ইভিএম বন্দি জনমত জানতে এখনও চার দিন বাকি!
আগামী শুক্রবার লোকসভা নির্বাচন ২০১৪-এর ফল ঘোষণা। তার আগেই কত মানুষের সমর্থন মিলেছে- তা হিসেব-নিকেশ করে দেখে নিতে তৎপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আর তা জানতেই প্রতিটি বিধানসভা এলাকার নেতা-কর্মীদের নিয়ে পর্যালোচনা করে নিতে চাইছে তৃণমূল।
ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। আজ, অর্থাৎ সোমবার ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। মেদিনীপুর লোকসভা নিয়ে দলীয় শীর্ষ নেতারা এক দফা পর্যালোচনা করে নিয়েছেন। এ দিন ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন পরবর্তী পর্যালোচনা করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তার নিরিখে সকলের আশা, প্রায় লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হবেন দলীয় প্রার্থী সন্ধ্যা রায়। তবু আরও একবার চুলচেরা বিশ্লেষণ করার জন্য বৃহস্পতিবার বৈঠক ডেকেছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “এই পর্যালোচনা অত্যন্ত জরুরি। পর্যালোচনা থেকেই বোঝা যাবে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগ কতটা। কত ভোটে প্রার্থী জিতবেন, শুধু সেটা অনুমান করাই লক্ষ্য নয়।”
নির্বাচনের নানা অঙ্ক থাকে। তার মধ্যে সব থেকে বড় বিষয় হল, ভোটারদের বুথ পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে ভোটটা দেওয়ানো। ভোট প্রচারে অনেকে ঝড় তোলেন, সমাবেশে মাঠ ভরিয়ে দেন, কিন্তু আদৌ কি ভোট বাক্সে তার প্রভাব পড়ে? সব সময় পড়ে এমন নয়। আবার অনেক সময় বুথস্তরের দায়িত্বে থাকা নেতা-কর্মীরা আত্মসন্তুষ্টিতে ভোগেন। ধরে নেন, বেশিরভাগ ভোটারই তাঁদের। কিন্তু গণনার সময় দেখা যায়, সেই বুথ থেকে অনেক ভোটের ব্যবধানেই হার হয়েছে। তৃণমূল নেতার কথায়, “গণনার আগে এটাই বুঝে নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এখন কোনও নেতা বা কর্মী যদি দাবি করেন তাঁর বুথে ৮০ শতাংশ ভোট প্রার্থীর সমর্থনে গিয়েছে। কিন্তু গণনার পর দেখা গেল, তা ৫০ শতাংশ হয়েছে বা সেখানে প্রার্থী হেরেছে, তাহলে বুঝতে হবে, সেই নেতা বা কর্মীর জনসংযোগে ঘাটতি রয়েছে। তিনি মানুষের মন বুঝতেও ব্যর্থ।”
ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, তার জন্য ওই নেতা-কর্মীদের তালিম দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, এখনও অনেক নেতা-কর্মীই আবেগের বশে চলেন। নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত তেমন অভিজ্ঞতাও তাদের নেই। তৃণমূল নেতৃত্বের মতে, যখন দল ক্ষমতায় ছিল না, তখন মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবেই ভোট দিতেন, নেতা-কর্মীরা গ্রামেগঞ্জে কাজ করতে পারতেন না। আবার দল ক্ষমতায় আসার পরেও প্রথমের দিকে তাই হয়েছে। পুরসভা ও পঞ্চায়েতে ব্যাপক ভোট পেয়েছে তৃণমূল। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা ততই বাড়ছে। বিরোধীরা এককাট্টা হচ্ছে। তাকে মোকাবিলা করতে হলে, সংগঠনকে মজবুত করা থেকে শুরু করে নির্বাচন পরিচালনা- সবই শিখতে হবে। দল ক্ষমতায় থাকার কারণে এখন দলে মানুষের ভিড় বাড়ছে। কিন্তু সকলেই দলের সমর্থক কিনা তাও বুঝতে হবে। নাহলে বুঝিয়ে তাঁদের নিয়ে আসতে হবে। আদপে সেই কাজ কতটা হয়েছে তা নির্বাচন পরবর্তী পর্যালোচনাতেই ধরা যাবে। যদি গণনার পর ফলের হিসাব না মেলে তথনই বুঝতে হবে সেই এলাকার নেতারা মানুষের মন বুঝতে ব্যর্থ। তার জন্য পরবর্তীকালে কোন পথে এগোতে হবে, বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি গ্রহণ করে তা বোঝাতে হবে। এক তৃণমূল নেতার কথায়, “দল যত বেশি দিন ক্ষমতায় থাকবে, ততই প্রতিষ্ঠান বিরোধী মানুষের সংখ্যা বাড়বে। তা মনে রেখেই এখন থেকে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি। যাতে ভবিষ্যতে দলকে কোনও রকম বিপদের মুখে না পড়তে হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy