকালে সেতু ভাঙার খবর পেয়েই থেকে তড়িঘড়ি করে নৌকার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু তিনটি নৌকা ভিড় সামাল দিতে পারেনি। ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দিলীপ মাঝি বলেন, “যে হেতু মনসুকা-সহ আরও পাঁচটি সাঁকো ভেঙে গিয়েছে, সেখানেও নৌকার ব্যবস্থা করতে হয়েছে। মনসুকাতে ভিড় বেশি হয়। তাই ওখানে আরও কিছু নৌকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” বিডিও সঞ্জয় পণ্ডিতের বক্তব্য, “বর্ষায় সাঁকোগুলি নতুন করে তৈরি করা যাবে না। আপাতত নৌকাই ভরসা। তবে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন, একটি নৌকায় বেশি যাত্রী তোলা যাবে না।”

দীর্ঘ প্রায় তিন দশকের ধরে মনসুকার ওই সেতুটি পাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন বাসিন্দারা। সম্প্রতি আনন্দবাজারে সে খবর প্রকাশিতও হয়। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছিলেন, বর্ষা কাটলেই সেচ দফতরের পরিদর্শক দল পাঠানো হবে। কিন্তু তার আগেই এই বিপত্তি। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, “আর বাঁশের সাঁকো তৈরি করতে দেওয়া হবে না। বর্ষা কাটলে স্থায়ী সেতু তৈরি করে দিতে হবে প্রশাসনকে।” ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলও তাতে সায় দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Water hyacinth foot-bridge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE