পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের ফেসবুক পেজ। —নিজস্ব চিত্র।
যুগের হাওয়া। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে মতামত আদান-প্রদানের দুনিয়ায় তাই ঢুকে পড়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং ফেসবুকে নানা মন্তব্য পোস্ট করেন। প্রযুক্তি-প্রচারে পিছিয়ে থাকছে না সিপিএম-ও। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএমের উদ্যোগে ইতিমধ্যে ফেসবুকে একটি কমিউনিটি তৈরি করা হয়েছে। নাম ‘সেভ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ (পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচান)।
হালফিলের দুনিয়ায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট যে প্রচারের অন্যতম মাধ্যম তা মেনে নিচ্ছেন সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক দীপক সরকার। তিনি বলেন, “আজকের দিনে এই ধরনের সাইট প্রচারের একটা মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সোশ্যাল সাইটের জন্য একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারাই এই সংক্রান্ত সব কিছু দেখভাল করবে।” সিপিএম সূত্রের খবর, নেটে নজরদারি চালানোর এই দলে রয়েছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মেঘনাদ ভুঁইয়া, ডিওয়াইএফের জেলা সম্পাদক দিলীপ সাউ, এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডা, প্রাক্তন যুব নেতা সুদীপ্ত সরকার প্রমুখ।
ওই ফসবুক অ্যাকাউন্টে নেতা-কর্মীরা যাতে নিয়মিত মতামত জানান, সে জন্য এক নির্দেশিকাও জারি করেছে জেলা সিপিএম। ওই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে ৩৩টি জোনাল কমিটিকে। বলা হয়েছে, ‘সেভ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ কমিউনিটির মাধ্যমে দলের প্রচার করতে। খড়্গপুরে সিপিএমের এক জোনাল নেতা বলেন, “দেরিতে হলেও জেলা নেতৃত্ব সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সব দলই তরুণ প্রজন্মের সমর্থন পেতে চায়। আর তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশই এখন ফেসবুক-টুইটারে মগ্ন।”
এক সময় সিপিএম রাজ্যে কম্পিউটার চালুর বিরোধিতা করেছিল। এখন যুগধর্ম মানছে তারাও। সিপিএমের জেলা কমিটির এক সদস্য বলেন, “এটা তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। আজকের দিনে সোশ্যাল সাইটকে উপেক্ষা করা বোকামি।” সিপিএমের ছাত্র-যুব নেতাদের অনেকরই ফেসবুকে প্রোফাইল রয়েছে। সেখানে নানা রাজনৈতিক বিষয়ে নিত্য মতের আদান-প্রদান চলে। চলে রাজনীতি নিয়ে গরমাগরম বিতর্ক। এ বার তো কলেজে কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের প্রচারও হয়েছে ফেসবুকে। ‘সেভ ওয়েস্ট বেঙ্গল’ কমিউনিটির সদস্যরা ইতিমধ্যে ছবি আপলোড করা, মতামত পোস্ট করা শুরু করে দিয়েছেন। বেশিরভাগ ছবি ও মন্তব্যেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করা হয়েছে। কখনও নিশানায় মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের দাবি, কখনও বা কো-অর্ডিনেশন কমিটি ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি নিয়ে কটাক্ষ। নানা ধরনের কার্টুনও পোস্ট করা হচ্ছে। একটি ছবিতে আবার নিহত ছাত্র নেতা সুদীপ্ত গুপ্তের মুখ।
পাশে লাল কালিতে লেখা—
‘‘একদিন সেই দিন আসবেই
ঝলসানো রুটি ফের পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে হাসবেই
আসবেই সেই দিন আসবেই।’
সিপিএম সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে দলের বক্তব্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে প্রচারের প্রস্তাব দলের ছাত্র-যুবদের কাছ থেকেই প্রথমে এসেছিল। ডিওয়াইএফের জেলা কমিটির এক সদস্যের কথায়, “সোশ্যাল সাইটের মাধ্যমে প্রচার করার ব্যবস্থা এখন করতেই হবে। আমার প্রচুর বন্ধু-সহকর্মীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সাইটের মাধ্যমে খুব সহজে পরিচিতদের কাছে বার্তা পৌঁছনো যায়।” এসএফআইয়ের জেলা কমিটির এক সদস্যের কথায়, “সোশ্যাল সাইটের জনপ্রিয়তা দিনের পর দিন বাড়ছে। আমার পরিচিতদেরও অনেকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। প্রতিদিন কিছু না কিছু ছবি পোস্ট করি। শেয়ার করি।” পরিস্থিতি দেখে ওই প্রস্তাব আর খারিজ করেননি জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী সিপিএমের ই-প্রচার কেমন জমে, সেটাই এখন দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy