প্রাথমিক সংসদের নতুন চেয়ারম্যানকে অভ্যর্থনা।
স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত না দেখে দেদার বদলির আবেদনে সিলমোহর লাগানো হয়েছিল। ফলে, সমস্যায় পড়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রাথমিক শিক্ষা। বহু স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। এ নিয়ে প্রশাসনিক মহলেও অসন্তোষ দেখা দেয়। পরিস্থিতি দেখে অবশেষে পিছু হঠল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ।
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কাছে লিখিত নির্দেশ পাঠিয়ে সংসদ কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন, যদি কোনও স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দু’জন হয়, এবং এঁদের মধ্যে কেউ বদলির নির্দেশ প্রাপ্ত হন, সে ক্ষেত্রে বিকল্প শিক্ষকের ব্যবস্থা না করে বদলি প্রাপ্ত শিক্ষককে রিলিজ করা যাবে না। ফলে, বহু শিক্ষকেরই বদলি আপাতত রদ হয়েছে।
আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষক বদলি হয়েই থাকে। তবে, চলতি বছরের গোড়ায় সংসদ কর্তৃপক্ষের তরফে এক-দেড় সপ্তাহের মধ্যে এক হাজারেরও বেশি শিক্ষকের বদলির আবেদনে সিলমোহল লাগানো হয়। দেখা যায়, বদলির পর এমন অনেক স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা বেড়েছে, যেখানে আগে থেকেই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত শিক্ষক ছিলেন। আবার এমন স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কমেছে, যেখানে আগে থেকেই প্রয়োজনের তুলনায় কম শিক্ষক ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের মধ্যেও অসন্তোষ দেখা দেয়। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রায় ৪,৭০০টি প্রাথমিক স্কুল রয়েছে। স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ১৬,২০০ জন আর পার্শ্বশিক্ষক রয়েছেন ১,৪০০ জন। প্রাথমিকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা সাড়ে তিন লক্ষের কাছাকাছি। আগে স্কুলে ৪০ জন ছাত্র পিছু এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা ছিল। এখন ৩০ জন ছাত্রপিছু এক জন করে শিক্ষক থাকার কথা। তাও সঙ্কটের মুখে পড়ে প্রাথমিক শিক্ষা।
শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ ছিল, বদলির ক্ষেত্রে একাধিক দুষ্টচক্র সক্রিয় রয়েছে। সংসদ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ উড়িয়ে বলে, তাড়াহুড়োয় ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করা হবে। সম্প্রতি অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকদের সাত দফা লিখিত নির্দেশ পাঠিয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। ওই নির্দেশে জানানো হয়েছে, যদি কোনও স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দু’জন হয়, এবং এঁদের মধ্যে কেউ বদলির নির্দেশ প্রাপ্ত হন, সে ক্ষেত্রে বিকল্প শিক্ষকের ব্যবস্থা না করে বদলি প্রাপ্ত শিক্ষককে রিলিজ করা যাবে না। বদলি প্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে যাঁদের রিলিজ করলে স্কুলের অসুবিধে হবে না, শুধুমাত্র তাঁদেরকেই বদলি প্রাপ্ত স্কুলে যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে। সঙ্গে যাঁদের আশু রিলিজ করা যাবে না, না করার কারণ-সহ বিকল্প প্রস্তাব সংসদে পাঠাতে হবে। সংসদ কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশিকার কথা সম্প্রতি স্কুল-এডুকেশন কমিশনারের মাধ্যমে রাজ্যের শিক্ষা-সচিবকে জানিয়েছেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) কবিতা মাইতি। চিঠিতে তিনি মানেন, একটা বড় সংখ্যক শিক্ষকের বদলির আবেদনে সংসদ সিলমোহর লাগায়। এই নির্দেশ কার্যকরী হলে শিক্ষাবর্ষের মাঝপথে প্রাথমিকের পঠনপাঠনে সমস্যা হবে। শিক্ষার অধিকার আইনকেও অমান্য করা হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে রাজ্য থেকে নারায়ণ সাঁতরার নাম ঘোষণা করা হয়। বুধবার সংসদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে নারায়ণবাবু বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হয়, এমন কোনও কাজই সংসদ করবে না। আশা করি, সংসদ পরিচালনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা সহ সকলেই সহযোগিতা করবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy