Advertisement
০৫ মে ২০২৪

ভোটের ময়দানে শরিকি ঐক্যই ভরসা বামেদের

রেলশহরের পুরভোটে বৃহত্তর ঐক্যই ভরসা বামেদের। যে সব শরিক দল কখনও খড়্গপুর পুরভোটে প্রার্থী দেয়নি, এ বার তাদেরও একাধিক আসন ছাড়া হতে পারে বলে খবর। শরিক দলগুলো যদি কোনও দাবি জানায় তা নিয়েও আলোচনার দরজা খোলা রাখছেন বাম-নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, রেলশহরের পুরভোট নিয়ে আলোচনা করতে আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবেন বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। খড়্গপুরেই এই বৈঠক হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৫ ০০:৪৬
Share: Save:

রেলশহরের পুরভোটে বৃহত্তর ঐক্যই ভরসা বামেদের।

যে সব শরিক দল কখনও খড়্গপুর পুরভোটে প্রার্থী দেয়নি, এ বার তাদেরও একাধিক আসন ছাড়া হতে পারে বলে খবর। শরিক দলগুলো যদি কোনও দাবি জানায় তা নিয়েও আলোচনার দরজা খোলা রাখছেন বাম-নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, রেলশহরের পুরভোট নিয়ে আলোচনা করতে আগামী বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবেন বামফ্রন্টের নেতৃত্ব। খড়্গপুরেই এই বৈঠক হবে। কোন ওয়ার্ডে কে প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হবে। পরে জেলাস্তরে আলোচনা হবে। সপ্তাহ দেড়েকের মধ্যে চূড়ান্ত হবে প্রার্থী তালিকা।

রেলশহরে ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। দলের ওই সূত্রে খবর, ১৮-২০টি ওয়ার্ডকে পাখির চোখ করে এগোতে চাইছে বাম-শিবির। নেতৃত্বের একাংশ এ-ও মনে করছেন, গতবারের থেকে এ বার বামেদের আসনপ্রাপ্তি বেশিই হবে। একের পর এক ভোটে যেখানে বামেদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সেখানে কেন এমন দাবি? ওই অংশের বক্তব্য, রেলশহরে তৃণমূল, বিজেপি দু’দলই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত। ফলে, বেশ কিছু ওয়ার্ডে বিক্ষুব্ধ বা গোঁজ প্রার্থী থাকতে পারে। কংগ্রেসের অবস্থাও ভাল নয়। ভোট ভাগাভাগি হলে তার সুফল বামেরা পেতে পারে। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “পুরভোটে ভাল ফলের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। প্রার্থী নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। সামনেই ফ্রন্টের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে।” সিপিআইয়ের জেলা সহ-সম্পাদক বিপ্লব ভট্টের কথায়, “আমরা ব্যাপকতম বাম ঐক্যের পক্ষে। এ জন্য আলোচনাও চলছে।”

সামনেই জেলার ৬টি পুরসভায় ভোট রয়েছে। ঘাটাল মহকুমার ৫টি এবং খড়্গপুর পুরসভা। জেলার রাজনৈতিক মহলে অবশ্য সবথেকে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে রেলশহরের পুরভোট। খড়্গপুরে কংগ্রেসের রাজনৈতিক জমি রয়েছে। তৃণমূলও এই জমি তৈরি করে নিয়েছে। সার্বিক ভাবে বামেদের শক্তিও কম নয়। আর বিজেপি মাথাচাড়া দিচ্ছে। গত লোকসভাখড়্গপুর সদর বিধানসভা এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া-শিবির।

২০১০ সালের পুরভোটে জিতে খড়্গপুরে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল। তৃণমূল জিতেছিল ১৫টি ওয়ার্ডে। কংগ্রেস ১২টি। সিপিএম ৩টি। সিপিআই ৩টি। বিজেপি ১টি এবং নির্দল ১টি। পরে সিপিএমের দু’জন কাউন্সিলর কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বেড়ে হয় ১৪। এরপরই তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে কংগ্রেস। বিজেপি এবং নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনে অনাস্থায় তৃণমূলকে হারিয়ে পুরবোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। তার আগে টানা ১৫ বছর পুরবোর্ড ছিল কংগ্রেসেরই দখলে।

গত পুরভোটে সিপিএম প্রার্থী দিয়েছিল ১৭টি ওয়ার্ডে। এর মধ্যে ১৩টি ওয়ার্ডে দলের প্রতীকে প্রার্থী ছিল। ৪টি ওয়ার্ডে ছিল সিপিএম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। সিপিআই প্রার্থী দিয়েছিল ১৬টি ওয়ার্ডে। এর মধ্যে ১৪টি ওয়ার্ডে দলের প্রতীকে প্রার্থী ছিল। ২টি ওয়ার্ডে দল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী ছিল। ২টি ওয়ার্ড ছাড়া হয়েছিল খড়্গপুর বিকাশ মঞ্চকে।

এ বার কী হবে? দলের এক সূত্রে খবর, ফ্রন্টের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। অন্য বাম- শরিক দলগুলোকে একাধিক আসন ছাড়া হতে পারে। শরিক দলগুলো যদি কোনও দাবি জানায় তা নিয়ে আলোচনাও হবে। পত্রপাঠ সেই দাবি খারিজ করা হবে না।

ইতিমধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি প্রার্থী দেওয়ার ইচ্ছেপ্রকাশও করেছে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “প্রার্থী নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা চলছে। খুব শীঘ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।” রেলশহরে ভাল ফলের আশা করছেন কী করে? সন্তোষবাবুর জবাব, “পুরভোটে ভাল ফলই হবে। আমাদের কিছু ত্রুটি- বিচ্যুতি ছিল। তাই জনগণ শাস্তি দিয়েছেন। আমরা ত্রুটি- বিচ্যুতি সংশোধন করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE