ভাঙচুরের পরে। বুধবার পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।
ট্রাক থেকে টোল আদায় নিয়ে বিরোধে হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের তমলুকের টোল প্লাজার অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে, নিরাপত্তা রক্ষীদের মারধর করে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা লুঠের অভিযোগ উঠল কিছু ট্রাক চালক ও খালাসিদের বিরুদ্ধে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের রাধামনির কাছে সোনাপেতা এলাকায় অবস্থিত টোল প্লাজার মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। মারধরে জখম হয়েছেন টোল প্লাজার দুই নিরাপত্তা রক্ষী-সহ চার কর্মী। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অভিযুক্ত ট্রাক চালক-খালাসিরা চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। জাতীয় সড়কে রাত সাড়ে বারোটা থেকে সওয়া একটা পর্যন্ত, পঁয়তাল্লিশ মিনিটের দলবদ্ধ হামলায় টোল প্লাজার কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “গোলমালের ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে।” তবে পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত তিনটি ট্রাক ও একটি বাসের নম্বর-সহ ভাঙচুর, মারধর ও টাকা লুঠের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সিসিটিভি-র ফুটেজের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, রাধামনি বাজার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে বছর দেড়েক আগে ওই টোল প্লাজাটি চালু হয়েছে। হলদিয়া শিল্পাঞ্চলের ট্রাক, দিঘা-হাওড়া রুটের বাস, ট্যাক্সি-সহ নানা যানবাহন থেকে টোল আদায় করা হয়। এত দিন এখানে কোনও বড় গোলমাল হয়নি।
এ দিন ঠিক কী হয়েছে?
টোল প্লাজার কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ হলদিয়া থেকে কলকাতাগামী ‘ন্যাশনাল পারমিট’ থাকা একটি ট্রাকের থেকে টোল বাবদ ২৪০ টাকা নেওয়া হয়। তারপর ট্রাকটি চলে যায়। এর আধ ঘণ্টার মধ্যে ওই গাড়ির চালক-খালাসি মদ্যপ অবস্থায় ফিরে রাস্তায় আড়াআড়ি গাড়ি করিয়ে দাবি করে, তাঁদের ‘স্টেট পারমিট’ আছে সেই অনুযায়ী টাকা নিতে হবে। এ নিয়ে বচসা হয়। তাঁর অভিযোগ, টোল প্লাজার কাছে এসে পড়া অন্য ট্রাক চালক-খালাসিরা তাতে যোগ দেয়। মারধর করে। জাতীয় সড়ক সংস্থার এক কর্তা জানান, টোল নেওয়া হয় গাড়ির ক্ষমতা অনুযায়ী। জাতীয় পারমিট বা রাজ্য পারমিটের উপরে ভিত্তি করে টোল নেওয়া হয় না। সে কথা টোল প্লাজার কর্মীরা ওই ট্রাকের চালক ও খালাসিদের জানানো সত্ত্বেও তারা প্লাজা কর্মীদের উপরে হামলা চালায়। টোল প্লাজার ম্যানেজার অনুপ বল বলেন, “কয়েক’টি ট্রাকের কুড়ি-পঁচিশ জন চালক-খালাসি আমাদের কর্মী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের উপরে রড, লাঠি নিয়ে চড়াও হয়। মারধর করে, যথেচ্ছ ভাঙচুর চালিয়ে পাঁচটি কাউন্টার থেকে প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা লুঠ করে।” তাঁর দাবি, হামলার কথা তমলুক থানায় জানানো হয়। কিছু সময়ের মধ্যে পুলিশ এলেও দুষ্কৃতীরা পালায়। দুষ্কৃতীদের মারে জখম হয়েছেন টোল প্লাজার রক্ষী সাহেব সিংহ রায় ও সুরজিত্ ঘোড়ই। কর্মী অচিন্ত্য জানা, অমলেশ জানা। সাহেবের মাথায় আঘাত রয়েছে, সুরজিতের হাতে।
ওই টোল প্লাজার তৃণমূল প্রভাবিত কর্মী ইউনিয়নের সম্পাদক তপন মাইতির অভিযোগ, টোল প্লাজার কাছাকাছি খাবারের দোকান, মদের দোকান থাকায় সেখানে অনেক চালক প্রায়ই গাড়ি রেখে মদ্যপান করেন। এর ফলেই এমন দলবদ্ধ হামলায় ঘটনা ঘটছে। তিনি হামলার ঘটনায় যুক্তদের সকলকে দ্রুত গ্রেফতার এবং কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের টহলদারি বাড়ানোর দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy