Advertisement
E-Paper

অভিযুক্তেরা কেন পার পায়, সচেতনতায় জোর বিচারকের

বাল্যবিবাহ, শিশু ও নারী পাচার এবং পারিবারিক হিংসা ঠেকানোর আইন রয়েছে। তবুও অভিযুক্তেরা সাজা পায় না কেন? সামাজিক এই ব্যাধি নির্মূল না-হওয়ার কারণটাই বা কী? এর শিকড় সন্ধানে এক সেমিনারে এসে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায় জানালেন, উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তখন আদালতের আর কিছু করার থাকে না। এ সব ক্ষেত্রে ন্যায্য বিচার পেতে হলে সমাজের স্বার্থে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার হাত শক্ত করার আহ্বান জানালেন জেলা বিচারক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০০:০৫
সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

সেমিনারে বক্তব্য রাখছেন জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

বাল্যবিবাহ, শিশু ও নারী পাচার এবং পারিবারিক হিংসা ঠেকানোর আইন রয়েছে। তবুও অভিযুক্তেরা সাজা পায় না কেন? সামাজিক এই ব্যাধি নির্মূল না-হওয়ার কারণটাই বা কী? এর শিকড় সন্ধানে এক সেমিনারে এসে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায় জানালেন, উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের অভাবে অনেক ক্ষেত্রেই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। তখন আদালতের আর কিছু করার থাকে না। এ সব ক্ষেত্রে ন্যায্য বিচার পেতে হলে সমাজের স্বার্থে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার হাত শক্ত করার আহ্বান জানালেন জেলা বিচারক।

শুক্রবার ‘সুচেতনা’ মহিলা সংস্থা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে ঝাড়গ্রামের অরণ্যসুন্দরী মহাসঙ্ঘের সভা ঘরে আয়োজিত ওই আলোচনাসভার মূল বক্তা ছিলেন রাইদেবী। জেলা বিচারকের কথায়, “বাল্যবিবাহ যেমন দণ্ডনীয় অপরাধ। সেই বিয়ের পুরোহিত ও আমন্ত্রিতরাও কিন্তু সমান অপরাধী। আবার যে মেয়েটিকে হয়তো ফঁুসলিয়ে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, তাঁর অভিভাবক ও পরিজনেরা নানা চাপের মুখে অভিযোগ আড়াল করেন। পারিবারিক হিংসার শিকার হয়ে যে মহিলাটি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তিনিই পরে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার আর্জি জানান। আমজনতা সচেতন না হলে পুলিশ-প্রশাসন-আদালতের মিলিত প্রচেষ্টায় এই ব্যাধির শিকড় একেবারে উপড়ে ফেলা সম্ভব নয়।” শ্রোতার আসনে থাকা ঝাড়গ্রাম মহকুমার ৮টি ব্লকের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা, অঙ্গনওয়াড়ি-কর্মী, নির্যাতিতা-সহ কয়েকশো মহিলাদের উদ্দেশ্যে রাইদেবীর বার্তা, “আপনাদের মধ্যেই কেউ মেয়ের মা, কেউ পরিজন-পড়শি। আপনারাই সচেতন করার কাজটা সবচেয়ে ভাল করতে পারবেন।”

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সম্পাদক সুজিতকুমার ঝা, ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব, ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিমাইচাঁদ মাসান্ত, জেলা সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ মাইতি, প্রবীণ আইনজীবী শান্তিকুমার দত্ত, ঝাড়গ্রামের বিডিও অনির্বাণ বসু ।

সুচেতনা-র সম্পাদিকা স্বাতী দত্ত বলেন, “সব ঘটনা প্রকাশ্যে আসে না। নানা ধরনের চাপের মুখে অনেকেই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পান। রাজনৈতিক চাপও থাকে। আমরা খবর পেয়ে চলতি বছরেই চাইল্ড লাইন এবং পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতায় কেবলমাত্র জঙ্গলমহলেই ৩৫টি বাল্যবিবাহ রোধ করেছি। ১৭ জন নিখোঁজ নাবালিকা ও মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে। পারিবারিক হিংসার শিকার ২২ জন মহিলাকে আইনি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই প্রচেষ্টা সিন্ধুতে বিন্দুবত্‌।”

jhargram seminar suchetana
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy