Advertisement
১১ মে ২০২৪

জটে অনিয়মিত মিড ডে মিল, ছাত্রী-অভিভাবকদের বিক্ষোভ

অন্য বিভাগের বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেলেও বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। স্কুলে মিড ডে মিলও বন্ধ মাসের পর মাস। বঞ্চিত ছাত্রীরা।

স্কুল পরিদর্শকের অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল ছাত্রীরা।  —নিজস্ব চিত্র।

স্কুল পরিদর্শকের অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল ছাত্রীরা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শালবনি শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৩১
Share: Save:

অন্য বিভাগের বার্ষিক পরীক্ষা হয়ে গেলেও বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। স্কুলে মিড ডে মিলও বন্ধ মাসের পর মাস। বঞ্চিত ছাত্রীরা।

এ সবের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার স্কুল পরিদর্শকের অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন শালবনির জরকা জুনিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী, অভিভাবক ও কয়েকজন শিক্ষিকা। ২০১০ সালের অগস্ট মাসে চালু হয়েছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই স্কুলটি। প্রথম সহ-শিক্ষিকা হিসাবে যোগ দেন পিয়ালি খান। তাঁকেই টিচার-ইন-চার্জ করা হয়। কিছুদিন পরেই তিনি ওই পদে থাকবেন না বলে স্কুল পরিদর্শকের কাছে আবেদন জানান। কিন্তু বিদ্যালয় পরিদর্শক তাঁকেই পদে থাকার কথা জানানোয় তিনি আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত তাঁর পক্ষেই রায় দিয়েছে। সে কথা জানিয়ে তিনি ওই পদ ছেড়ে দেন। স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে চন্দ্রা বারুই নামে এক শিক্ষিকাকে ওই পদের দায়িত্ব দিতে চাইলে তিনিও রাজি হননি। এই অবস্থায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে স্কুল। ২০ নভেম্বর স্কুলে গিয়ে পিয়ালীদেবীর সঙ্গে মদ্যপ অবস্থায় স্থানীয় কয়েকজন অশালীন আচরণ করেন বলে অভিযোগ। তারপর তিনি আর স্কুলে যাননি। এই জটিলতায় মিড ডে মিল যেমন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে, তেমনই টিচার-ইন-চার্জ তথা বিজ্ঞানের শিক্ষিকা পিয়ালিদেবী স্কুলে না আসায় বিজ্ঞানের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি! ক্ষুব্ধ ছাত্রী ও অভিভাবকেরা। এআই তৃপ্তি ঘোষ পড়িয়া ও শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে বসে সমস্যার সমাধান করেন। নেপালবাবু ও তৃপ্তিদেবীর কথায়, “সমস্যার সমাধান হয়ে গিয়েছে। চন্দ্রাদেবীকে টিচার-ইন-চার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সমস্যা বুঝে তিনি রাজিও হয়েছেন। এ বার প্রতিদিন যাতে মিড ডে মিল চালানো হয় তা বলা হয়েছে। বাকি থাকা দু’টি বিষয়ের পরীক্ষাও নিতে বলা হয়েছে।” যদিও এই পদ নিতে নিমরাজি চন্দ্রাদেবী বলেন, “দায়িত্ব দিলেও আমি কাজ করব কী করে? আমাকে তো চার্জ দেওয়া হয়নি। তাছাড়াও বিভিন্ন সময়ে স্কুলের উন্নয়নে টাকাও এসেছে। সেই টাকা খরচের দায়িত্ব আমি নেব কেন? বৃহস্পতিবারের পর থেকে যা আসবে আমি কেবল সেই কাজটুকু করব।”

জরকা গরিব গ্রাম। যেখানে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস বেশি। অভিভাবক অশ্বিনী চালকের কথায়, “মেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছি, মিড ডে মিল তো নেই, এমনকী পরীক্ষা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে না।” ছাত্রী সোমা চালক, পায়েল দিগরদের কথায়, “এখন বিজ্ঞানের দিদিমণি না থাকায় বিজ্ঞানের ক্লাসও তো হচ্ছে না।” শুধু এটাই নয়, এর ফলে স্কুলের শিক্ষিকারাও মাইনে পাননি! কেন পিয়ালিদেবী স্কুলে যাচ্ছেন না? পিয়ালিদেবীর কথায়, “আমি বারবার টিআইসি-র দায়িত্ব দিতে চেয়েছি, কেউ নেননি। অনলাইনে শিক্ষিকাদের মাইনের বিলের আইডি, পাসওয়ার্ডও এআই ম্যাডামকে দিয়ে দিয়েছি। তবু মাইনে না হলে আমি কী করতে পারি। আমি যাচ্ছি না নিরাপত্তার অভাবে। কারণ, ২০ নভেম্বর আমার সঙ্গে স্কুলে গিয়ে ৫ জন মদ্যপ অভব্য আচরণ করে। তা পুলিশকেও জানিয়েছি। নিরাপত্তার অভাবে স্কুলে যেতে পারছি না বলেও প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলেই যাব।” এ ব্যাপারে এআই তৃপ্তি ঘোষ পড়িয়া বলেন, “স্কুলের পরিবেশ যাতে স্বাভাবিক হয় সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE