Advertisement
০৪ জুন ২০২৪
মেদিনীপুর মেডিক্যাল

আয়াদের নিয়ে কী করণীয়, জানতে চাইলেন কর্তৃপক্ষ

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত পাচারে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে জেল হেফাজতে তোলার নির্দেশ দিল আদালত। ধৃতদের বুধবার মেদিনীপুরের সিজেএম আদালতের বিচারক প্রসূন ঘোষ এই নির্দেশ দেন।

আদালতে ধৃত আয়া।

আদালতে ধৃত আয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:০৪
Share: Save:

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত পাচারে অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে জেল হেফাজতে তোলার নির্দেশ দিল আদালত। ধৃতদের বুধবার মেদিনীপুরের সিজেএম আদালতের বিচারক প্রসূন ঘোষ এই নির্দেশ দেন। মা ও শিশুকে হোমে পাঠানো হয়েছে।

শিশু পাচারের অভিযোগ ওঠার পর আয়াদের নিয়ে কী করবেন সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মতামত জানতে চেয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার তন্ময় পাঁজা বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছি, আয়াদের নিয়ে কী করণীয়। হাসপাতাল আয়াদের নিয়োগ করেনি। রোগীরা তাঁদের প্রয়োজনে আয়া রাখেন। এমন ঘটনা ঘটায় আয়াদের আর কাজ করতে দেওয়া হবে কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।”

গত শনিবার মেদিনীপুর মেডিক্যালে বছর পনেরোর কিশোরী এক কন্যা সন্তান প্রসব করে। ঝাড়খণ্ডের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা ওই কিশোরী বিবাহিত নন। হাসপাতালের এক আয়া শিবানী রুইদাস ওই কিশোরীর বাবাকে পরামর্শ দেন, বাচ্চা বিক্রি করতে চাইলে তিনি-ই ব্যবস্থা করে দেবেন। গোপন সূত্রে বাচ্চা বিক্রির চেষ্টা চলছে খবর পেয়ে পুলিশ ওই আয়ার কাছে একজনকে পাঠায়। দরকষাকষিতে বাচ্চার দাম পাঁচ হাজার টাকা ঠিক হয়। মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের প্রবেশপথের বাইরে গাড়ি নিয়ে হাজির ছিলেন পুলিশ আধিকারিক। ওই কিশোরীর মা বাচ্চাটি তুলে দিতে এলেই তাঁকে হাতেনাতে ধরা হয়। পরে ওই কিশোরীর বাবা উত্তম দণ্ডপাট, মা কবিতা দণ্ডপাট ও আয়া শিবানীকেও গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনার পরে বুধবারও হাসপাতালে কোনও বিশেষ সতর্কতা চোখে পড়েনি। ঘটনায় ধৃত আয়া শিবানী মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর সরণীর বাসিন্দা। এলাকার বাসিন্দা রেণু মুখী, কৌশল্যা মুখীদের কথায়, “যে নিজের সৎছেলেকে নিজের ছেলের মতো মানুষ করে, পাড়ার আপদে-বিপদে সাহায্য করে, সে এমন কাজ করতে পারে বিশ্বাসই হচ্ছে না।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গির্জাবস্তির বাসিন্দা এক আয়াও বলেন, “আগে নানা সময়ে আমাদের উপর ঝড় বয়ে গিয়েছে। অনেক কষ্টে কাজ ফিরে পেয়েছি। ফের নতুন করে না বিপদে পড়তে হয়। আমাদের উপর মানুষের সন্দেহ বাড়লে কী কেউ কাজ দেবে।” আয়া রেখে উপায় নেই বলেও জানাচ্ছেন একাংশ রোগীর আত্মীয়। এক রোগীর আত্মীয়ের কথায়, ‘‘আয়া না রেখেই উপায় কী। নার্সদের বারবার ডেকেও সাড়া মেলে না। মেয়েদের ওয়ার্ডে আবার ছেলেদেরও থাকতে দেওয়া হয় না। বাচ্চাদের দেখভাল থেকে ভিতরের খোঁজখবর নেওয়ার জন্য যে আয়ারাই ভরসা।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এর পিছনে কোনও চক্র জড়িত রয়েছে কি না জানার চেষ্টা হবে। ধৃত আয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের পরেই মামলাটি সিআইডি-র হাতে দেওয়া হবে কি না তাও ঠিক করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

3 accused maids child trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE