Advertisement
১১ মে ২০২৪

আইনজীবীদের ধর্না, ব্যাহত কাজকর্ম

প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো না গড়েই গড়বেতায় এসিজেএম আদালত চালু করা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে বুধবার আন্দোলনে নামল ‘বার অ্যাসোসিয়েশন মেদিনীপুর’। মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসের সামনে এই ধর্না-কর্মসূচিতে সামিল হন মেদিনীপুরের আইনজীবীরা।

মেদিনীপুর আদালতে আইনজীবীদের ধর্না

মেদিনীপুর আদালতে আইনজীবীদের ধর্না

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০০:৪৫
Share: Save:

প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো না গড়েই গড়বেতায় এসিজেএম আদালত চালু করা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে বুধবার আন্দোলনে নামল ‘বার অ্যাসোসিয়েশন মেদিনীপুর’। মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা বিচারক রাই চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসের সামনে এই ধর্না-কর্মসূচিতে সামিল হন মেদিনীপুরের আইনজীবীরা। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় অনেক বিচারপ্রার্থীকে। বারের এক প্রতিনিধি দল জেলা ও দায়রা বিচারকের সঙ্গে দেখা করে লিখিত দাবিপত্র পেশ করে। ‘বার অ্যাসোসিয়েশন মেদিনীপুর’-এর পক্ষে দেবীদাস মহাপাত্র বলেন, “অন্যায় ভাবে গড়বেতায় এসিজেএম আদালত চালু করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো গড়া হয়নি। ফলে, বিচারপ্রার্থীদের সুবিধের থেকে অসুবিধেই বেশি হচ্ছে।”

এ ভাবে ধর্না-কর্মসূচির ফলে কী আদালতের কাজ ব্যাহত হল না? বারের পক্ষে শান্তিকুমার দত্তের যুক্তি, “এটা কর্মবিরতি নয়। আমরা বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থেই আন্দোলন করছি।”

বার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে খবর, বুধবার জেলা ও দায়রা বিচারকের কাছে সব মিলিয়ে ৫ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। দাবিগুলোর মধ্যে জেলাতে বিভিন্ন ট্রাইবুন্যাল-সার্কিট বেঞ্চ চালু, বিভিন্ন আদালত এলাকার থানাগুলোর পুনর্বিন্যাস করা প্রভৃতি রয়েছে। এখন পশ্চিম মেদিনীপুরে সব মিলিয়ে ৫টি আদালত রয়েছে। জেলার সদরে রয়েছে জেলা আদালত। ঝাড়গ্রাম এবং ঘাটালে রয়েছে মহকুমা আদালত। দাঁতন এবং গড়বেতায় রয়েছে চৌকি কোর্ট। আগামী দিনে খড়্গপুরেও আদালত চালু হওয়ার কথা। এটি হবে মহকুমা আদালত।

গড়বেতার পুরনো এই চৌকি কোর্টটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে ধুঁকছিল। পরিস্থিতি দেখে এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সংস্কারের পর এই চৌকি কোর্টের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়েছে। চলতি মাসের গোড়ায় এই গড়বেতা আদালতেই চালু হয় অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস (এসিজেএম)। গড়বেতার দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্রীময়ী চক্রবর্তীর উপরই এই অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এসিজেএম হিসেবে নতুন নিয়োগ হয়নি। ২০০৩ সাল থেকে গড়বেতা বার অ্যাসোসিয়েশন এসিজেএম আদালত চালুর দাবি জানিয়ে আসছিল। সেই দাবি মেনেই গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট বিজ্ঞপ্তি জারি করে। শুরুতে গড়বেতা ও গোয়ালতোড় থানার মামলা এখানে হচ্ছে। আগামী দিনে আনন্দপুর থানা, কেশপুর এবং চন্দ্রকোনা থানার একাংশ এলাকাও এই আদালতের আওতায় আসার কথা। ফলে, এই সব এলাকার ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্তদের ধরে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে পাঠাতে হবে না পুলিশকে। সাক্ষীদেরও মেদিনীপুরে পাঠাতে হবে না। মামলা চলবে গড়বেতাতেই।

বারের পক্ষে দেবীদাসবাবু বলেন, “গড়বেতা মহকুমা না হওয়া সত্ত্বেও ওখানে এসিজেএম আদালত চালু করা হয়েছে। ওখান থেকে যাঁরা জামিন পাচ্ছেন, তাঁদের মেদিনীপুরে এসে বন্ড দিতে হচ্ছে।” বারের পক্ষে শান্তিবাবু বলেন, “নির্দিষ্ট কয়েকটি দাবির প্রেক্ষিতে আমাদের এই ধর্না-কর্মসূচি। আমরা বিভিন্ন আদালত এলাকার থানাগুলোর পুনর্বিন্যাস করার দাবি জানিয়েছি।” প্রয়োজনীয় সব পরিকাঠামো তৈরি না করে খড়্গপুরেও মহকুমা আদালত চালু করা উচিত নয় বলে দাবি করেছে ‘বার অ্যাসোসিয়েশন মেদিনীপুর’। শান্তিবাবু বলেন, “আমাদের দাবিগুলো লিখিত ভাবেই মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা

বিচারককে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

lawyer strike garbeta segm court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE