হস্টেল থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের দূরত্বে রয়েছে পিংলা ব্লক হাসপাতাল। অথচ আবাসিক এক ছাত্র হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্থানীয় এক হাতুড়ের কাছে। সেখানে অসুস্থ ওই কিশোরের শারীরিক অবস্থার উন্নতি তো হয়ইনি, উল্টে শেষ মুহূর্তে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই ছাত্রকে। কিন্তু বাঁচানো যায়নি পিংলার রামপুরা দেশপ্রাণ বিদ্যাপীঠ আবাসিকের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র বিদ্যুৎ বাস্কে(১৩) নামের ওই কিশোরকে। তবে ওই কিশোর কী কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল, তা নিয়ে ধন্দে চিকিৎসকরাও। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছিল বিদ্যুৎ। প্রথমে বমি ও পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। আবাসিক ওই ছাত্রের বাঁকুড়ার ডাঙরপাড়ার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়। ছুটে আসেন ছাত্রের বাবা সাহেবরাম বাস্কে। এরপরই ওই হস্টেল কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎকে নিয়ে যান স্থানীয় এক হাতুড়ের কাছে। কিন্তু রাতেও সুস্থ হয়নি ওই কিশোর। তাই রবিবার সকালে পিংলার জলচকের একটি নার্সিংহোমে বিদ্যুতকে নিয়ে যান তার বাবা। সেখানেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রবিবার বিকেলে মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বিদ্যুৎকে। সেখানে চিকিৎসকরা অক্সিজেন দিয়ে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। রবিবার সন্ধ্যায় মৃত্যু হয় বিদ্যুতের। স্কুলের হস্টেল সুপার দেবাশিস খাটুয়া বলেন, “বিদ্যুৎ যখন অসুস্থ হয়েছিল তখন শ্বাসকষ্ট আর বমি হচ্ছিল। ওর আগেও শ্বাসকষ্ট ছিল।” তবে মৃতের পিসতুতো দাদা বাবলু হাঁসদার ক্ষোভ, “আমার ভাইয়ের শ্বাসকষ্টের সমস্যা কখনও শুনিনি। হস্টেল কর্তৃপক্ষের আবাসিক ছাত্রদের প্রতি আরও যত্নবান হওয়া উচিত ছিল।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোপাল দত্তের স্বীকারোক্তি, “বিদ্যুতের অসুস্থতা বুঝেই পরিবারে খবর দেওয়া হয়েছিল। সকলের সম্মতিতে তাকে কাছের এক হাতুড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।”
আবার রবিবার রাতেই পেটে ব্যথার উপসর্গ নিয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তি হয় নারায়ণগড়ের অনল সরেন নামে আরও এক নবম শ্রেণির পড়ুয়া। এরপর ব্লকের একটি চিকিৎসক দল ওই স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। ওই দলের নেতৃত্বে থাকা চিকিসক অসীমকুমার দাস বলেন, “সমস্ত পড়ুয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেও অসুস্থতা ধরা পড়েনি। ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় কয়েকজনের সর্দি, কাশির সমস্যা রয়েছে।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “শেষ মুহূর্তে মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসায় বিদ্যুতের মৃত্যুর কারণ বোঝার উপায় ছিল না। তবে হাতুড়ের কাছে না গিয়ে সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে মৃত্যুর কারণ বোঝা যেত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy