Advertisement
E-Paper

বিজেপির পথে এ বার পূর্বের কংগ্রেস নেতা

খেজুরির প্রাক্তন বাম বিধায়ক স্বদেশ পাত্র, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিএম নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের পরে এ বার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা। সাধারণ কর্মী ছাড়াও সিপিএম-কংগ্রেস থেকে একের পর এক বড় নাম বিজেপিতে নাম লেখানোয় দুই মেদিনীপুরেই দ্রুত সংগঠন বাড়াচ্ছে দল। এমনটাই মত বিজেপি নেতৃত্বের।

সুব্রত গুহ

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০০:৩৪
কণিষ্ক পণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র

কণিষ্ক পণ্ডা। —নিজস্ব চিত্র

খেজুরির প্রাক্তন বাম বিধায়ক স্বদেশ পাত্র, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিএম নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের পরে এ বার বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডা। সাধারণ কর্মী ছাড়াও সিপিএম-কংগ্রেস থেকে একের পর এক বড় নাম বিজেপিতে নাম লেখানোয় দুই মেদিনীপুরেই দ্রুত সংগঠন বাড়াচ্ছে দল। এমনটাই মত বিজেপি নেতৃত্বের।

কণিষ্কবাবু সোমবার বলেন, “অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জুলাই মাসে বিজেপিতে যোগ দেব।” ইতিমধ্যেই তিনি কংগ্রেসের প্রাথমিক সদস্য-সহ যাবতীয় পদ ছাড়ার কথা জানিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। কেন বিজেপি? কণিষ্কবাবুর মতে, বর্তমানে এ রাজ্যে তৃণমূলের সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কংগ্রেস নয়, বিজেপিই যোগ্য রাজনৈতিক দল। তাই তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন।

১৯৮৮ সালে অবিভিক্ত মেদিনীপুরে ছাত্র পরিষদের মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি কণিষ্কবাবুর। পরে যুব কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক, জেলা সভাপতি ও প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি হন। পরে কংগ্রেসের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কংগ্রেসের মনিটরিং কমিটির সভাপতিও হন। এ ভাবে তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি তো ছিলই। তবে, তাঁকে ব্যাপক ভাবে পরিচিতি দেয় এবিজি-পর্ব।

হলদিয়া বন্দরের স্বয়ংক্রিয় পণ্য খালাসকারী সংস্থা এবিজির শ্রমিক ছাঁটাইয়ের নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ২০১২-র সেপ্টেম্বরে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির মদতে জঙ্গি আন্দোলনে নেমেছিলেন ছাঁটাই হওয়া শ্রমিকেরা। অভিযোগ, এর জেরে এক সময়ে চলে যেতে হয় ওই পণ্য খালাসকারী সংস্থাকে। এবিজি চলে যাওয়ায় কাজ হারান বাকি শ্রমিকরাও। তখন তাঁদের পাশে দাঁড়ায় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি। আইএনটিইউসির ওই আন্দোলনের নেতা তথা প্রধান মুখ ছিলেন কণিষ্কবাবু।

গত ৭ জুন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে লেখা চিঠিতে পদত্যাগের কারণ ব্যাখ্যার পাশাপাশি নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক। তাঁর অভিযোগ, কংগ্রেসে দীর্ঘ দিন ধরে তাঁকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের শিকার হতে হয়েছে। দলের স্বার্থে যখনই আন্দোলনে নেমেছেন, তখনই নানা ভাবে তাঁকে হেনস্থা করা হয়েছে। হলদিয়া বন্দরের কোটি কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন, এবিজিকে সরিয়ে বন্দরের বিপুল আর্থিক ক্ষতি স্বীকার-সহ নানা বিষয় তৎকালীন কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রী এমনকী রাহুল গাঁধী, মনমোহন সিংহকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। উল্টে, এবিজি শ্রমিকদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের নামে শ্রমিকদের জেল খাটানো হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু অবশ্য এ রকম চিঠি পাননি বলে দাবি করেছেন।

বিধানসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট রাজ্যে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বামেদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। সে সময়ে পশ্চিম ছাড়ো পূর্ব নাও— এই অঙ্কে পূর্ব মেদিনীপুরের কংগ্রেসকে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও কণিষ্কবাবুর দাবি। কেমন? তাঁর ব্যাখ্যা, জোট হওয়ার ফলে পূর্ব মেদিনীপুরে বিধানসভার একটি আসনও কংগ্রেসকে দেওয়া হয়নি। তাতে রাজনৈতিক ভাবে পূর্বে অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল কংগ্রেস। বিষয়টি একাধিকবার দলের প্রদেশ দফতরে কিংবা জেলা বৈঠকে তুললেও কোনও লাভ হয়নি বলে বিদায়ী কংগ্রেস নেতার দাবি।

কণিষ্কবাবু যে তাঁদের দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, তা মেনে নিয়েছেন বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তপন কর। তিনি বলেন, “কণিষ্ক পণ্ডার সঙ্গে চূড়ান্ত কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। তাঁকে দলে স্বাগত জানানো হবে।” কণিষ্কবাবু কংগ্রেস ছাড়তে চলায় দলে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতীন্দ্রমোহন সাহু।

congress leader bjp kanishka panda subrata guha kanthi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy