Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পিঠের গন্ধে হাজির নতুন প্রজন্মও

নিমেষে উঠে যাচ্ছে সার দিয়ে রাখা পুরপিঠে, গুড়পিঠে, দুধপুলি থেকে দইপিঠে মায় পাটি সাপটা, ছানাবড়া, গোকুল পিঠে, রসপুলি, সরু চাকলি! জানা অজানা হরেক স্বাদের পিঠের সম্ভার নিয়ে কাঁথি রাও রিক্রিয়েশন ক্লাবের মাঠে মেলা বসিয়েছিলেন পুর-শহরের কুড়িটি ওয়ার্ডের কুড়িটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মহিলারা।

জমজমাট পিঠে-পুলি উৎসব। ছবি: সোহম গুহ।

জমজমাট পিঠে-পুলি উৎসব। ছবি: সোহম গুহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১১
Share: Save:

নিমেষে উঠে যাচ্ছে সার দিয়ে রাখা পুরপিঠে, গুড়পিঠে, দুধপুলি থেকে দইপিঠে মায় পাটি সাপটা, ছানাবড়া, গোকুল পিঠে, রসপুলি, সরু চাকলি!

জানা অজানা হরেক স্বাদের পিঠের সম্ভার নিয়ে কাঁথি রাও রিক্রিয়েশন ক্লাবের মাঠে মেলা বসিয়েছিলেন পুর-শহরের কুড়িটি ওয়ার্ডের কুড়িটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর মহিলারা। বৃহস্পতি থেকে রবিবার সন্ধে তিনটে থেকে ন’টা চার দিনই কুড়িটি স্টলে পিঠেপুলির আকর্ষণে ভিড় জমালেন গুণগ্রাহীরা। চেখে দেখলেন হরেক পিঠের স্বাদ। আর বিক্রিবাটা? কাঁথি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্নিগ্ধা গিরি, শিউলি দত্ত, সুনীতা পাত্রেরা জানালেন, বিক্রি মারকাটারি।

রবিবার উৎসবের শেষ দিনে সেই মারকাটারি বিক্রির হিসেব দিচ্ছিলেন স্নিগ্ধা গিরি। তিনি জানালেন, উৎসবের তিন দিনে প্রায় পঁচাত্তর হাজার টাকার পিঠেপুলি বিক্রি করেছেন তাঁরা। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুর কাউন্সিলর সুমিতা গিরি-র কথায়, “উৎসবের তিন দিনে কুড়িটি স্টল মিলিয়ে দেড় লক্ষেরও বেশি টাকার বিক্রিবাটা হয়েছে।” ব্যাপক বিক্রির কথা মাথায় রেখে পিঠের দামও ছিল সকলের সাধ্যের মধ্যে।

পিঠপুলি উৎসবে গিয়ে দেখা গেল, বহু স্টলেই উপচানো ভিড়। উৎসবে রসুন, কমলালেবু এবং পেঁপে পায়েসের চাহিদা তুলনামূলক ভাবে বেশি। আর তা চেখে দেখছেন সাত থেকে সত্তর। সপরিবারও এসেছেন অনেকেই। কাঁথির একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ বরুণ জানার কথায়, “পিঠেপুলিতে অতীত দিনের ছোঁয়া পেলাম। ছোটবেলায় মা-ঠাকুমার হাতে তৈরি পিঠেপুলি খাওয়ার একটা অদ্ভুত আকর্ষণ ছিল। যা আজও টানে। মা-ঠাকুরমাকে দেখতাম মকরসংক্রান্তির আগে রাত জেগে পিঠেপুলি তৈরি করছেন। পর দিন সকালে সংক্রান্তির স্নানের পর সকলের হাতে সেই পিঠেপুলি তুলে দিতেন। এখন ব্যস্ততার যুগে প্রত্যেকের বাড়িতে এমন আয়োজন উঠেই গিয়েছে। তাই এই উৎসেব আসা।” প্রভাতকুমার কলেজের ছাত্রী রীনা গিরি, তাপসী রাউ বা সুনীতা সামন্তের মতো নতুন প্রজন্মও ভিড় জমিয়েছিলেন উৎসবে। তাঁদের কথায়, “হ্যামবার্গার, রোল বা স্যান্ডউইচের চেয়ে স্বাদে গন্ধে বাংলার পিঠেপুলির স্বাদ কোনও অংশে কম নয়।” শুধু পিঠেপুলি বিক্রি করাই নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আর দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারেও যথেষ্ট জোর দেওয়া হয়েছিল উৎসবে।

বার্ষিক অনুষ্ঠান। শহরের প্রাচীন বাচিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ‘হিজিবিজি’র বার্ষিক অনুষ্ঠান হল কাঁথির সংহতি হলে। রবিবার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাক্তন সহ স্বাস্থ্যসচিব প্রশান্ত প্রামাণিক। প্রশান্তবাবু তাঁর বক্তব্যে বাংলা ভাষার উচ্চারণ ও বানান পদ্দতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “এখন থেকে বাংলা উচ্চারণ নিয়ে সতর্ক না হলে আগামীদিনে শুদ্ধ বাংলা ভাষা উচ্চারণ বিপন্ন হয়ে পড়বে।”

শান্তি মিছিল। রবিবার খেজুরি-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে এক শান্তি মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে। খেজুরির তৃণমূল বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডলের নেতৃত্বে মিছিলটি বারাতলা অঞ্চলের তেঁতুলতলা থেকে ঘোলাবাড় পর্যন্ত এলাকা পরিক্রমা করে। গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অশান্ত হয়ে উঠে বারাতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরমালদা গ্রাম খেজুরি-২ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কমার্ধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ দাস-সহ তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন আহত হন। রবিবারের শান্তি মিছিলে বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল ছাড়াও খেজুরি- পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীম মণ্ডল, খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি লুফর রহমান সহ পঞ্চায়েত সমিতি, বারাতলা পঞ্চায়েতের কমর্কর্তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pithe puli utsav pitha kanthi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE