Advertisement
E-Paper

ভোটের ঢের দেরি, কর্মীদের চাঙ্গা করতেই ব্যস্ত সব দল

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৩:১৯
রাঙামাটিতে তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।

রাঙামাটিতে তৃণমূলের মিছিল। নিজস্ব চিত্র।

ভোটের এখনও ঢের বাকি। ফলে, প্রচার নিয়ে কর্মীদের মধ্যে আলস্য রয়েছে। কিন্তু, তাঁরাই যে প্রচারের মূলধন। পরিস্থিতি দেখে কর্মীদের চাঙ্গা করে মাঠে নামাতে তৎপর হল সব দল। বড় সভার আগে ছোট ছোট কর্মী-সম্মেলনেই আপাতত ব্যস্ত ডান-বাম, সব শিবির।

ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর প্রথম রবিবারে অন্তত সেই ছবিই দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুরে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার যেমন কর্মিসভা করলেন, তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়ও ব্যস্ত থাকলে কর্মী-সম্মেলন নিয়ে। ছুটির দিনটা পুরোদমে কাজে লাগানোর চেষ্টা করলেন প্রার্থীরাও। মেদিনীপুরের বামপ্রার্থী প্রবোধ পাণ্ডা এ দিন দফায় দফায় কর্মিসভা করেছেন। শুরুতে খড়্গপুর গ্রামীণে। তারপর দাঁতনে। শেষে এগরায়। প্রবোধবাবু বলেন, “এখন আমরা কর্মীদের নিয়েই সভা করছি। আলোচনা করছি। কিছু এলাকায় মিছিলও হচ্ছে।” রবিবার কর্মিসভা করেন ঘাটালের বামপ্রার্থী সন্তোষ রাণাও। শুরুতে বালিচকে। তারপর দাসপুরে। সন্তোষবাবুর কথায়, “প্রচার শুরু হয়েছে। কর্মিসভাও চলছে।” ঝাড়গ্রামের তৃণমূল প্রার্থী উমা সরেন কর্মীদের নিয়ে বৈঠক সেরেছেন।

বামফ্রন্টের নির্বাচনী কর্মিসভায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় এ দিন মেদিনীপুর শহর, মেদিনীপুর সদর, কেশপুরে একাধিক কর্মী-সম্মেলনে যোগ দেন। ছাত্র-যুবদের নিয়ে মেদিনীপুরে এক নির্বাচনী কর্মিসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। দীনেনবাবু বলেন, “আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, বিভিন্ন এলাকায় দলের বুথ-অঞ্চল-ব্লক সম্মেলন করতে হবে। সম্মেলনের আগে গ্রামের প্রতিটি পাড়ায় ব্যাপক ভাবে প্রচার-দেওয়াল লিখন করতে হবে।” সম্মেলনগুলোতে তাঁর বার্তা, “জনসংযোগ আরও বাড়াতে হবে। আরও বিনয়ী হতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শ, শান্তি, উন্নয়নের বার্তাকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।” অন্য দিকে, ছাত্র-যুবদের সভায় দীপকবাবুর বার্তা, “যে ভয়ঙ্কর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, নীতিগত প্রশ্নে দ্বিচারিতা দেখা যাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আরও জোরালো প্রতিবাদ হওয়া দরকার। তোমাদের এগিয়ে আসতে হবে।’’ দীপকবাবু আরও বলেন, “লোকসভা নির্বাচন ব্যক্তির লড়াই নয়। নীতির লড়াই। ২০০৯ সালে জেলার তিনটি লোকসভা আসনেই আমরা জয়যুক্ত হয়েছিলাম। তখনও মাওবাদী আক্রমণে জেলা রক্তাক্ত হয়ে উঠেছিল। তাও আমরা পেরেছি। আমাদের বিশ্বাস, এ বারও পারব।”

পশ্চিম মেদিনীপুরে এ বার দু’দফায় ভোট হবে। ৭ মে ঝাড়গ্রাম এবং মেদিনীপুরে। ১২ মে ঘাটালে। গণনা ১৬ মে। ইতিমধ্যে বামফ্রন্ট, তৃণমূল, বিজেপি’র মতো দলগুলো প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে। দু’-তিনদিনের মধ্যে কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হওয়ার কথা। বামেদের তালিকায় কোনও চমক নেই। মেদিনীপুরে প্রবোধ পাণ্ডা, ঝাড়গ্রামে পুলিনবিহারী বাস্কে প্রার্থী হয়েছেন। দু’জনই সাংসদ। গুরুদাস দাশগুপ্ত অব্যাহতি নেওয়ায় ঘাটালে প্রার্থী হয়েছেন সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় তারকার ছড়াছড়ি। ঘাটালে প্রার্থী হয়েছেন অভিনেতা দেব (দীপক অধিকারী)। মেদিনীপুরে অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। আর ঝাড়গ্রামে চিকিৎসক উমা সরেন। মেদিনীপুরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন প্রভাকর তেওয়ারি। তিনি রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি। থাকেন কলকাতায়।

২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে জেলার তিনটি আসনে জয়লাভ করলেও তার পরবর্তী নির্বাচনগুলিতে পর্যুদস্ত হয়েছে বামেরা। ২০১১ সালের বিধানসভা ভোট থেকে গত বছরের পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূলেরই জয়জয়কার। তবে, লোকসভা নির্বাচনে যেহেতু চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে চলেছে, ফলে লড়াই কঠিন হওয়ারই আশা। বিরোধী ভোট ভাগাভাগির সুবিধা বামেরা পাবে বলেও মনে করছেন অনেকে। তবে সে সবের আগে এখন সকলেরই মন প্রচারে। আজ, সোমবার মেদিনীপুরে বিজেপির বৈঠক রয়েছে। দলের জেলা এবং ব্লক নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, “এ বারের পরিস্থিতি অন্য রকম। দেশ জুড়ে বিজেপির সমর্থনে হাওয়া বইছে। এ বার বিজেপিকে সামনে রেখে ভোট হবে। নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে ভোট হবে। আমরা সর্বশক্তি দিয়ে প্রচারে নামছি।”

medinipur ellection
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy