বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থ সাহায্যে চলা দিঘার সৈকত সৌন্দর্যায়ন-সহ অন্য তিনটি প্রকল্পের বর্তমান হাল কী তা দেখতে তিন মাসের মাথায় ফের দিঘায় এলেন দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। সম্প্রতি সৌন্দর্যায়ন, নিকাশি নালা বা ড্রেনেজ সিস্টেম প্রকল্পের অগ্রগতির হাল খতিয়ে দেখে তাঁরা যে আদৌ সন্তুষ্ট নন, তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন। তবে কাজ যথাযথ হলে বরাদ্দ টাকা পেতে যে কোনও সমস্যা হবে না, তা-ও স্পষ্ট করেছে প্রতিনিধি দলটি।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকা এ সীতারামকৃষ্ণণ কাজের অগ্রগতি নিয়ে সরাসরি মন্তব্য এড়িয়ে বলেন, “প্রকল্পের কাজ অর্ধেক এগিয়েছে। এই মুহুর্তে ‘সন্তুষ্ট’ বা ‘অসন্তুষ্ট’ কোনওটাই বলতে পারি না। প্রকল্পগুলির কাজের বাস্তব গতিপ্রকৃতি ও আর্থিক বরাদ্দ নিয়ে জাতীয় ও রাজ্যস্তরের প্রোজেক্ট মনিটরিং অথরিটির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনার করার পর প্রকল্পগুলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” প্রথম পর্যায়ে গত চার বছরে সৈকত সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা বরাদ্দ প্রসঙ্গে সীতারামকৃষ্ণণ বলেন, “যাবতীয় প্রক্রিয়া ঠিক মত চললে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা বরাদ্দ নিয়ে সমস্যা থাকার কথা নয়।”
২০১০ সালে বিশ্বব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় সুসংহত উপকূল পরিচালন প্রকল্পে (আইসিজেডেম) দিঘার সৈকত সৌন্দর্যায়ন ও নিকাশি নালা সংস্কার প্রকল্পের কাজ শুরু করে প্রকল্পের নোডাল এজেন্সি দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা ডিএসডিএ। সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে প্রথম পর্যায়ে ১০ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে হকার পুনর্বাসন কেন্দ্রের জন্য ২১৯টি স্টল তৈরি ছাড়াও, ২টি ওয়াচ টাওয়ার, একটি ওপেন থিয়েটার এবং শিশু উদ্যান ও দু’টি শৌচালয় তৈরির কাজ শুরু করে ডিএসডিএ। ডিএসডিএ-র হয়ে প্রকল্পের কাজ দেখভাল ও পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘আই উইন’ নামে একটি সংস্থাকে।
প্রথম পর্যায়ে সৈকত সৌন্দর্যায়ন, নিকাশি নালার সংস্কার শুরু হলেও এখনও বর্জ্য নিষ্কাষণ প্রকল্পের কাজ শুরুই হয়নি। কেন? পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিকের যুক্তি, ওই প্রকল্প চালু হলে তা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ পড়বে প্রতি বছর দু’কোটি। সেই টাকার যোগান নিয়ে কোনও সুরাহা না হওয়ায় ওই কাজ শুরু হয়নি। এ দিকে, হকার পুনর্বাসন কেন্দ্রে ২১৯টি স্টলের মধ্যে পুরাতন দিঘায় ৫৬টি স্টল তৈরির কাজ চললেও নিউদিঘায় প্রস্তাবিত হকার পুনর্বাসন কেন্দ্রের জায়গায় জবরদখল থাকায় বাকি ১৬৩টি স্টল তৈরির কাজ শুরুই হয়নি। তবে দু’টি ওয়াচ টাওয়ার, একটি শিশুউদ্যান, একটি ওপেন থিয়েটার বা মুক্তমঞ্চ ও দু’টি শৌচালয়ের নির্মাণের কাজ প্রায় ৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে, এমনটাই দাবি পর্ষদের নির্বাহী আধিকারিক সুজন দত্তের। অন্য দিকে, ৪১ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকায় ৩৫ কিলোমিটার নিকাশি খননের মধ্যে বর্তমানে ১৫ কিলোমিটার সম্ভব হয়েছে।
প্রকল্পগুলির হাল খতিয়ে দেখে প্রতিনিধি দলটি পর্যালোচনা বৈঠক করেন। সেখানে ছিলেন রাজ্য প্রোজেক্ট মনিটরিং ইউনিটের সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বরুণ বসাক ও ‘আই উইন’-এর পক্ষে দেবাশিস সেনগুপ্ত। সেখানে বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থ সাহায্যে চলা বন দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের চালু প্রকল্পগুলি নিয়েও বিভাগীয় আধিকারিকদের সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy