Advertisement
E-Paper

কাউন্সেলিংয়ে বাধা, ভর্তি মেধার ভিত্তিতেই

শেষমেষ কাউন্সেলিং হল মেধার ভিত্তিতেই। তবে বিস্তর টালবাহানায় লেগে গেল ছ’ঘণ্টা অতিরিক্ত সময়! পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং ছিল। ভর্তির জন্য আসা পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হওয়া টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সদস্যেরা তাঁদের প্রথমে কাউন্সেলিংয়ে ঢুকতে দেয়নি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৪৯

শেষমেষ কাউন্সেলিং হল মেধার ভিত্তিতেই। তবে বিস্তর টালবাহানায় লেগে গেল ছ’ঘণ্টা অতিরিক্ত সময়!

পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রমে ভর্তির জন্য মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং ছিল। ভর্তির জন্য আসা পড়ুয়াদের অভিযোগ, প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হওয়া টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সদস্যেরা তাঁদের প্রথমে কাউন্সেলিংয়ে ঢুকতে দেয়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে জানিয়েও লাভ হয়নি। কলেজেরই একটি সূত্রের দাবি, পরে বিষয়টি সংবাদমাধ্যম থেকে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নজরে আসায় মেধার ভিত্তিতে স্নাতকোত্তরে পড়ুয়াদের সকলকেই ভর্তি নেওয়া হয়। ততক্ষণে সন্ধে গড়িয়েছে।

কলেজ সূত্রের খবর, এ দিন জনা তিরিশেক পড়ুয়া কাউন্সেলিংয়ের জন্য এসেছিলেন। এঁদের মধ্যে টিএমসিপি-র নজরদারিতে বাছাই করা কয়েক জনই ভিতরে ঢুকতে পেরেছিলেন বলে অভিযোগ। এক ছাত্রের কথায়, “কাউন্সেলিংয়ের জন্য নির্ধারিত ঘরে যেতে গিয়ে দেখি প্রবেশ পথে ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাহারুল আলি খানের নেতৃত্বে টিএমসিপি-র ছেলেরা গেট আগলে দাঁড়িয়ে। ওদের পাশ কাটিয়ে উঠতেই কয়েক জন জোর করে আটকে দেয়।” ভূগোলের ‘ওয়েটিং লিস্টে’ উপরের দিকে নাম থাকা এক ছাত্রের অভিযোগ, “ভর্তির জন্য টাকা চেয়েছিল ছাত্র সংসদের কিছু ছেলে। দিইনি বলে কাউন্সেলিংয়ে ঢুকতে দেওয়া হল না।”

ভিতরে ঢুকতে না পেরে প্রশাসনিক ভবনের বাইরে দুপুর একটা পর্যন্ত কিছু পড়ুয়া ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন। শেষে কলেজ গেটে মোতায়েন থাকা পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই পড়ুয়ারা। পাঁশকুড়া থানাতেও ফোন করেন। পুলিশ জানায়, কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ না জানালে তাদের কিছুই করার নেই। পড়ুয়াদের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষও বিষয়টিকে আমল দেননি। তখনই তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্তক্ষেপে কলেজ কর্তৃপক্ষ মেধার ভিত্তিতে কাউন্সেলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বলে ওই ছাত্ররা জানিয়েছেন।

সাহারুল অবশ্য পড়ুয়াদের ঢুকতে বাধা দেওয়া এবং টাকার বিনিময়ে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, “এ সব দলকে অপদস্থ করার চেষ্টা।” স্থানীয় রাজনীতিতে সাহারুল পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জাকিউরের বিরোধী শিবিরের নেতা হিসাবে পরিচিত রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র আবার এই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি। জাকিউর এ দিনের ঘটনার কিছু জানেন না দাবি করলেও সৌমেনবাবু কিন্তু বলছেন, “ছাত্র সংসদ গায়ের জোরে কাউন্সেলিংয়ে বাধা দিয়েছে বলে শুনেছি। এতে দলের একাংশের মদত আছে।” কলেজের অধ্যক্ষ নন্দন ভট্টাচার্য অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

একই সঙ্গে পরিচালন সমিতির সভাপতি সৌমেনবাবু মানছেন, চার দিক থেকে কানাঘুষোয় তাঁর কাছে ছাত্র সংসদের একাংশের বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ আসছিল। তিনি বলেন, “বিষয়টি নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে কথাও বলি। স্পষ্ট জানিয়ে দিই, মেধার ভিত্তিতেই কাউন্সেলিং করতে হবে।” কাউন্সেলিং নিয়ে কলেজেরই ছাত্র সংসদের তরফে এমন হেনস্থার পরও কোনও মন্তব্য করতে চাননি অধ্যক্ষ নন্দন ভট্টাচার্য। তিনি শুধু বলেন, “কিছু বলব না।” তবে বিস্তর ঝক্কির শেষে কাউন্সেলিং হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন পড়ুয়ারা।

panskura banamali college delay in counselling tamluk
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy