Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রার্থী অপরিচিত, পশ্চিমে প্রতীকেই ভরসা বিজেপির

একদিকে রুপোলি পর্দার ‘রংবাজ’ নায়ক। অন্য দিকে, স্বর্ণযুগের ‘করুণাময়ী’ অভিনেত্রী। জঙ্গলমহলে রয়েছেন ভূমিকন্যা চিকিৎসক। ঘাটাল, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তিন তৃণমূল প্রার্থীর বিপক্ষে বিজেপি’র দলীয় প্রার্থী কেবল ‘পদ্মফুল’!

ঝাড়গ্রামে বিজেপির প্রচার।

ঝাড়গ্রামে বিজেপির প্রচার।

কিংশুক গুপ্ত ও অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঝাড়গ্রাম ও ঘাটাল শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০১:১০
Share: Save:

একদিকে রুপোলি পর্দার ‘রংবাজ’ নায়ক। অন্য দিকে, স্বর্ণযুগের ‘করুণাময়ী’ অভিনেত্রী। জঙ্গলমহলে রয়েছেন ভূমিকন্যা চিকিৎসক। ঘাটাল, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তিন তৃণমূল প্রার্থীর বিপক্ষে বিজেপি’র দলীয় প্রার্থী কেবল ‘পদ্মফুল’! ওই তিন কেন্দ্রে বিজেপি’র রাজ্য নেতৃত্বের প্রস্তাব অনুযায়ী যে তিন জন রাজ্য নেতাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনোনয়ন দিয়েছেন, তাঁরা সবাই বহিরাগত। ফলে, হতাশ কর্মীরা বলতে শুরু করেছেন, পদ্মফুলই ভরসা।

ঘাটাল কেন্দ্রে তৃণমূলের অভিনেতা-প্রার্থী দেব ওরফে দীপক অধিকারীর বিপক্ষে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন মহম্মদ আলম। উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির বাসিন্দা আলম সাহেব পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি দলের সংখ্যালঘু মোর্চার রাজ্য নেতা। মেদিনীপুরে অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়ের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন বিজেপির রাজ্য সহ সভাপতি তথা কলকাতার বাসিন্দা প্রভাকর তিওয়ারি। ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের উমা সরেনের বিপক্ষে বিজেপি’র আদিবাসী মোর্চার রাজ্য সভাপতি বিকাশ মুদিকে প্রার্থী করা হয়েছে। বিকাশবাবুর বাড়ি বর্ধমানে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সাংগঠনিক ভাবে বিজেপি’র দু’টি জেলা কমিটি রয়েছে। একটি পশ্চিম মেদিনীপুর, অন্যটি ঝাড়গ্রাম। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির নিচু তলার কর্মীদের প্রশ্ন, বহিরাগত প্রার্থীই যদি দেওয়া হল, তাহলে দেব ও সন্ধ্যা রায়ের বিপক্ষে বাবুল সুপ্রিয়র মতো ‘তারকা’ বা হেভিওয়েট প্রার্থী দেওয়া গেল না কেন? আদিবাসী সংরক্ষিত ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে ভূমিকন্যা হিসেবে পরিচিত সদ্য ডাক্তারি পাস করা তৃণমূল প্রার্থী উমা সরেনের বিপক্ষে এলাকার কাউকে প্রার্থী করলে রাজনৈতিকভাবে অনেক বেশি সুবিধা পাওয়া যেত বলে মনে করছেন বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা কমিটির নেতা-কর্মীর একাংশ।

প্রার্থী নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মেদিনীপুর ও ঘাটাল কেন্দ্রে প্রচারই শুরু করতে চাইছেন না দলীয় কর্মীদের একাংশ। যে কারণে ওই দু’টি লোকসভা কেন্দ্রে এখনও সেভাবে দেওয়াল লিখন কিংবা কর্মিসভা করা যায় নি। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে অবশ্য গত রবিবার থেকে প্রচারের কাজ শুরু হয়েছে। বুধবার ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বিকাশ মুদি বান্দোয়ানের বরাবাজারে একটি কর্মী সম্মেলন করেন। বিকাশবাবুর দাবি, “জনসংযোগও প্রচারের একটা অঙ্গ। গত চার দিন ধরে এলাকায় এলাকায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলছি। মানুষ মোদীজির নেতৃত্বে কেন্দ্রে পরিবর্তন চাইছেন।” ঘাটাল কেন্দ্রে বিজেপির নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তপন মাইতি এবং মেদিনীপুর কেন্দ্রে দলের তরফে নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সোমনাথ সিংহরা বলছেন, “প্রার্থীরা এলাকায় চলে এসেছেন। দু’এক দিনের মধ্যে জোর কদমে প্রচার শুরু হয়ে যাবে।” দাবি, কয়েকটি জায়গায় দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু হয়েছে। ছোটখাটো কর্মিসভাও হচ্ছে। জেলায় প্রচারে দলের হেভিওয়েট নেতা ও চিত্র তারকারা আসবেন।

স্থানীয় বিজেপি’র নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুরের তিনটি আসনে তৃণমূল প্রার্থীদের বিরুদ্ধে টক্কর দেওয়ার জন্য উপযুক্ত দলীয় প্রার্থী দেওয়া হয় নি। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের লোকবল কম, আর্থিক ক্ষমতাও সীমিত। তাই প্রচারে হয়তো একটু পিছিয়ে আছি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে গিয়েছেন। ফলে, আমরা তিনটি আসনে জেতার আশা ক রছি।” দেব-সন্ধ্যা-উমার মোকাবিলায় পদ্মফুলের সৌরভ কতটা ছড়ায় সেটাই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp kinshuk gupta loksabha election
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE