ভবানীপুর থানার সামনের অবস্থা এমনই।—নিজস্ব চিত্র।
বাজেয়াপ্ত করা নানা সামগ্রী-ই এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হলদিয়ার মহকুমা পুলিশের!
কী নেই সেই তালিকায়? বাজেয়াপ্ত করা মোটর বাইক, দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া চার চাকা গাড়ি, হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস এর প্লাস্টিক দানা, রাসায়নিক শিল্পে কাজে লাগে এমন নানা রাসায়নিক দ্রব্য, হলদিয়া বন্দরে রফতানি হওয়া কয়লা, লৌহ আকরিক, অপরিশোধিত তেল, চোলাই মদ মায় বাজি পর্যন্ত!
আর এগুলিই একত্রে মজুত থাকায় থানাগুলির গুদামঘর-সহ সংলগ্ন নানা জায়গা কার্যত ‘জতুগৃহে’ পরিণত হয়েছে। পুলিশের বড়, মেজ কর্তা থেকে থানায় থাকেন যে সব কনস্টেবল তাঁরাও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের আশঙ্কা, হঠাৎ এ সব থেকে বড় বিপদ না হয়! সম্প্রতি উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবরা থানায় আটক বাজি পুলিশ জিপেই বিস্ফোরণ হওয়ায়, সেই আশঙ্কা আরও জেঁকে বসেছে।
হাবরা-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে হলদিয়া মহকুমা পুলিশ প্রশাসন এবং স্বয়ং মহকুমাশাসক উদ্যোগী হয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থানা চত্ত্বর থেকে এই সব সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে। হলদিয়ার ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে অবস্থিত ভবানীপুর থানা চত্ত্বরে উপছে পড়ছে বাজেয়াপ্ত করা সামগ্রীতে। ঠাঁই নাই দশা! অবস্থা দেখে তারা বাধ্য হয়ে থানার বাইরে রাস্তার উপর রেখে দিয়েছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলি। এগুলি প্রায় দু’শো মিটার রাস্তা জুড়ে পড়ে রয়েছে। এক পুলিশকর্মীর রসিকতা, এক ঝলক দেখলে মনে হবে থানার পাশে বোধ হয় জরুরি কোনও বৈঠক চলছে!
কেবল ভবানীপুর থানা নয়, হলদিয়া থানা, দুর্গাচক থানারও একই চিত্র। হলদিয়া থানায় দাবিহীন গাড়িগুলি অবশ্য সম্প্রতি নিলাম করা হয়েছে। নিলামের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ভবানীপুর এবং দুর্গাচক থানাতেও। ভবানীপুর থানার ওসি রাজা মুখোপাধ্যায় কবুল করছেন, “থানার জায়গা কম। নানা বাজেয়াপ্ত জিনিস নিয়ে নাজেহাল দশা।” জাতীয় সড়কের উপরে এই থানা অবস্থিত হওয়ার দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি এখানে বেশি আসে। থানা চত্ত্বরে দৃষ্টিকটু অবস্থায় ইতিউতি পড়ে থাকে গাড়িগুলি। দুর্গাচক থানায় ওসি কুদরতে খোদাও চান, বাজেয়াপ্ত বস্তু দ্রুত নিলাম হোক।
হলদিয়ার মহকুমাশাসক শঙ্কর নস্করও মানছেন, “বহু সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দাবিহীন গাড়িগুলি। দ্রুত সেগুলি একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিলাম করা হবে।” হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলছেন, “ভবানীপুর থানায় স্থান সঙ্কুলান নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ওই এলাকায় আমাদের হাতে পাঁচ একর জায়গা রয়েছে। সেখানেই পুলিশ লাইন-সহ রিসার্ভ ফোর্স রাখার বন্দোবস্ত করা হবে।”
তবে হলদিয়ার এক পুলিশ আধিকারিক বলছেন, যত দ্রুত সম্ভব বাজেয়াপ্ত জিনিস নিলাম হওয়া ভাল। কেননা, অনেক সময়ে সময় দাহ্য বস্তু-সহ গাড়ি আটক করতে হয়। তখন চিন্তার অন্ত থাকে না। আইন মেনে কাগজ তৈরি করতে অনেক সময় গড়িয়ে যায়। তাই নিরাপত্তার কারণেই সব সময় থানা চত্ত্বর পরিষ্কার রাখা জরুরি বলে ওই পুলিশ আধিকারিকের মত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy