তৃণমূল পরিচালিত তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করল সমিতির তৃণমূল সদস্যরা। অনাস্থা প্রস্তাবের সভায় সহ-সভাপতি বিভাস কর-সহ তৃণমূলের চার সদস্য অনুপস্থিত থাকলেও ওই অনাস্থা প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন বামফ্রন্টের চার সদস্য।
এই ঘটনায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর চাপানউতোর অব্যাহত রয়েছে। শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিভাস করের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তনুশ্রী জানা-সহ ১৬ জন সদস্য। দলেরই সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে আনা ওই প্রস্তাব ঘিরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ প্রকাশ্যে আসে। এই প্রস্তাব নিয়ে বুধবার পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে সভা ডেকেছিলেন তমলুকের মহকুমাশাসক। সভা ঘিরে গোলমালের আশঙ্কায় পঞ্চায়েত সমিতির অফিস চত্বরে পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। সভায় প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই ব্লকের বিডিও সৌগত মাইতি।
৩০ সদস্য বিশিষ্ট ওই পঞ্চায়েত সমিতির এ দিনের সভায় সভাপতি তনুশ্রী জানা-সহ ১৩ জন তৃণমূল সদস্য ও তিন সিপিএম সদস্য এবং আরএসপি’র এক সদস্য হাজির হন। অনুপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি বিভাস কর সহ চার তৃণমূল সদস্য, সিপিএমের আট সদস্য এবং এসইউসি’র এক সদস্য। সভা পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সদস্য উপস্থিত থাকায় অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর ভোটাভুটি হয়। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে সভায় উপস্থিত ১৭ জন সদস্যই মত দেন। ফলে সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।
সমিতির সহ-সভাপতি বিভাস করের বক্তব্য, “আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা নিয়ে দলের ব্লক স্তরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। তা সত্ত্বেও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিল।” তিনি বলেন, “এতে দলের ক্ষতি হল।” তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দিবাকর জানা অবশ্য বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির কাজে অসহযোগিতা ও দলের সাংগঠনিক কাজে সাহায্য না করার জন্যই সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। দলের সিদ্ধান্ত মেনেই অনাস্থা প্রস্তাব করা হয়েছে।”
এদিকে তৃণমূলের সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে বামফ্রন্টের একাংশ সদস্য সমর্থন করায় বামেদের অনৈক্যও প্রকাশ্যে এসেছে। সিপিএমের ১১ জন সদস্যের মধ্যে তিনজন এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক প্রশান্ত প্রধান বলেন, “আমরা কোনওভাবেই তৃণমূলকে সমর্থন না করার পক্ষে। এক্ষেত্রে হয়ত স্থানীয় স্তরে সমঝোতা করে আমাদের দলের সদস্যদের একাংশকে তৃণমূল নিয়েছে।” দলের নির্দেশ না মেনে যারা তৃণমূলকে সমর্থন করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সিপিএম জেলা সম্পাদকের জবাব, “রাজ্যের বিভিন্ন স্থানেই আমাদের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, গ্রামপঞ্চায়েত সদস্যদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে তৃণমূল দলে টানছে। প্রশাসনকে অভিযোগ জানানো সত্বেও তাঁদের সদস্য পদ খারিজ করা হচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy