Advertisement
১৮ মে ২০২৪

দলীয় সংগঠনকে শৃঙ্খলায় বাঁধার নির্দেশ বিজেপির

লোকসভা ভোটে সাফল্যের পর দল বাড়ছে। অনেকেই দলে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন করছেন। তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু নতুন মুখও। পাশাপাশি, দলের অন্দরে অনভিপ্রেত কিছু ঘটনায় তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলাও। দলীয় কোন্দলে রাশ টানতে তাই শুরু থেকেই সংগঠনকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে তৎপর হল বিজেপি। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন দলের মেদিনীপুর শহর নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৪ ০১:০৩
Share: Save:

লোকসভা ভোটে সাফল্যের পর দল বাড়ছে। অনেকেই দলে যোগ দিতে চেয়ে আবেদন করছেন। তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু নতুন মুখও। পাশাপাশি, দলের অন্দরে অনভিপ্রেত কিছু ঘটনায় তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলাও। দলীয় কোন্দলে রাশ টানতে তাই শুরু থেকেই সংগঠনকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে তৎপর হল বিজেপি। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন দলের মেদিনীপুর শহর নেতৃত্ব। লোকসভার ফলাফল নিয়েই পর্যালোচনা হয়। দলীয় সূত্রে খবর, নেতা-কর্মীদের পাঁচ দফা নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাস। তিনি জানিয়েছেন, দলের নির্দেশ অমান্য করে কোনও কাজ করা যাবে না।

ঠিক কী কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? দলীয় সূত্রে খবর, শহর সভাপতি জানিয়েছেন, শহর কমিটির অনুমতি ছাড়া কোনও ওয়ার্ডে কোনও কর্মসূচি সংগঠিত করা যাবে না, কর্মসূচি নেওয়ার তিন দিন আগে জানাতে হবে, শহর কমিটি কিংবা সভাপতির অনুমতি ছাড়া দলের কোনও কর্মী নিজ ওয়ার্ড ছেড়ে অন্য ওয়ার্ডে গিয়ে দলীয় কর্মসূচির দেখভাল করবেন না। মেদিনীপুর শহর কমিটির কোনও সদস্য শহরের বাইরে গিয়ে দলীয় কর্মসূচির দেখভাল করবেন না। সদস্যদের বাইরে গিয়ে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিলেও শহর কমিটির অনুমতি নিতে হবে। শহর কমিটির অনুমতি ছাড়া কোনও চাঁদা সংগ্রহ হবে না। যাঁদের কাছে সদস্য সংগ্রহের বই রয়েছে, অবিলম্বে তাঁদের তা ফেরত দিতে হবে। এ বার থেকে সদস্য সংগ্রহ শহর সভাপতি কিংবা শহর সভাপতিকে জানিয়েই করতে হবে। পাঁচ দফা নির্দেশ নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে কিছু বলতে নারাজ বিজেপির শহর সভাপতি অরূপ দাস। তিনি বলেন, “এটা আমাদের সাংগঠনিক ব্যাপার। শহরের বৈঠক ছিল। সেখানে কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

কেন এমন নির্দেশনামা?

দলের এক সূত্রে খবর, লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরই বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটেছে। সামনে এসেছে দলের অন্দরের মতপার্থক্য। যেমন, গত মঙ্গলবার শহরে বিজেপির এক কেন্দ্রীয় মিছিল হওয়ার কথা ছিল। ঠিক ছিল, বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মী- সমর্থকেরা মিছিলে যোগ দেবেন। পরে শহর নেতৃত্ব জানতে পারেন, ওই দিন শহরের একটি ওয়ার্ডে আলাদা ভাবে মিছিলের আয়োজন করেছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। অবশ্য ওই ওয়ার্ডের মিছিলটিই হয়েছে। শহরের কেন্দ্রীয় মিছিলটি স্থগিত রাখা হয়। শহর নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, মঙ্গলবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ছিল। পরিস্থিতি দেখেই মিছিল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুরের সর্বত্র বিজেপির তেমন সংগঠন নেই। কার্যত বিনা সংগঠনেই এ বার লোকসভায় গড়ে ১০ শতাংশ ভোট পেয়েছে দল। মেদিনীপুরে ১৪ শতাংশ, ঘাটালে ৭ শতাংশ এবং ঝাড়গ্রামে ১০ শতাংশ। গ্রামের তুলনায় শহরেই ভোটপ্রাপ্তি বেশি বিজেপির। খড়্গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে দলের প্রাপ্ত ভোট ৫১ হাজার। মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে দলের প্রাপ্ত ভোট ৩২ হাজার। বস্তুত, এই ভোট যে আগামী দিনে ধরে রাখা সহজ নয়, তা মানছেন বিজেপির জেলা নেতৃত্বও। প্রাপ্ত ভোট ধরে রাখতে হলে মজবুত সংগঠন প্রয়োজন। এরমধ্যে দলের অন্দরে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে যে সংগঠনেরই ক্ষতি, তা বলাই বাহুল্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

medinipur discipline in organization bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE