Advertisement
১৭ মে ২০২৪

কোন্দলে চূড়ান্ত হল না তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা

পুরভোটের প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়ে টানাপড়েন চলছে শাসক শিবিরে। এই ছবি রেলশহর খড়্গপুরের। কয়েক দফা বৈঠকের পরেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে সহমত হতে পারেনি শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী ও তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পালের গোষ্ঠী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৪
Share: Save:

পুরভোটের প্রার্থী তালিকা তৈরি নিয়ে টানাপড়েন চলছে শাসক শিবিরে। এই ছবি রেলশহর খড়্গপুরের। কয়েক দফা বৈঠকের পরেও প্রার্থী তালিকা নিয়ে সহমত হতে পারেনি শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী ও তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পালের গোষ্ঠী।

খড়্গপুর পুরসভায় মোট ওয়ার্ড ৩৫টি। সব কটি ওয়ার্ডের প্রার্থী ভাগাভাগি নিয়েই দেবাশিস-জহর মতবিরোধ দেখা দিয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। নেতৃত্ব অবশ্য প্রকাশ্যে বিরোধের কথা মানছেন না। শহর তৃণমূল সভাপতি দেবাশিসের দাবি, “আমাদের কোনও সমস্যা নেই। দলের নির্দেশিকা মেনেই প্রার্থী বাছাই করা হচ্ছে।”

সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২৫ এপ্রিল রাজ্যের ৯৩টি পুরসভার সঙ্গেই খড়্গপুর পুরসভায় ভোট হবে। ২০১০ সালে শেষ পুরসভা নির্বাচনের সময় থেকেই শহরে তৃণমূলের অন্দরে বিরোধ চলছে। দেবাশিস ও জহর গোষ্ঠীর কোন্দল কারও অজানা নয়। পুর-নির্বাচনের মুখে দলের দুই মহিলা সভানেত্রী এবং দুই যুব সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যুব কমিটির রদবদল নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিচ্ছে দলের অভ্যন্তরে। এই পরিস্থিতিতে মতবিরোধ মিটিয়ে প্রার্থী তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। গত ২ মার্চ কৌশল্যায় এক নেতার বাড়িতে বিবদমান দু’পক্ষকে পাশাপাশি বসিয়ে সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। দেবাশিস ও জহরবাবু তা মেনেও নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে প্রার্থী বাছাইয়ের সময় ফের বাধা হয়ে ওঠে পুরনো দ্বন্দ্ব। সহমতের ভিত্তিতে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় ৮ মার্চের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে তা জেলা নেতৃত্বকে জমাও দেওয়া যায়নি।

প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে যে ১৬টি ওয়ার্ডে গত পুরভোটে তৃণমূল জয়ী হয়েছিল, সেখানে বর্তমান কাউন্সিলররাই প্রার্থী হবেন। তবে আসন সংরক্ষণে গেরোয় ৫ জন তৃণমূল কাউন্সিলর নিজের ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলররাই তার মনোনীত প্রার্থী বাছাই করবেন। আর বাকি ১৯টি ওয়ার্ডের জন্য প্রার্থী বাছবেন জহরবাবু ও দেবাশিস।

তৃণমূল সূত্রে খবর, রবিবারের মধ্যে প্রার্থী তালিকা জমা দেওয়ার কথা থাকায় শনিবার বিকেলে বৈঠকে বসেছিলেন দেবাশিস ও জহরবাবু। সেখানে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দেবাশিস অনুগামী কাউন্সিলার রিনা শেঠের বদলে দেবাশিস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে প্রস্তাব আসে। রিনা নিজেই সরে দাঁড়াতে চেয়েছেন বলে দেবাশিস অনুগামীদের দাবি। জহরবাবুও বলেন, “রিনা শেঠ নিজেই সরে দাঁড়িয়ে মুনমুনকে (দেবাশিস) ওই ওয়ার্ডের প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছেন। মুনমুন চাইলে ভোটে দাঁড়াতে পারে।” দেবাশিস নিজে বলছেন, “প্রস্তাব তো নানা রকম রয়েছে। আমি দাঁড়াব কি না এখনই তা বলা যাবে না।” দু’পক্ষের গোলমাল দেখা দেয় ২৬ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে। ২৬ নম্বরের কাউন্সিলর লতা আচার্য ও ২৯ নম্বরের কাউন্সিলর চন্দন সিংহকে সরিয়ে নতুন মুখ আনার কথা বলেন জহরবাবু। কিন্তু ওই দু’জনই দেবাশিস অনুগামী হওয়ায় প্রতিবাদ আসে।

মতপার্থক্যের জেরে স্থগিত হয়ে যায় বৈঠক। যদিও জহরবাবুর বক্তব্য, “আমি আর মুনমুন বৈঠকে বসেছিলাম। আবারও বসব। দু’-একদিনের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি হয়ে যাবে।” দেবাশিসও বলেন, “আশা করছি ১০ মার্চের মধ্যে ছবিটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc kharagpur puro vote
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE