Advertisement
E-Paper

বিনামূল্যের রেশন দ্রব্যেও কালোবাজারি!

লকডাউনের সময়ে গরীবদের যাদেক অসুবিধা না হয়, সে জন্য রেশনে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছে সরকার।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২০ ০০:৪২
Cap: তমলুকের জানুবসান গ্রামে বাসিন্দাদের হাতে চাল তুলে দিচ্ছেন পঞ্চায়েত প্রধান শরৎ মেট্যা ও পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

Cap: তমলুকের জানুবসান গ্রামে বাসিন্দাদের হাতে চাল তুলে দিচ্ছেন পঞ্চায়েত প্রধান শরৎ মেট্যা ও পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

দৃশ্য-১: রেশন ডিলারের কাছে সরকারের নির্ধারিত চাল এবং গম বিনামূল্য সংগ্রহ করছিলেন এক মহিলা। ওই খাদ্য সামগ্রী পাওয়ার পরে তা দোকানেই ডিলারের সহযোগীকে চড়া দামে বিক্রি করে দিলেন মহিলা।

দৃশ্য-২: রেশন দোকানের ঠিক উল্টো দিকেই একটি বস্তা সেলাইয়ের দোকান। রেশনের চাল নিয়ে সোজা এক যুবক চলে গেলেন ওই বস্তার দোকানে। পলিথিনের ঘেরাটোপ অতিক্রম করে সেখানে একজনের হাতে ওই চালের ব্যাগ তুলে দিলেন যুবকটি। বিনিময়ে টাকাও পেলেন তিনি।

প্রথম ঘটনাটি কাঁথি-৩ ব্লকের কুসুমপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার। দ্বিতীয়টি কাঁথি শহরের আঠিলাগড়ি এলাকার।

লকডাউনের সময়ে গরীবদের যাদেক অসুবিধা না হয়, সে জন্য রেশনে বিনামূল্যে খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছে সরকার। সেই খাদ্য একাংশ গ্রাহকের ডিলারের কাছে বা কোনও ফড়ের চড়া দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বিনা পয়সায় রেশনের সামগ্রী নিয়ে এভাবে কালোবাজারি চললেও এলাকায় প্রশাসনিক নজরদারি চোখে দেখা যায়নি।

রেশন গ্রাহকদের একাংশের দাবি, কাঁথি মহাকুমা জুড়ে প্রায় সর্বত্র বিনা পয়সায় পাওয়া রেশন সামগ্রী নিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি মেনে নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাঁথি শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘বরাবর বাড়িতে একটু ভাল মানের চাল খাই। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু বিনা পয়সায় রেশনের চাল দিচ্ছে, সেই চাল কি ছেড়ে দেওয়া যায়! তাই রেশন দোকান থেকে নিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছি। কাঁথি শহর এলাকার এক রেশন ডিলারের কথায়, ‘‘বিনা পয়সায় রেশন সামগ্রী বিলির সময় ভেবেছিলাম প্রশাসনের লোকজন না হয়তো নজরদারি চালাবে। কিন্তু একবারের জন্য ও প্রশাসনের লোকজন এল না। তাই একাংশ ডিলার ও গ্রাহক এটা করছেন।’’

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কারা কত টাকা মূল্য দিয়ে রেশনের সামগ্রী পাবেন তা অনেক আগেই সমীক্ষা হয়েছিল। ওই সমীক্ষাতে ভুল থাকার জন্য কিছু মধ্যবিত্ত মানুষ দু টাকা মূল্যের রেশন সামগ্রী পাওয়ার সুবিধা ভোগ করছেন। মূলত তারাই এ ধরনের কাজ করছেন।’’ নজরদারির অভাব প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সিরাজ খান বলেন, ‘‘আমরা সারপ্রাইজ ভিজিট চালিয়ে অনিয়ম আটকানোর চেষ্টা করব।’’

অন্য দিকে, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বল্লুক-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে আসার পরেই সমস্ত রেশন দোকান বন্ধ করা হয়েছে গত ১ এপ্রিল থেকে। এতে জানুবসান গ্রামের প্রায় ৮০টি তফসিলি পরিবার খাবারের সমস্যায় পড়েন বলে অভিযোগ। স্থানীয় এক বাসিন্দা এই সমস্যার কথা জানান পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। মন্ত্রীর নির্দেশে এ দিন ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রতিটি পরিবারকে ৫ কিলোগ্রাম করে চাল বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে দেন পঞ্চায়েত প্রধান শরৎ মেট্যা ও পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণ।

West Bengal Lockdown Scam Ration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy