Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কর্মবিরতিতে মুহুরিরা, অচল জেলা আদালত

সংশোধনাগারে আসামির খোঁজ নিতে যাওয়া এক মুহুরি (ল-ক্লার্ক)-কে আটকে রাখার ঘটনার প্রতিবাদে তমলুক সাব-জেলারের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের মুহুরিরা কর্মবিরতি পালন করলেন। রামপ্রসাদ কুণ্ডু নামে তমলুক ফৌজদারি আদালতের এক মুহুরি সোমবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উপ-সংশোধানাগারের একটি মামলায় জেল হেফাজতে থাকা এক আসামির খোঁজ নিতে যান।

সুনসান তমলুক জেলা আদালত চত্বর

সুনসান তমলুক জেলা আদালত চত্বর

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৪ ০০:০৫
Share: Save:

সংশোধনাগারে আসামির খোঁজ নিতে যাওয়া এক মুহুরি (ল-ক্লার্ক)-কে আটকে রাখার ঘটনার প্রতিবাদে তমলুক সাব-জেলারের অপসারণের দাবিতে মঙ্গলবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের মুহুরিরা কর্মবিরতি পালন করলেন।

রামপ্রসাদ কুণ্ডু নামে তমলুক ফৌজদারি আদালতের এক মুহুরি সোমবার বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা উপ-সংশোধানাগারের একটি মামলায় জেল হেফাজতে থাকা এক আসামির খোঁজ নিতে যান। অভিযোগ, সেই সময় সাব-জেলার ওই মুহুরিকে জোর করে সংশোধনাগারের ভিতরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন ও তাঁর কাছে থাকা টাকা কেড়ে নেন। রামপ্রসাদবাবুর অভিযোগ, “মামলার প্রয়োজনে এ দিন আমি সংশোধানাগারে গিয়ে ওই আসামি তমলুক জেলে আছেন না তাঁকে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানো হয়েছে, সেবিষয়ে জানতে গিয়েছিলাম। সেই সময় আমার মোবাইলে আমার আইনজীবীর ফোন আসে। এরপরেই সাব-জেলার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে আমাকে জোর করে টেনে জেলের ভিতরে ঢুকিয়ে আটকে রাখেন। তিনি আমার কাছে থাকা টাকাও কেড়ে নেন।”

ল-ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশনের তমলুক ফৌজদারি আদালত ইউনিট সম্পাদক লক্ষ্মণ মণ্ডল বলেন, “জেলের মধ্যে রামপ্রসাদবাবুকে আটকে রাখার খবর পেয়ে আমরা সাব-জেলারের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাই। কিন্তু সেই সময় সাব-জেলার বিশ্বরূপ সিংহ আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এরপরেই আমরা ওই ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাই। সেই কারণেই সাব-জেলারের অপসারণের দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিলাম।” সাব-জেলারের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ নিয়ে জেল সুপার তথা তমলুকের মহকুমা শাসক শুভাশিস বেজ বলেন, “ওই ল-ক্লার্ক এ দিন জেল চত্ত্বরে ১৪৪ ধারা অমান্য করেছিলেন। তাই সাব-জেলার আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।”

মঙ্গলবার সকাল থেকে তমলুকে মুহুরিরা কর্মবিরতি পালনের পাশাপাশি আদালতের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ চালান। তার জেরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়। আদালত খোলা থাকলেও এ দিন মুহুরিদের কর্মবিরতির জেরে বিভিন্ন মামলার বাদী-বিবাদী পক্ষের জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র তৈরি না হওয়ায় অধিকাংশ আইনজীবীরা আদালতে মামলার কাজে যোগ দিতে পারেননি। আদালতের কাজ ব্যাহত হওয়ায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা বহু মানুষকে এ দিন আদালতে এসে ফিরে যেতে হয়। মুহুরিদের কর্মবিরতির জন্য সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মেনে নিয়েছেন লক্ষ্মণ মণ্ডলও। লক্ষ্মণবাবুর দাবি, “বিভিন্ন মামলায় আসামি ও তাঁর পরিবারের কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে জানি। কিন্তু সাব-জেলার বিচারাধীন আসামিদের তমলুক সাব-জেল থেকে মেদিনীপুর সেন্ট্রাল জেলে পাঠানোর ক্ষেত্রে যেসব অনিয়ম করেন, তাতে আসামি পক্ষের আরও অনেক বেশি অসুবিধা হয়। আমাদের আন্দোলনের মধ্যে এই অনিয়মের প্রতিবাদও রয়েছে।” এদিকে মুহুরিদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেননি পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক যুগল কিশোর মেটলা। যুগলবাবু বলেন, “সাব-জেলারের সঙ্গে ল-ক্লার্কদের বিরোধের একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে সেজন্য অন্যভাবেও আন্দোলন করা যেত। কর্মবিরতির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আমাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। তাই আমরা এই কর্মবিরতিকে সমর্থন করছি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tamluk work suspension law-clerk
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE