কোলাঘাটে দেনান-দেহাটি খাল সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ করতে এ বার বেআইনি দখলদারের সরাতে নোটিস দিল সেচ দফতর। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট এলাকায় ওই দুই খাল সংস্কারের কাজের সিংহভাগ হয়ে গেলেও সিদ্ধা, জিয়াদা, দেউলিয়া বাজার ও বরদাবাড় এলাকায় বেআইনি দখলদারের জন্য বাকি কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে না বলে সেচ দফতরের দাবি। সেকারণে ওই এলাকার প্রায় ৪০ জন দখলদারকে সরে যাওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে খাল সংস্কারের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য। তিনি বলেন, “দেনান-দেহাটি খাল সংস্কার কাজের অনেকটাই হয়েছে। বেআইনি দখলদারদের সরাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
জেলা সেচ দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বর্ষার জল নিকাশি ও শীতকালে বোরো চাষের জল সেচের জন্য দেনান-দেহাটি খাল অন্যতম ভরসা। পাঁশকুড়া থেকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশ দিয়ে কোলাঘাটের পুরাতনবাজারে রূপনারায়ণ নদী পর্যন্ত ১৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেহাটি খাল দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয়নি। অন্য দিকে, দেহাটি খালের ধারে কোলাঘাটের বরদাবাড় বাজারের কাছ থেকে দেনানে রূপনারায়ণ নদী পর্যন্ত ৭.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি শাখা খালও সংস্কারের অভাবে মজে গিয়েছিল। ওই দুই খাল সংস্কারের জন্য চলতি বছর রাজ্যের সেচ দফতর প্রায় ২ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। দেহাটি খাল সংস্কারের জন্য দু’টি ও দেনান খাল সংস্কারের জন্য একটি মিলিয়ে মোট তিনটি ঠিকাদার সংস্থা গত এপ্রিল মাসে খাল সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল। কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য চূড়ান্ত সময়সীমা ছিল গত ২৮ জুন। অভিযোগ, মাটি কাটার কাজ প্রায় সম্পূর্ণ করলেও স্থানীয় সিদ্ধা, জিয়াদা, দেউলিয়া বাজার ও বরদাবাড় এলাকায় সেচ দফতরের জায়গা দখল করে দোকানঘর ও বাড়ি থাকায় মাটি তুলে অন্যত্র সরানোর কাজ করা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিদ্ধা, জিয়াদা, বরদাবাড় এলাকার পাশাপাশি বরদাবাড় বাজারের কাছ থেকে শুরু হয়ে দেনান পর্যন্ত খালের ধারে মহিষগোট, মান্দারগেছিয়া গ্রামে দখল করে রয়েছে।
ভরা বর্ষার আগে দুই খালের ধারের বেআইনি দখলদার সরিয়ে খাল সংস্কারের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য সেচ দফতর ও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিল মেদিনীপুর জেলা বন্যা ভাঙন-খরা প্রতিরোধ কমিটি। গত ২৩জুন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিদর্শনে এসে খাল সংস্কার কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মহকুমা সেচ দফতরের আধিকারিককে।
বন্যা ভাঙন-খরা প্রতিরোধ কমিটির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আহ্বায়ক নারায়ণ নায়েক বলেন, “দেনান-দেহাটি খাল সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ না হলে পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের ক্ষতি হবে।” দফতরের পূর্ব মেদিনীপুর বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার কল্পতরু পাল বলেন, “দেনান-দেহাটি খাল সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য ওই দুই খালের ধারে সেচ দফতরের জায়গায় থাকা বেআইনি নির্মাণ সরিয়ে নেওয়ার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনিকভাবে আলোচনাও করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy