আঠারো মাসেও শেষ হল না সেতুর কাজ। নির্ধারিত সময়ের পরেও সেতু তৈরির কাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় দুর্ভোগ অব্যাহত। মহিষাদলের হিজলি টাইডাল ক্যানালের এই সেতু দিয়েই অসংখ্য লোক প্রতিদিন মহকুমা সদর হলদিয়া ও জেলা সদর তমলুক শহরে যাতায়াত করেন। নতুন সেতু না হওয়ায় বর্তমানে অনেক ঘুরপথে হলদিয়া ও তমলুকে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তমলুক থেকে মহিষাদল ও হলদিয়াগামী বাসগুলিকেও নন্দকুমার থেকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক হয়ে ঘুরপথে যাতয়াত করতে হচ্ছে। ফলে সময়ও অনেক বেশি সময় লাগছে।
আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন বাস ব্যবসায়ীরাও। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি বাস ব্যবসায়ীরাও দ্রুত সেতুর কাজ শুরু করার দাবি তুলেছেন। পুর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “গতকালও পূর্ত দফতরের এ বিষয়ে সঙ্গে কথা হয়েছে। বর্তমানে দ্রুত গতিতে সেতুর কাজ চলছে। জানুয়ারি মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করতে বলেছিলাম। তবে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ হয়ে যাবে।” পুর্ত দফতর (সড়ক)-এর তমলুক হাইওয়ে ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার চন্দন পাণিগ্রাহি বলেন, “পুরনো সেতুর কাঠামো, পিলার সরিয়ে নতুন সেতুর কাজ শুরুতে আমাদের মাস ছয়েক সময় লেগেছিল। তার পর থেকে দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে সেতুর কাজ শেষ হয়ে যাবে।”
সেতুর ফলক।
মহিষাদল বাজারে থানার উল্টো দিকে পাঁশকুড়া-দুর্গাচক রাস্তায় হিজলি টাইডাল ক্যানালের সেতুটি দীর্ঘদিন জীর্ণ অবস্থায় ছিল। পূর্ত দফতর প্রায় ৪ কোটি ১৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নতুন করে তৈরি করতে উদ্যোগী হয়। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ সেতুটি নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ম্যাকিনটস বার্ন লিমিটেডকে কাজের বরাত দেওয়া হয়। ঠিক ছিল। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নতুন সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে। মহিষাদলের এই নির্মীয়মাণ সেতুর সামনে দেওয়া সরকারি হোর্ডিংয়েও ৩১ ডিসেম্বর কাজ শেষের দিন হিসেবে উল্লেখ করা ছিল। যদিও নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও সেতুর মাঝের প্লেটের কাজ বাকি। বাকি রয়েছে সেতুর দু’দিকের অ্যাপ্রোচ রোডের কাজও।
ঘুরপথে বাস যাতায়াত করায় সমস্যায় স্থানীয় বাসিন্দারাও। মহিষাদলের হাসপাতাল মোড়ের বাসিন্দা দেবব্রত কুণ্ডু বলেন, “ব্যবসার কাজে আমাকে প্রতিদিন মারিশদার কালিনগরে বাসে করে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় আমাকে ঘুরপথে যেতে হয়। এতে বেশি সময় লাগার পাশাপাশি ভাড়াও বেশি লাগছে।” মহিষাদলের রামবাগের বাসিন্দা গৃহবধু সুচিত্রা সাহু বলেন, “সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় মহিষাদল বাজারের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তেও ঘুরপথে যেতে হচ্ছে।”
—নিজস্ব চিত্র।