Advertisement
E-Paper

কাজ চেয়ে আইআইটিতে বিক্ষোভ মজদুর মোর্চার

শ্রমিক নিয়োগে সমানাধিকারের দাবিতে এ বার আইআইটি-র মূল গেট আটকে অবস্থানে বসলেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় জনতা মজদুর মোর্চা (বিজেএমএম)-র সদস্যরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর এই অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষক, পড়ুয়া ও কর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২৩
খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

খড়্গপুর আইআইটি চত্বরে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র

শ্রমিক নিয়োগে সমানাধিকারের দাবিতে এ বার আইআইটি-র মূল গেট আটকে অবস্থানে বসলেন বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় জনতা মজদুর মোর্চা (বিজেএমএম)-র সদস্যরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর এই অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে দুর্ভোগে পড়েন শিক্ষক, পড়ুয়া ও কর্মীরা। বিজেএমএম-এর অভিযোগ, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস-সহ নানা রাজনৈতিক দলের শ্রমিক সংগঠন জোট বেঁধে আইআইটিতে তাদের শ্রমিকদের কাজে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। আর তাতে প্রশ্রয় দিচ্ছে প্রশাসন। মহকুমাশাসকের তরফে আজ, বুধবার আলোচনার আশ্বাস পেয়ে রাত পৌনে দশটা নাগাদ অবস্থান তুলে নেওয়া হয়।

আইআইটি চত্বরে বিভিন্ন নির্মাণকাজে এবং হলগুলিতে (হস্টেল) ঠিকাদার সংস্থার অধীনে বহু শ্রমিক কাজ করেন। কাজের দাবিতে বিভিন্ন দলের পক্ষ থেকেই আন্দোলন হয়েছে বিশ্বমানের এই প্রতিষ্ঠানে। ২০১৩ সালের ২০ নভেম্বর তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী আলাদাভাবে শ্রমিক নিয়োগ করতে চাইলে অশান্তি ছড়ায়। এখন বিজেপি ছাড়া অন্য সব রাজনৈতিক দল সম পরিমাণ শ্রমিক নিয়োগ করে। গত লোকসভা ভোটে পরে বিজেপি-র শক্তি বাড়তে শুরু করেছে। তারপর থেকেই শ্রমিক নিয়োগের দাবিতে সরব হয়েছে দলের শ্রমিক সংগঠন। বিজেএমএম-এর রাজ্য সভাপতি শঙ্কর ঘোষ বলেন, “কেন্দ্রের নিয়ম অনুযায়ী ঠিকা শ্রমিকদের দৈনিক সাড়ে চারশো টাকা মজুরি পাওয়ার কথা। অথচ তাদের দেওয়া হয় ২৮০-৩২৫ টাকা। বাকি টাকা ঠিকাদার এবং প্রশাসকরা লুটে নেন। তার ভাগ যায় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের পকেটে। আমরা ঘুঘুর বাসা ভাঙতে চাই বলেই আমাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না।” কিন্তু আইআইটি-র গেট আটকে সারা দিন আন্দোলন কেন? শঙ্করবাবুর জবাব, “কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই এটা করা হয়েছে।”

খড়্গপুর আইআইটিতে জাকির হুসেন হলের পিছনে একটি হলের নির্মাণকাজ চলছে। সেই কাজে বিজেপির কিছু শ্রমিককে নিয়েছিল ঠিকাদার সংস্থা। বিজেএমএম-এর অভিযোগ, তৃণমূল ও অন্য রাজনৈতিক দলের বাধায় ওই শ্রমিকদের বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাজে ফেরানোর দাবিতেই শুরু হয়েছে আন্দোলন। আইআইটি-র কোনও সেক্টরেই বিজেপির রেজিস্ট্রেশন নেই বলে অভিযোগ আইএনটিটিইউসি-র। যদিও বিজেএমএমের যুক্তি, কোথাও কাজে ৭ জন শ্রমিক নিয়োগের পরেই রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করা যায়। সেই আশঙ্কাতেই আইএনটিটিইউসি কাজে বাধা দিচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। গত ১৯ নভেম্বরও বিক্ষোভ দেখিয়েছিল বিজেপির শ্রমিক সংগঠন।

এ দিন সকাল সাড়ে ৮টায় আইআইটি সংলগ্ন রবীন্দ্রপল্লিতে জমায়েত করে বিজেএমএম। পরে কেশিয়াড়ি-খড়্গপুর সড়ক ধরে মিছিল এসে পুরীগেটের কাছে আইআইটির মূল গেটে পৌঁছয়া। গেট পেরিয়ে আইআইটি চত্বরে ঢোকার মুখেই পুলিশ মিছিল রুখে দেয়। তারপরই শুরু হয় অবস্থান। সংগঠনের জেলা সভানেত্রী রীনা সিংহ বলেন, “যদি সব দল শ্রমিক নিয়োগ করতে পারে, তাহলে বিজেএমএম পারবে না কেন? পেটের দায়েই অবস্থানে বসেছি।”

অবস্থানের জেরে আইআইটির প্রধান প্রবেশদ্বার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের ৩ কিলোমিটার দূরে ডিভিসির কাছে অন্য একটি গেট দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।” বিজেএমএম নেত্রী রিনা সিংহ অবশ্য জানান, শ্রমিক নিয়োগের অধিকার না পেলে অবস্থান চলবে। দিনভর বিক্ষোভের কথা মহকুমাশাসককে জানানো হয়। একজন ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদার আধিকারিককে পাঠানো হয় আইআইটিতে। তবে জট কাটেনি। মহকুমাশাসক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন, “বিজেএমএম এই কর্মসূচির জানিয়েছিল। সেই মতো আমি একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠিয়েছি। পুলিশও রয়েছে। আইআইটি কর্তৃপক্ষ অসুবিধার কথা জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।” আইআইটি-র ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার পল্লব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “নিয়োগের ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় নেই। ঠিকাদারই বিষয়টি দেখেন। তবে মূল গেট অবরুদ্ধ হয়ে থাকায় সমস্যা হচ্ছে। আমরা পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।”

kharagpur iit bjmm bharatiya janata mazdoor morcha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy